সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট: ১৭:০১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪
জৈন্তায় চলতি মৌসুমে ১২ কোটি টাকার শিম বিক্রি

চলতি মৌসুমে মৌসুমে শিমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১শত ৬০ মেট্রিক টন।
সিলেটের জৈন্তাপুরের শিমের চাহিদা আছে সিলেট ছাড়িয়ে সারাদেশে। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এ উপজেলার শিম নিজস্ব স্বাদের জন্যও বেশ জনপ্রিয়। জৈন্তাপুরে ঘুরলে তাই থরেবিথরে চোখে পড়বে শিমের মাচা। শিম চাষ করে এখানকার স্থানীয় কৃষকরা বছরে আয় করছেন কয়েক কোটি টাকা। চলতি বছরও জৈন্তায় ১২ কোটি টাকার শিম বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে।
শিম আমাদের দেশে শীতকালীন জনপ্রিয় একটি সবজীর অন্যতম। শিম একটি প্রোটিন ও শ্বেতসার জাতীয় খাবার। এই শিমে সিলিকন জাতীয় উপাদান থাকায় শরীরের হাড়কে সুগঠিত করে। শীত মৌসুমে টমেটো, নতুন আলু,ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনের পাশাপাশি শিম বাঙালির নিকট অত্যাধিক জনপ্রিয়।
লাভজনক এই সবজীটি চাষ করে চলতি মৌসুমে জৈন্তাপুর উপজেলার কৃষকদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। সাধারণত শিম জাতীয় এ ফসলটি জৈন্তাপুর উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে বরবটির সাথি ফসল হিসেবে একই জমিতে একই খরচে চাষ করা হয়ে থেকে। তাই দুই মাস পূর্বে বরবটি তুলে বিক্রি করা হয়ে গেলে বানিজ্যিক ভাবে শিম বিক্রি করে বাড়তি লাভের মুখ দেখছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষককেরা।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পরিসরে ৪ শত ৩০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৫ শত ২০ জন কৃষক শিম চাষ করেছেন। তার মধ্যে ৩০ জনকে প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। এ মৌসুমে শিমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১শত ৬০ মেট্রিক টন। যার পাইকারি বর্তমান বাজারমূল্য ১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মত।
এ মৌসুমে উপজেলায় আবাদকৃত শিমগুলোর মধ্যে লোকাল প্রজাতি, কার্তিকা, লালউরি ও গোয়ালগাদ্দা জাতের শিম অন্যতম। সাধারণত তুলনামুলক উঁচু ও সমতল বন্যমুক্ত এলাকা শিম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী।
এ মৌসুমে উপজেলার সবচেয়ে বেশী যে অঞ্চলে শিম চাষ করা হয়েছে তার মধ্য অন্যতম এলাকা হলো নিজপাট ও চারিকাঠা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামপাখিবিল, বাইরাখেল, রুপচেং, হর্ণি, কালিন্জিবাড়ী, কামরাঙ্গি, বাউরভাগ উত্তর ও পূর্ব, নয়াখেল পূর্ব বালিদারা এসব এলাকায়।
উপজেলার শিম চাষী রুপচেং এলাকার কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৪ বিঘা জমিতে শিম ও বরবটির একত্রে চাষ করেছেন। কোন প্রকার শ্রমিক খরচ বাদে নিজে শ্রমদিয়ে তার আনুষাঙ্গিক উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকার মত। গত নভেম্বরে তিনি সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বরবটি বিক্রি করেন এবং বর্তমানে শিম বাজারজাত করছেন। তিনি আশাবাদী জানুয়ারির শেষে তিন লক্ষ টাকার শিম বিক্রি করতে সক্ষম হবেন।
ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত নয়াখেল পূর্ব বালিদাড়া গ্রামের কৃষক ফয়েজ আহমেদ জানান চলতি রবি মৌসুমে আলু, করোলা, লাউ, শালশাকের পাশাপাশি ৪০ শতক জমিতে যৌথভাবে বরবটি ও শিমের চাষ করেন। এতে তার শ্রমিক মজুরী ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ৪০ টাকা ব্যায় হয়েছে। এই ৪০ শতক জমি হতে চলতি মৌসুমে তিনি এক লক্ষ টাকার বরবটি বিক্রি করেছেন এবং জানুয়ারি শেষে আরো এক লক্ষ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
এ সময় তিনি শীতকালীন সবজী চাষে চারিকাঠা নয়াখেল এলাকায় একটি সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বলেন, শুকনো মৌসুমে পানির সমস্যার কারণে উৎপাদন ব্যায় কিছুটা বৃদ্ধি পায় তাদের। তাই সরকারি অর্থায়নে নয়াখেল পূর্ব এলাকার পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া ইটাখালে স্লুইসগেট বা ড্যাম স্হাপন করে পানি আটকানো গেলে প্রায় স্হানীয় ৩০০ কৃষক উপকারের পাশাপাশি লাভবান হতো।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন চলতি মৌসুমে জৈন্তাপুর উপজেলায় লাভ জনক রবিফসল বরবটি, নাগামরিচ, টমেটো,সরিষার সাথে শিম চাষ করে কৃষকের লাভের মুখ দেখছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষক পর্যায়ে বীজ, চারা, সার, কীটনাশক প্রনোদনার আওতায় বিতরণ করা হয়েছে।
তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশেষ তদারকি ও পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি কৃষকদের নিয়ে নিয়মিত মাঠ দিবস পালন করা হয় বলেও জানান তিনি।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’