শাহ শরীফ উদ্দিন
আপডেট: ১৮:০৮, ২ মার্চ ২০২১
নৌকার অপ্রতিরোধ্য জয় মৌলভীবাজারে, অন্য জেলায় ভিন্ন সুর
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং পরিকল্পনামন্ত্রীর সাথে মৌলভীবাজার জেলার চার পৌর মেয়র
দল ক্ষমতায়, সকল কিছুই যেন নিজেদের অনুকূলে। তবুও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গাতেই হয়েছে নৌকার ভরাডুবি। কোথাও নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী পেয়েছেন বিজয় আবার কোথাও ছিনিয়ে নিয়েছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে অপরাজিত বিজয় দেখেছে মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগ। অন্য জেলাগুলো যেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কিংবা বিদ্রোহীতে ব্যস্ত মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগ তখন নৌকার জয়ে মরিয়া।
সিলেট বিভাগের মধ্যে 'নৌকার ঘাটি' হিসেবেও পরিচিত মৌলভীবাজার। এ জেলায় ৪ টি পৌরসভা নির্বাচনেই জয় পেয়েছে নৌকা। অথচ নৌকার ভাগ্যে জামানত হারানোর ঘটনাও ঘটেছে বিভাগের অন্য জেলায়।
মৌলভীবাজারে আওয়ামী লীগের অপ্রতিরোধ্য জয়
২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে বড়লেখা পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন তিন হাজার ৮৬ ভোট। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও আসতে না পারা বিএনপির প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৯৪ ভোট।
১৬ জানুয়ারি একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া পৌরসভার নির্বাচন। এর মধ্যে কমলগঞ্জে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. জুয়েল আহমদ জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন পাঁচ হাজার ২৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মো. হেলাল মিয়া (জগ) নিয়ে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই তৈরি করতে পারেননি। জগ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন দুই হাজার ৮০৬ ভোট। এছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) পেয়েছেন দুই হাজার ৭৮৭ ভোট ও বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল হোসেন (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৩০১ ভোট।
কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ নির্বাচিত হলেও কমলগঞ্জ পৌরসভায় জয় পেতে খুব ঘাটপোকর পার হতে হয়নি মো. জুয়েল আহমদকে। কুলাউড়া পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ পেয়েছেন চার হাজার ৮৩৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাজান মিয়া জগ প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ৬৮৫ ভোট। কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ৭৭৬ ভোট, আর নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শফি আলম ইউনুস পেয়েছেন দুই হাজার ৯৯৪ ভোট।
গত ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে মৌলভীবাজার পৌরসভায় দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে অপ্রতিরোধ্য জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ফজলুর রহমান। তিনি পেয়েছেন ১৩ হাজার ৭০০ ভোট। আর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. অলিউর রহমান পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৩২ ভোট। তবে তিনি ভোটের আগের দিন অর্থাৎ ২৯ জানুয়ারি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
সিলেট বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে নৌকার জামানত হারানোর ঘটনাও আছে
সিলেট বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে নৌকার জামানত হারানোর মতো ঘটনাও আছে। সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট পৌরসভার মধ্যে কেবল কানাইঘাটে জয়ের দেখা পায় নৌকা। আর গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় জামানত হারান নৌকা মনোনীত প্রার্থী রোহেল আহমদ।
সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ জেলায় জামানত হারানোর ঘটনা না ঘটলেও আছে বড় পরাজয়। এ জেলায় ৪ টি পৌরসভার মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও বড় পরাজয় হয়েছে জগন্নাথপুরে। সুনামগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র নাদের বখত ও ছাতক পৌরসভার বর্তমান মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, দিরাইয়ে বিশ্বজিৎ রায় বিজয়ী হলেও ভরাডুবি হয়েছে জগন্নাথপুর পৌরসভায় গিয়ে। এ পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র আক্তারুজ্জামান বিজয়ী হয়েছেন।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে নৌকার প্রার্থী শ্রীধাম দাশ গুপ্ত হারিয়েছেন জামানত। আর শায়েস্তাগঞ্জে জয় পেয়েছে বিএনপি। চুনারুঘাট ও সর্বশেষ ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে জয়ের দেখা পায় নৌকা। তবে নির্বাচন হয়নি আজরিমিরিগঞ্জ পৌরসভায়।
যা বলছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা
সব মিলে বিভাগজুড়ে নৌকার সফলতা আর ব্যর্থতা, কিংবা লজ্জার হারের গল্প থাকলেও মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে নৌকার অপ্রতিরোধ্য জয়ে সফল আওয়ামী লীগ। সেক্ষেত্রে নিজেদের একতা, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন আর আগামীর উন্নত মৌলভীবাজার নির্মাণের প্রত্যাশার কৌশলকেই কাজে লাগানো হয়েছে বলে আইনিউজকে জানালেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ এমপি।
তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ বড় দল। সেখানে আমাদের জেলাতেও কিছুটা মতানৈক্য আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন আর আগামীর উন্নত পৌরসভা গড়ার প্রত্যাশাকেই আমরা জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। জনগণও তা গ্রহণ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করেছেন।'
তবে বিএনপির পরাজয়কে নিজেদের দুর্বলতা কিংবা অন্য কিছু না মনে করে 'সরকারের লোক দেখানো নির্বাচনে নৌকার জয়' হিসেবে মন্তব্য করলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, এসব নির্বাচন না। অবৈধ নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে সরকার নৌকার জয় নিশ্চিত করেছে। কাজেই আমরা নির্বাচন বয়কট করেছি। এখানে সাংগঠনিক কোন দুর্বলতা বা অন্য কোন কিছুই নেই।'
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’
- করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছেন মৌলভীবাজারের ৩ চিকিৎসক