প্রকাশিত: ০৭:২৭, ১৯ জুন ২০১৯
আপডেট: ০৭:২৭, ১৯ জুন ২০১৯
আপডেট: ০৭:২৭, ১৯ জুন ২০১৯
মুরসির মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক চাপে মিসর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে মিসর। মুরসির মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্তের জন্য জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
গতকাল সোমবার ৬৭ বছর বয়সী মুরসি আদালতে মারা যান।তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৯ জুন) বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, মুরসির মৃত্যুর ঘটনার ‘নিরপেক্ষ, বিস্তারিত ও স্বচ্ছ তদন্ত’ চেয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক সারাহ লিহ হুইটসন এক টুইটে বলেছেন, ‘মুরসির মৃত্যু ভয়ানক, তবে তা অনুমেয় ছিল।’ পরে এক বিবৃতিতে এ মৃত্যুর জন্য সরকারের উপেক্ষা, দীর্ঘ সময় ধরে একাকী বন্দী রাখা, অপর্যাপ্ত চিকিৎসা এবং পরিবারের লোকজন ও আইনজীবীদের দেখা করতে না দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করেন সারাহ লিহ হুইটসন। সংগঠনটি কারাগারজুড়ে বন্দীদের ব্যাপক হারে উপেক্ষা করাসহ মিসরে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্ত চেয়েছে।
প্রায় ছয় বছরের কারাজীবনে মুরসিকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে মাত্র তিনবার। আইনজীবী ও চিকিৎসককেও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হতো না, এমনটা বলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। আটকের পর থেকেই মুরসির শারীরিক অবস্থা এবং বেশির ভাগ সময় একাকী বন্দী রাখার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল তাঁর পরিবার ও সমর্থকেরা।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় আজ ভোরে তাঁকে কায়রোর কাছে সমাহিত করা হয়।
মিসরের কর্তৃপক্ষ পরিবারের ইচ্ছা অনুসারে মুরসিকে নিজ শহরে প্রকাশ্যে জানাজা করে সমাহিত করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান মুরসির ছেলে আবদুল্লাহ মোহামেদ মুরসি।
নিষিদ্ধ ইসলামি গ্রুপ মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা ছিলেন মিসরের এই শীর্ষ ব্যক্তিত্ব। ২০১২ সালে দেশটিতে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হন। তবে শাসনের এক বছরের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় সামরিক ক্যুর মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে বন্দী করা হয়। ওই সময়ের সেনাপ্রধান আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি ২০১৪ সালে থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন।
মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তাঁর সমর্থকসহ ভিন্নমত পোষণকারীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এ সংখ্যা লাখ লাখ বলে জানা গেছে।
মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসির মৃত্যুতে মিসরের শাসকদের দায়ী করেছেন।
গতকাল কায়রোর আদালতে মুরসিকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে হাজির করা হয়। ফিলিস্তিনের হামাসের সঙ্গে সন্দেহভাজন যোগাযোগ করার অভিযোগ করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, শব্দনিরোধক কাচের একটি খাঁচার মধ্যে অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁকে আদালত কক্ষে হাজির করা হয়েছিল। জুরিকে উদ্দেশ করে তিনি পাঁচ মিনিট কথা বলেন। এর কয়েক মিনিট পর বিচারপ্রক্রিয়ার বিরতির মধ্যে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
মিসরের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এক বিবৃতিতে জানান, মুরসিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুরসির মৃত্যুর ঘটনায় ফরেনসিক প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে তাঁর মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
মুরসিকে অন্য তিনটি মামলায় ৪৫ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল, তবে পরে তা বাতিল করা হয়। মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক অঙ্গ দ্য ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি মুরসির মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলে দাবি করেছে। মুরসির ঘনিষ্ঠজন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মুরসির মৃত্যুতে মিসরের ‘অত্যাচারী শাসকদের’ দায়ী করেছেন এবং মুরসিকে ‘শহীদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মুরসির আরকে মিত্র কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ব্রিটিশ এমপি ক্রিসপিন ব্লান্ট এ ঘটনায় ‘সম্মানজনক স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের’ দাবি করেছেন। তিনি ২০১৮ সালে বন্দিদশায় মুরসির অবস্থা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন।
এইচএ/ ইএন
আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের
সর্বশেষ
জনপ্রিয়