নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ২৩:৩৪, ৯ মে ২০২১
পদ্মায় নৌযান দুর্ঘটনায় ২৬ মৃত্যু: চালক নেশাগ্রস্ত, অতিরিক্ত গতিসহ ৮ কারণ

গত ৩ মে পদ্মায় বাল্কহেডের সঙ্গে একটি স্পিডবোটের ধাক্কায় ২৬ জন যাত্রী মারা গেছেন। মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মায় এই স্পিডবোট দুর্ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তের পর জেলা প্রশাসনের দল পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এতে চালক নেশাগ্রস্ত, বোটের অতিরিক্ত গতিসহ ৮টি কারণ দেখানো হয়েছে।
রোববার (৯ মে) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তদন্ত দলের প্রধান মো. আজাহারুল ইসলাম মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ৮টি পয়েন্ট ছাড়াও ঘাটের ১৬টি অব্যবস্থাপনা আর ২৩ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার পেছনে যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো-
- কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে চলমান সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইজারাদার কর্তৃক স্পিডবোটটি শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে আসার সুযোগ করে দেয়,
- স্পিডবোট চালকের অসর্তকতা,
- চালকের কোনো প্রশিক্ষণ না থাকা,
- চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বোট চালানো,
- অতিরিক্ত স্পিডে বোটটি চালানো,
- নৌ-চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় চালক কর্তৃক স্পিডবোডটি ঘাটে না ভিড়ানো,
- বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ-পুলিশ কর্তৃক কোভিট-১৯ বিস্তার রোধকল্পে সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে না পারা,
- ঘাটের অব্যবস্থাপনা।
এছাড়াও ঘাটের ১৬টি অব্যবস্থাপনার কথাও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।
তদন্ত দলের বক্তব্য
তদন্ত দলের প্রধান ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নৌ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, উদ্ধারকৃত যাত্রী, বোট মালিক সমিতির প্রতিনিধি, ঘাটের বোট চালক, ট্রলার চালক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া স্পিডবোট চালকের ডোপটেস্টের ফলাফল সংগ্রহ করে আটটি দুর্ঘটনার কারণ দেখিয়েছি। ঘাটের অব্যবস্থাপনার ১৬টি তথ্য তুলে ধরে সেসব বাস্তবায়নের জন্যে ২৩ দফা সুপারিশমালাও দিয়েছি।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘তদন্ত দলের কারণগুলো খতিয়ে দেখে ঘাটের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যেসব সুপারিশমালা দিয়েছেন, সেসব সরকারের উচ্চ মহলে পাঠানো হবে। যদি ঘাটের শৃঙ্খলা আনতে এসব সুপারিশ কাজে লাগে, তাহলে অবশ্যই বাস্তবায়ন করা হবে।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিরাজ হোসেইন, চরজানাজাত নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক, শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপনা বিভাগের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিকের সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন ও নারায়ণগঞ্জের কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার আসমাদুল ইসলাম।
স্পিডবোটের চালক ছিলেন মাদকাসক্ত
মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীতে স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় আহত চালক শাহ আলম মাদকাসক্ত ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে করা ডোপ টেস্টে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
মাদারীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, স্পিডবোটের চালক শাহ-আলমের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে গাঁজা ও ইয়াবা সেবনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তিনি দুর্ঘটনার দিনও মাদকসেবন করেন। নেশাগ্রস্ত থাকলে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। এই কারণে দুর্ঘটনার কথাও তারা বলেন। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত...
স্পিডবোটের মালিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মায় এই স্পিডবোট দুর্ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি সেই স্পিডবোটের মালিক চান মিয়া ওরফে চান্দুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রোববার (৯ মে) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিস্তারিত...
লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করেই পদ্মায় চলতো স্পিডবোট
এ ঘটনায় সামনে এসেছে লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকলেও স্পিডবোটের চলাচল নিয়ে। জানা যায়, স্পিডবোট জেটি বন্ধ থাকার নির্দেশ থাকলেও এসব নিষেধ অমান্য করেই পদ্মায় চলতো এই নৌযান।
লকডাউনের নির্দেশনা ছিলো, স্পিডবোটের জেটি বন্ধ থাকবে। টিকিট বেচাকেনা বা যাত্রী পারাপার করা যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নির্দেশনা মানা হয়নি এবং দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৬ জন আরোহীর। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এসেছে নয় বছরের শিশু মিম এর কান্নাও। মিম বাবা-মা আর দুই বোনের সাথে যাচ্ছিল মৃত দাদার লাশ দেখতে। পরে তার পরিবারের সবাই মৃত্যুবরণ করে। বিস্তারিত...
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাওয়া এবং শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন দুটি পক্ষ। তাদের যোগসাজশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘ম্যানেজ করে’ অবৈধভাবে স্পিডবোটগুলো চলতো বলে জানা গেছে। তারা প্রকাশ্যে টিকিটও বিক্রি করত। কারা এসব কাজে জড়িত তাদের তথ্যও বেরিয়ে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ঘাটের ইজারাদার আশরাফ ও তার ছোট ভাইয়ের কাছে ছিল মাওয়া ঘাটের নিয়ন্ত্রণ। কাঁঠালবাড়ি ঘাটের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন শাহ আলম খান।
জনপ্রিয় কিছু গণমাধ্যমের বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ওই এলাকার স্থানীয়দের মন্তব্য। স্থানীয়রা জানাচ্ছে, ইজারাদারদের লোকেরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে স্পিডবোট চালাতো। এজন্য প্রতিদিন তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কয়েকজনকে দিতে হতো। অতিরিক্ত টাকা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত যাত্রীও বোটে তুলত তারা। এসবই চলছিল প্রকাশ্যেই। বিস্তারিত...
আইনিউজ/এসডি
- বরিশালে সন্ধ্যা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়লো হাঙর
- বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ ফলাফল : নৌকা ৮৭৭৫৩, হাতপাখা ৩৪৩৪৫
- প্রেমের টানে বরিশালে, ‘দেশি প্রেমিকের’ হাতে মার খেয়ে পালালেন ভারতীয় প্রেমকান্ত
- গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রাপ্ত ফলাফল
- কুড়িয়ে পাওয়া পাঁচ লক্ষ টাকার প্রকৃত মালিককে খুঁজতে এলাকায় মাইকিং
- সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা স্বপ্ন-সোহাগী ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব
- চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা
- বাড়িতে ফোন দিয়ে জানলেন তিনি বাঘের থাবায় মারা গেছেন, চলছে দাফনের প্রস্তুতি
- নির্বাচন ফলাফল লাইভ ২০২৪ | BD election result 2024
- দেলোয়ার হোসেন সাঈদী মারা গেছেন