নিজস্ব প্রতিবেদক
জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সিলেটে সাইকেল র্যালী
ছবি- আই নিউজ
জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ এবং জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে সিলেটে সাইকেল র্যালী করেছে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সকাল সাড়ে ৮টায় এই কর্মসুচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড জহিরুল হক।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ব্রতি, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার, প্রাধিকার ও গ্রীণ এক্সপ্লোর সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সাইকেল র্যালীতে প্রায় শতাধিক তরুণ জলবায়ূ কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনকে অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর মতো বিবেচনায় নিয়ে এর ক্ষতিকর প্রভাব হতে নিজেদেরকে সুরক্ষিত করা ও এর মোকাবেলায় গঠিত বিভিন্ন বৈশ্বিক ফোরাম ও সম্মেলনে জলবায়ু কূটনীতিতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করাই যেন বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিসম্পন্ন দেশগুলোর প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছের
সাইকেল র্যালীতে প্রায় শতাধিক তরুণ জলবায়ূ কর্মী অংশগ্রহণ করেন। ছবি- আই নিউজ
সাইকেল র্যালীর উদ্বোধনের সময় আয়োজন করা হয় সমাবেশেরও। সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা সিলেট-এর সাধারন সম্পাদক আব্দুল করিম কিম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. জহিরুল হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সভাপতি ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিষ্টার জামিল আহমেদ চৌধুরী, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ল এন্ড জাস্টিস বিভাগের প্রধান এসোসিয়েট প্রফেসর গাজী সাইফুল হাসান, প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি, গ্রীণ এক্সপ্লোর সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ, সিলেট সাইক্লিং ক্লাবের ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর রেজওয়ান আহমেদ সামি।
জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সিলেটে সাইকেল র্যালী আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে পাঁচ সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রাধিকারের সভাপতি ও তরুণ জলবায়ু কর্মী মো. মাহাদী হাসান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- আগামী সেপ্টেম্বরের ১৮ থেকে ২৬ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ও ২০ তারিখ ইউএনএসডিজি ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিট অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্বের ফলে যে কোন আন্তরাষ্ট্রীয় বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন অন্যতম বৈশ্বিক প্লাটফর্ম। এছাড়াও, গত বছর জাতিসংঘ মহাসচিবের ঘোষিত ইউএনএসডিজি ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিট’২৩ জলবায়ু নীতি নির্ধারণে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে আসতে পারে। তবে, এ সকল সামিটে ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর অবস্থান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তেনে ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের দাবি সত্ত্বেও ২০২৩ সালের কপ-২৭ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পর্যায়ক্রমে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর জ্বালানি ব্যাবস্থা হতে বেরিয়ে আসতে একমত হতে ব্যার্থ হয়। এর আগে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে চাইলেও অর্থনৈতিক ও ব্যাবসায়ীক স্বার্থ রক্ষায় বহু দেশের বিরোধিতায় সে সকল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর বিরোধীতার ফলে এসসকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংস্থাগুলো কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে পারে নি। উপরন্তু, গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো ক্রমাগতভাবে তাদের জ্বালানি উৎপাদনে অনবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদানসহ অধিক হারে ভর্তুকি বৃদ্ধি করতে দ্বিধা করছে না।
জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো শুধুমাত্র ২০২২ সালে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছে যা কোভিড পূর্ববর্তী সময়ের থেকে প্রায় দ্বিগুণ। ধনী দেশসমূহের আরেক সংগঠন জি-২০ জোটভুক্ত দেশগুলোও একই রকমভাবে জ্বালানি পরিকল্পনা নিচ্ছে যা জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে বিপত্তি ঘটাচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন গ্যাসক্ষেত্র তৈরীর ঘোষণা, এশিয়ার এলএনজি বাজারে আধিপত্য জোরদারে জাপানের আগ্রাসী কার্যক্রম, চীন ও কোরিয়া কর্তৃক নৌবহরের সক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রচেষ্টা হিসাবে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এসকল কিছুই জলাবয়ু পরিবর্তনরোধে তাদের চরম উদাসিনতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা-সম্মেলনে বৃহৎ শক্তির দেশগুলো বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতা দিলেও আদতে তারা জলবায়ু পরিবর্তনকে নিজেদের নেতৃত্ব তুলে ধরার নতুন ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনকে অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর মতো বিবেচনায় নিয়ে এর ক্ষতিকর প্রভাব হতে নিজেদেরকে সুরক্ষিত করা ও এর মোকাবেলায় গঠিত বিভিন্ন বৈশ্বিক ফোরাম ও সম্মেলনে জলবায়ু কূটনীতিতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করাই যেন বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিসম্পন্ন দেশগুলোর প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্বণ নিঃসরণ কমানোর ক্রমাগত মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়ায় উন্নত দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করে প্রফেসর ড জহিরুল হক উদবোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাবে বিশ্ব এক জটিল সময় পার করছে। যা ইতিমধ্যে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপি মানবতার জন্য রেড অ্যালার্ট হিসেবে ঘোষণা করেছে। উন্নত দেশগুলোকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ এ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। পাশাপাশি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবসায় বিনিয়োগ না করে কার্বণ নিঃসরণ হ্রাসে এখনই উদ্যোগি হতে হবে।’
-
যে সেতু হলে সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমবে ৬৫ কিলোমিটার
-
শিক্ষায় উন্নতি, ঘর ও ভূমি অধিকার চান চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল করিম কিম জানান, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ও ইউএনএসডিজি ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিটে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে করতে গণমাধ্যম, বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে অবগত করা, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার রোধের ব্যাপারে জোরালো আহ্বান, দাবির বিষয়টিকে বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেয়া এবং জীবাশ্ম জ্বালানি বিরোধী জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে জনমত তৈরির উদ্যেশ্যে বিশ্বব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসাবে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে দিনব্যাপী অসংখ্য কর্মসুচী পালন করা হচ্ছে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিয়া ব্রীজে বিকাল ৩টায় রিকশা র্যালী ও জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাটে নৌ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’