Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১০ মে ২০২৫,   বৈশাখ ২৭ ১৪৩২

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ২৮ জুন ২০১৯
আপডেট: ১৩:৪৮, ৩ জুলাই ২০১৯

দ্যা ম্যান উইথ দ্যা গোল্ডেন ব্লাড

সজিব তুষার: ছবিতে যাকে দেখছেন তিনি জেমস হ্যারিসন। নাম শুনে নিশ্চই কৌতুহল বেড়ে গেলো। কৌতুহল বেড়ে যাওয়ার মতই এই নামটি। কৌতুহলী পিপাশা মেটার আগেই জেনে নেওয়া যাক তাঁর সম্পর্কে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য। নাম                                           জেমস হ্যারিসন পুরোনাম                                  জেমস ক্রিস্টোফার হ্যারিসন জন্ম                                           ২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৬ (বয়স ৮২)অস্ট্রেলিয়া জাতীয়তা                                   অস্ট্রেলীয় পেশা                                          সমাজসেবা যে কারনে আলোচিত                  রক্ত প্লাজমা দাতা উপাধি                                         The man of golden arm (দ্যা ম্যান উইথ দ্যা গোল্ডেন ব্লাড) সম্মাননা                                      Medal of the Order of Australia (OAM) (মেডেল অফ দ্যা অর্ডার অফ অস্ট্রেলিয়া)   এখন আসা যাক মূল গল্পে- জেমস ক্রিস্টোফার হ্যারিসন। উনার বয়স যখন শুধু মাত্র চৌদ্দ বছর, ঠিক তখনই এক গুরুতর অসুখ ধরা পরে তাঁর জীবনে। মেজর এক অপারেশনের জন্য তখন তাঁর ১৩ লিটার রক্তের প্রয়োজন হয়। রক্ত যোগারও হয়ে যায় আর শুরু করেন অপারেশন। তারপর প্রায় তিন মাস হাসপাতালে থাকতে হয় পুরোপুরি সুস্থ হতে। তাঁকে সুস্থ করে তোলার পেছনে যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ জন্মে তাঁর। আর সেই সাথে যাতে রক্তের অভাবে কাউকে না পড়তে হয় সে চিন্তাটাও তাঁর মাথায় খেলতে শুরু করে। যেই ভাবনা সেই কাজ। সুস্থ হয়ে বাড়িতে এসেই তিনি প্রতিজ্ঞা করে বসলেন নিজের কাছে। বাকী সারাটা জীবন তিনি রক্তদান করবেন। এর কিছুদিন পরেই ঘটে গেল আরো অদ্ভুত এক ঘটনা। ১৯৫৪ সালে রক্তদান শুরু করার কিছুদিন পরই তাঁর রক্তে খুব অস্বাভাবিক শক্তিশালী এন্টিবডি আবিষ্কৃত হয়। তাঁর রক্তে রয়েছে Rho(D) Immune Globulin নামের একটি দূর্লভ এন্টিবডি যা রেসাস এনিমিয়া নামের একটি ভয়ঙ্কর রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজন হয়। এন্টিবডিটি +ve এবং -ve রক্তের গ্রুপের পিতামাতার সন্তান ধারনের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি D Rh Group Antigen এর প্রতিরোধী। বিজ্ঞানীরা তার রক্ত থেকে নবজাতক শিশুদের কমন একটি রোগ Rhesus Disease এর প্রতিষেধক তৈরী করতে সমর্থ হয়। তাঁর বয়স যখন ১৮ তখন থেকেই তিনি রক্তদান শুরু করেন। অস্ট্রেলিয়ায় ১৮ বছর বয়সের আগে রক্ত দান বৈধ নয়। তাঁর উপর যখন এন্টিবডির কথা জানতে পারলেন, এই মানুষটা প্রতি তিন সপ্তাহে একবার করে রক্ত দান করা শুরু করেন। তাঁর রক্তের রক্তরস (প্লাজমা) টুকুই এন্টিবডি সংগ্রহের জন্য যথেষ্ট। তিনি শুধু রক্তের প্লাজমাটুকুই দান করেন। প্লাজমা দুই-তিন সাপ্তাহ অন্তর প্লাজমা দান করা যায় এবং এন্টিবডি বিতরণের জন্য তাঁকে বেশ ঘন ঘন রক্ত দান করতে হয়। ২০১১ সালের মে মাসে তাঁর ১০০০তম রক্তদান সম্পন্ন হয়। তাঁর দান করা রক্তের সাহায্যে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ২৪ লক্ষ নবজাতক শিশুর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রীয় আইনানুযায়ী তিনি শেষ বারের মত রক্তদান করেন। কারন অস্ট্রেলিয়া্য ৮১ বছরের পর আর রক্ত দিতে পারবেন না নাগরিকগণ। মানবকল্যাণে অসাধারণ অবদান রাখায় ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান সরকার তাঁকে Medal of the Order of Australia (OAM) উপাধিতে ভূষিত করে। নিজের রক্তদানের বিশ্বরেকর্ড সম্পর্কে এই মহামানব বলেন, ‘আমি সত্যিই চাই আমার এই রেকর্ডটি ভেংগে যাক।`
Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়