Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ১৪ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৯ ১৪৩২

হোসাইন আহমদ, হাকালুকি হাওর থেকে ফিরে

প্রকাশিত: ১৩:০২, ১১ মার্চ ২০২৩
আপডেট: ১৩:০৪, ১১ মার্চ ২০২৩

হাকালুকি হাওরে পানির জন্য হাহাকার, বোরো চাষ ব্যাহত

শুকিয়ে চৌচির হাকালুকি হাওরের আন-ফানাই নদী। ছবি- আই নিউজ

শুকিয়ে চৌচির হাকালুকি হাওরের আন-ফানাই নদী। ছবি- আই নিউজ

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে পানির হাহাকার চলছে। কৃষকরা তিন থেকে চার গুণ বেশি টাকা খরচ করেও বোরো জমিতে পানি দিতে পারছেন না। যার ফলে বৃহত্তম এই হাওরে ফসল উৎপাদন কমেছে। বেড়েছে কৃষকদের ব্যয়। চাহিদা মতো পানি না পাওয়ায় চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। হাওর তীরবর্তী বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাওর ও কৃষকদের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকরি কোনো উদ্যোগ নেই। যার ফলে ক্রমান্বয়ে হাওরে বোরো উৎপাদন কমে আসছে। 

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা এবং সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে হাকালুকি হাওর এর অবস্থান। হাওরের আয়তন ১৮১.১৫ হেক্টর। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এ হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল ও ১০টি নদী রয়েছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ৪’শ ৫০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৬০ হাজার ৫৭ হেক্টর। এর মধ্যে হাওরে চাষাবাদ হয়েছে ২৭ হাজার হেক্টর। কয়েক লক্ষ কৃষক ও জেলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে হাকালুকি থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। 

হাওর অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক ও বর্গা  চাষীদের জীবন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র সম্ভল হাওরে উৎপাদিত এক ফসলি বোরো ধান। ওই ফসলের আয় দিয়েই তাদের পুরো বছরের সাংসারিক খরচ এবং ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া সহ সকল ব্যয় চলে। কৃষকরা ধার দেনাও মিটান ধান বিক্রি’র টাকা থেকে।

সরেজমিন হাকালুকি হাওরে গেলে দেখা যায়, বোরো ফসলের শীষ বের হওয়ার সময় এসেছে। কিন্তু নদী, নালা কিংবা বিল কোথাও পানি নেই। পানির জন্য হাহাকার করছেন কৃষকরা। বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন তারা। বোরো জমিতে সেচ দেয়ার মতো সুবিধা না থাকায় কৃষকরা ফিতা পাইপ দিয়ে ৩/৪ হাজার ফুট দূর থেকে জমিতে পানি দিচ্ছেন। প্রতি ঘন্টায় খরচ হচ্ছে ৪’শ/৫’শ টাকা।

আবার অনেক কৃষক টাকা খরচ করেও পানি পাচ্ছেন না। পানির অভাবে বোরো জমি ফেঁটে চৌচির। পানির অভাবে বোরো ফসল মরে যাচ্ছে। ইজারাদাররা বিল শুকিয়ে মাছ নিধন করছে। যার কারণে বিলেও পানি পাওয়া যায়নি। পরিকল্পিত সেচ ব্যবস্থা না থাকায় এক দিকে কৃষকদের ব্যয় বাড়ছে এবং অন্য দিকে ফসল উৎপাদন কমে আসছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ফানাই নদীতে পশ্চিম দিকের ভাটেরা ইউনিয়ন থেকে আন ফানাই এবং পূর্বদিক হতে বান্না নদী এসে মিলিত হয়েছে। ওই ৩ নদীর মিলনস্থলের একটু নিচে চালিয়া এলাকায় সুইচ গেইট স্থাপন করলে ৩টি নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকবে এবং কৃষরাও চাহিদা মতো বোরো জমিতে সেচ দিতে পারবে। 

হাকালুকি হাওরে কথা হয় কৃষক ফয়েজ আলী, জিতু মিয়া, ফাকুল মিয়া, মধু মিয়া ও হাজী লিয়াকত আলী’র সাথে। তারা বলেন, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে টাকা খরচ করেও জমিতে পানি দিতে পারছি না। কোথাও পানি নেই। স্বাভাকি খরচের চেয়ে ৩/৪ গুণ বেশি টাকা খরচ করে পানি দিতে হচ্ছে। তাও আবার সব জায়গায় পানি পাওয়া যায়নি। তারা বলেন, পানি না থাকায় উৎপাদন ভালো হচ্ছে না। আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে। তাদের দাবি বৃহত্তর স্বার্থে হাওরে একটি সুইচ গেইট স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। 

আই নিউজ/এইচএ 

 


আই নিউজ ভিডিও গ্যালারী 

মানুষ হত্যা করেছে মা হাতিকে, দুধের জন্য কাঁদছে বাচ্চা হাতিটি

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ