Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ আগস্ট ২০২৫,   ভাদ্র ৪ ১৪৩২

দীপংকর মোহান্ত

প্রকাশিত: ১৬:০৩, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
আপডেট: ১৬:০৬, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা

১৩ সেপ্টেম্বর টরেন্টো টেলিগ্রাম তার সম্পাদকীয়তে বলে পূর্ব পাকিস্তানে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে ৩০ লাখ টন খাদ্য এবং ৮০ হাজার শরণার্থীর জন্য আলাদা খাদ্য সাহায্য করা জরুরি। ২০ ডিসেম্বর টাইমস সাময়িকী ‘যুদ্ধের ভেতর দিয়ে একটি জাতির জন্ম’ নামে ‘জয়বাংলা’র স্বাধীনতার বর্ণনা দেয়।

গণমাধ্যমকে ‘সভ্যতার তৃতীয় নয়ন’ বলা হয়ে থাকে। যেকোনো দেশের রাজনৈতিক ঘটনা কিংবা বড় কোনো খবর গণমাধ্যম তাৎক্ষণিক তাবৎ দুনিয়ার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। তখন মানুষ বিষয়টি জানতে পারে এবং একটি জনমত তৈরি হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভিক সময়ে পাকিস্তানী সেনাদের বর্বরতা ও অস্বাভাবিক গণহত্যার কথা গণমাধ্যমসূত্রে পৃথিবীর মানুষ জানতে পেরেছিল।

তৎকালীন সময়ে গণমাধ্যম বলতে যেমন বিদেশী পত্রিকা, রেডিও এবং টেলিভিশনের ইতিবাচক ভূমিকার কথা বলা যায়। গণমানুষ বেশি শোনেছে বেতারের খবর। বিদেশী গণমাধ্যমের খবর পড়ে বা শোনে বিশ্ববাসী বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানী সেনাদের নির্মম গণহত্যা যজ্ঞের ধিক্কার জানায়; বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন তৈরি হতে থাকে। তখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নাগরিক স্বপ্রণোদিত হয়ে শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ায়।

তারা সাহায্যের হাত বাড়ায়। এই সকল মানবিক নাগরিকজন শরণার্থীদের জন্য নগদ অর্থ, খাদ্য, পোষাক, তাঁবু, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অকাতরে দান করে। যাতে তারা শরণার্থীদের বাঁচানোর জন্যে দ্রুত পাঠাতে পারে। এভাবে একাত্তর সালে আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে ওঠেছিল। গণমাধ্যমের খবরে বিশ্ব
বিবেক উদ্বেলিত করেছিল।

বিশেষত লৌহমানব জেনারেল আইয়ুব খানের পতন এবং গণ অভ্যুত্থানের বিবিসি রেডিও খবর বিশ্বে ছড়ায়। আবার উত্থাল মার্চের খবরও বিদেশী গণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে ছাপে। এই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তখন ধারণা করেছিলেন যে, পাকিস্তানে বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে। ফলে বিশ্বের নামকরা পত্রিকা এবং রেডিওগুলোর অনেক সাংবাদিক ঢাকায় আসেন। এমন পরিস্থিতিতে বিখ্যাত সাংবাদিকরা পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক নাজুক পরিস্থতির দিকে বিশ্বের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে থাকেন।

বিশেষত বিবিসির সাংবাদিক মার্ক টালি ও দ্য ডেইল টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাইমন ড্রিং-এর নাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে যুক্ত হয়ে আছে। বিখ্যাত দৈনিক দ্য ডেইল টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাইমন ড্রিং ৬ মার্চ ঢাকা এসে ৭ মার্চ উত্থাল ঢাকা অবলোকন করেন ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দেখেছিলেন। অতঃপর তিনি পত্রিকায় রিপোর্ট পাঠাতে শুরু করেন। এমতাবস্থায় সাইমন লন্ডন না গিয়ে ঢাকায়-ই অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন। এই দুই সাংবাদিক গোপনে বঙ্গবন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখেন।

২৫মার্চ মাসর্ক টালি সহ তিনি পাকসৈন্যদের হোটেল কন্টিনেন্টলে অবরুদ্ধ থাকলেও গোপনে অনেক চিত্র ধারণ করেন। সাইমন ড্রিং ২৬ মার্চ সন্তর্পনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ, পুরাতন ঢাকার রাস্তা রাস্তায় লাশের পাহাড় দেখেছিলেন। তাকে পরে পাকিস্তান সরকার বিমানে তুলে দিয়ে বিদায় করে। তিনি পরে তাঁর প্রতিবেদনটি ৩০ মার্চ টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ছাপা করেন। শিরোনাম ছিল ‘ট্যাংকস ক্র্যাশ রিভল্ট ইন পাকিস্তান’।

এই রিপোর্টের ঢাকার তরতাজা রক্ত-গন্ধের খবরে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব, সংগঠন, সংস্থা বিবৃতি দিতে থাকে। এমনকি কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা বাংলাদশের জনগণের পক্ষে মৌন সমর্থন জানায়।

মার্কস টালির বিবিসি প্রতিবেদনে সেই রক্তাক্ত দিনগুলোতে মুক্তিকামী মানুষের সাহসিকতা এবং পাকদের রক্তের হুলি খেলার খবরে মানুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। বিবিসির মার্ক টালি নগরে বন্দরে চারণ কবির মতো লোকদের সাতে ভিড়ে গিয়ে প্রকৃত সংবাদ সংগ্রহ করেছিলেন। তখন তিনি মানুষের একমাত্র ভরসার আশ্রয় ছিলেন এবং বিবিসি শোনার জন্য মানুষ উদ্রীব হয়ে থাকতো।

তেমনি মাইকেল লরেন্ট যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েড প্রেসের [এপি] আলোকচিত্রী ছিলেন। তিনি ২৫ মার্চ-এর নরহত্যা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তাঁর চিত্র ও সংবাদ বহির্বিশ্বে সাড়া ফেলে দেয়। মানুষ জানতে পারে পূর্ববাংলায় কী ঘটেছিল।

অ্যান্থনি মাসকারেনহাস ছিলেন বিখ্যাত সানডে টাইমসের সংবাদদাতা। তিনি বাংলাদেশের নারকীয় অবস্থা দেখে ১৮ মে লন্ডন গিয়ে পত্রিকার সদর দপ্তরে সবকিছু অবহিত করেন। ১৩ জুন সানডে টাইমসে তাঁর প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘জেনোনাইট’। তিনি যে রক্তের দাগ দেখেছিলেন তার অনুসন্ধানী বর্ণনা করেন প্রতিটি লাইনে। সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্স তখন ইউরোপে এই পত্রিকার মাধ্যমে পূর্ববাংলার চিত্র তুলে ধরেন। ফলে গোটা ইউরোপের জনগন বাংলার পক্ষে চলে আসে।

২০ জুন পুনরায় দ্য সানডে টাইমস স্পষ্ট ভাষায় লেখে ‘পাকিস্তানে সংঘবদ্ধ নির্যাতন’ শিরোনামে প্রতিবেদন। পত্রিকা জানায় যে, পাকসেনারা জনতা, শিক্ষক, ছাত্র, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসককে গুলি করে হত্যা করছে। নিউইয়র্ক টাইমসের সিডনি শনবার্গ ছিলেন পত্রিকার দক্ষিণ এশীয় সংবাদদাতা। তিনি ২৫ ও ২৬ মার্চ রক্তরঞ্জিত ঢাকার নির্মমতা নিজ চোখে দেখেছিলেন।

তাঁর প্রতিবেদন নিউইয়র্ক টাইমসে ২৮ মার্চ তিনি ‘গণহত্যা’র বিভৎসতার চিত্র এঁকেছিলেন তাঁর প্রতিবেদনে। এভাবে ১৮ এপ্রিল লন্ডনের দ্য অবজারভার পাকিস্তান সৈন্যদের নির্মম গণহত্যা, ধর্ষণ অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের চিত্র তুলে ধরে।

১৯ জুন দ্য স্পেকটেট লেখে পূর্ব পাকিস্তানে পাকসেনা দ্বারা গণহত্যা চলছে। তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে বৃহৎ গণহত্যা হয়েছে বলে জানায়। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে দিল্লির ‘দ্য উইকলি নিউজ এজ’ তার প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছিল ‘বিজয় নিশ্চিত’। পত্রিকাটি জানান দেয় যে যোদ্ধারা যে ভাবে দেশের ভিতরে গিয়ে যুদ্ধ করছে এবং যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে তাতে পাক সেনারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

১৩ সেপ্টেম্বর টরেন্টো টেলিগ্রাম তার সম্পাদকীয়তে বলে পূর্ব পাকিস্তানে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে ৩০ লাখ টন খাদ্য এবং ৮০ হাজার শরণার্থীর জন্য আলাদা খাদ্য সাহায্য করা জরুরি। ২০ ডিসেম্বর টাইমস সাময়িকী ‘যুদ্ধের ভেতর দিয়ে একটি জাতির জন্ম’ নামে ‘জয়বাংলা’র স্বাধীনতার বর্ণনা দেয়।

২৬ মার্চ পর্যন্ত বিদেশেী সাংবাদিকরা হোটেল ইন্টার কনটিনেন্টালে অবস্থান করে তাদের অনুসন্ধানী চোখ খোলা রাখেন। ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধুর স্বধীনতা ঘোষণা নিয়ে ২৭ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফে ডেভিড লোমাকের প্রতিবেদন ছিল ‘সিভিল ওয়ার ইন ইস্ট পাকিস্তান/শেখ আ ট্রেইটর, সেইস প্রেসিডেন্ট’। তখন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩৭ জন সাংবাদিক ঢাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন।

তাদের মধ্যে লন্ডন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, জাপান,অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, কানাডা প্রভৃতি দেশের গণমাধ্যমের সাংবাদিক ছিলেন। তখন নামকরা সাংবাদিকদের কয়েকজন হলেন সাইমন ড্রিং, অ্যান্টনি ম্যাককারেনহাস, মার্কস টালি, সিডনি শনবার্গ, পিটার হ্যাজেন হার্স্ট, ডেভিড লোশক, নিকোলাস টোমালিন, ক্লেয়ার হলিং, ওয়ার্থ জন পিলজার, মার্টিন গুনাকাট, জন পিলজার, অ্যালেন্স গিন্সবার্গ প্রমুখ। তাঁরা বাংলাদেশ ও বাঙালির স্বাধীনতাকে বিশ্ববাসীর কাছে যেমন ফুটিয়ে তুলেছিলেন; তেমনি পাকিস্তানী সেনাদের বর্বরতার ছবিও বিশ্ববাসী পেয়ে যায় পাকিস্তানীদের কোনো যুক্তি ধুপে টিকেনি।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য অবজারভার, ডেইলি টেলিগ্রাফ, দ্য সানডে টাইমস, টাইম সাময়িকী, দ্য স্পেকটেট, টরেন্টো টেলিগ্রাম, দ্য উইকলি নিউজ এজ, স্টেটম্যান প্রভৃতি পত্রিকার প্রতিবেদন আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখে।

বিখ্যাত কবি-সাংবাদিক অ্যালেন্স গিন্সবার্গ শরণার্থীদের দেখতে এসে যে ‘যশোহর রোড কবিতা’ গেয়ে বিশ্ব বিবেকে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। তিনি ও তাঁর কবিতা আজো বিখ্যাত হয়ে আছে। তেমনি নিউইয়র্কে জর্জ হ্যারিসনের বিখ্যাত কনসার্টের খবরও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসে।

১৯৭১ সালে আলোকচিত্রী কিশোর পারেক, মার্টিন অলাক, মাইকেল লরেন্ট. রঘু রাই, মার্ক টালি, রশিদ তালুকদার, ত্রিপুরার অনিল ভট্টাচার্য, আসামের অঞ্জলি লাহিড়ী প্রমুখ মৃত্যুর মুখে গিয়ে ছবি তুলে পত্রিকায় দিতেন। তাদের ছবিগুলো পত্রিকায় স্থান পায়। যা বিশ্ব দরবারে পাকিস্তানী কর্তৃক বাঙালি নিধনে প্রমাণক ছিল।

ভারতের গণমাধ্যম হিসেবে তখন বাঙালির কাছে ‘আকাশবাণী’র খবর ছিল ভরসা ও প্রেরণার উৎসমুখ। ভরাট কণ্ঠের অধিকারী দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের খবর মানুষের প্রাণে আশার সঞ্চার করতো। তাছাড়া আকাশবাণীর পঙ্কজ সাহা, উপেন তরফদারও স্মরণীয়। ২৫ মার্চের রর্বরতার খবর আকাশবাণী বারবার প্রচার করে। ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি পরিবেশন করে বাঙালিদের মনে মাতৃভূমিকে জাগিয়ে রাখে।

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের আনন্দবাজার, অমৃতবাজার, যুগান্তর, দেশ, ত্রিপুরা সংবাদ, জাগরণ, গণরাজ দেশের কথা প্রভৃতি পত্রিকার ভ‚মিকা উল্লেযোগ্য। কিছু পত্রিকা আবার যুদ্ধকালীন সময়ে নতুন করে ভারতীয়রা প্রকাশ করেছিল। ভারতীয় গণমাধ্যমের বেতার কথিকা, সাক্ষাৎকার, প্রতিবেদন তখন শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং মনোবল যোগায়।

কলকাতাকেন্দ্রিক পত্রিকাগুলো শরণার্থী, গণহত্যার মমস্পর্শী দৃশ্য প্রচুর ছাপতে থাকে। আনন্দবাজার পত্রিকার বিখ্যাত কার্টুনগুলো মানুষের মনে ধরেছিল। তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক পত্রিকাও অনেক ছবি ও খবর প্রকাশ করেছিল। তখন বিশ্বের গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা কলকাতায় বেশি থাকতেন। তাঁরা শরণার্থী শিবির ঘুরেঘুরে সংবাদ সংগ্রহ করতেন। বৈদেশিক পত্রিকার সম্পাদকীয় ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো সেদিন পাকিস্তানীদের কোমর ভাঙতে সহায়তা করেছিল।

আমরা দেখি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রায় সকল খবর ছিল বাংলাদেশের পক্ষে সহায়ক শক্তির আঁধার। গণমাধ্যমের কারণে পাকিস্তানের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল পরিস্থতি আর ‘পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ থাকেনি পূর্ববাংলার স্বাধীনতার লড়াই হিসেবে দেখা হয়েছিল। গণমাধ্যমের প্রচারের কারণে এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও তাদের সরকারের বিপক্ষে দাঁড়ায়।

‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে’র আলোচনা, খবর, পর্যালোচনা, কথিকা ছাড়াও এম আর আখতার মুকুলের ‘‘চরমপত্র’ পাঠ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধারা এ থেকে মনোবল পেয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের অভ্যন্তর এবং সীমান্ত এলাকা থেকে ছাপা কিংবা সাইক্লোস্টইলে অসংখ্য দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে বিনামূল্যে বিলি করা হতো। এই সকল পত্রিকার খবর ছিল যুদ্ধের মাঠে প্রেরণাদায়ক।

এছাড়া বুলেটিন, সাময়িকী, লিফলেট, ম্যাগাজিনে পাকিস্তানীদের নির্মমতার পাশাপাশি তাদের পরাজয়ের নানা কথা থাকতো। যুদ্ধকালীন কয়েকটি পত্রিকা নাম উল্লেখ করা যেতে পারে যেমন জয়বাংলা, মুক্তিযুদ্ধ, মাতৃভূমি, সোনার বাংলা, জন্মভূমি দুর্জয় বাংলা স্বধীন বাংলা, দাবানল, মুক্তি, বাংলার মুখ, বিপ্লবী বাংলাদেশ ইত্যাদি।

যুদ্ধের সূচনালগ্নে পূর্ববাংলার ইত্তেফাক ও সংবাদ পত্রিকার ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। বিদেশী গণমাধ্যম বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যে স্বকীয় ভূমিকা নিয়েছিল তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। ৭ মার্চ থেকে শুরু করে ২৫ ও ২৬ মার্চ এবং ১৭ এপ্রিল বিদেশী সাংবাদিকরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে বিষ্ফোরণের সীমারেখায় দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার অভিলক্ষগামী সকল গুরুত্বপূর্ণ খবর বিশ্বে ছড়িয়েছিলেন।

লেখকের আরও লেখা-


দীপংকর মোহান্ত, শিক্ষক, লেখক ও গবেষক
  • খোলা জানালা বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। eyenews.news-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে eyenews.news আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

বিশ্বের মজার মজার গল্প আর তথ্য সম্বলিত আইনিউজের ফিচার পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি

দিনমজুর বাবার ছেলে মাহির বুয়েটে পড়ার সুযোগ || BUET success story of Mahfujur Rhaman || EYE NEWS

হানিফ সংকেত যেভাবে কিংবদন্তি উপস্থাপক হলেন | Biography | hanif sanket life documentary | EYE NEWS

আশ্চর্য এন্টার্কটিকা মহাদেশের অজানা তথ্য | Antarctica continent countries | facts। Eye News

 

Green Tea
সর্বশেষ