আপডেট: ০৬:০৩, ৪ আগস্ট ২০১৯
সিলেটে মিলেছে এডিস মশার অস্তিত্ব, ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা
বাস টার্মিনালের একটি পুরাতন টায়ারের দোকান এবং তার আশেপাশে থাকা কয়েকটি গাড়ি মেরামতের গ্যারেজ থেকে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এনে পরীক্ষা করে দেখেছেন সিলেটের ওই এলাকায় এডিস মশার অস্তিত্ব রয়েছে। এমনকি সেখানে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে। পরবর্তীতে সেই লার্ভা থেকে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে।
সিলেট: ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বহনকারী এডিস মশার অস্তিত্ব এবার সিলেটেও পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের এক জরিপে সিলেটে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন সিলেটে সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায়।
তিনি জানান, সিলেটে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানির নমুনা সংগ্রহ করা শুরু হয়। পরে নগরীর দক্ষিণ সুরমার কদমতলীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা হতে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে সিলেটে এডিস মশার অস্তিত্ব রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
সিভিল সার্জন জানান, বাস টার্মিনালের একটি পুরাতন টায়ারের দোকান এবং তার আশেপাশে থাকা কয়েকটি গাড়ি মেরামতের গ্যারেজ থেকে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এনে পরীক্ষা করে দেখেছেন সিলেটের ওই এলাকায় এডিস মশার অস্তিত্ব রয়েছে। এমনকি সেখানে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে। পরবর্তীতে সেই লার্ভা থেকে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সিলেটে এডিস মশার অস্তিত্ব নিষ্চিত হওয়ায় এখন এই মশা দ্বারা সিলেটের মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আশার কথা হল সিলেটের মানুষ ইতিমধ্যে সচেতন হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে শুরু করা হয়েছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানও।
সিলেটে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। একই সাথে এডিস মশার কামড়ে সিলেটে ব্যাপকহারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করা জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা করছেন। যেসব এলাকা বেশি সংখ্যক এডিস মশার অস্তিত্ব মিলবে সেখানে বেশি সতর্কবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটে বিভাগীয় পরিচালক ডা. দেবপদ রায় বলেন, প্রথম দিকে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা সবাই ঢাকা ফেরত ছিলেন। এখন সিলেটে ডেঙ্গু তেমন নয়। তবে সামনে যেহেতু ঈদের মৌসুম, সেক্ষেত্রে কি হয় এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ ঈদের ছুটিতে যারা বাড়ি আসবেন তাদের নিয়ে কিছুটা চিন্তা রয়েছে।
সিলেটে গত ১ জুলাই থেকে শনিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৯০ জন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৪৬ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু কর্ণারের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. সুপার্থ ভট্টাচার্য।
তিনি আরও জানান, এখানে ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকায় অবস্থানকালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখন অনেকে সিলেটে থেকেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। একই সাথে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের জন্য পর্যাপ্ত কিট রয়েছে বলেও জানান তিনি। বিনামূল্যে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে ওসমানী হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা সবাই শঙ্কামুক্ত। তবে বুধবার রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা শাহজাহান নামে এক রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাতেই তাকে জরুরি ভিত্তিতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। তার রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে রক্ত দেয়া হলে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। তিনিও এখন শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
তবে ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো সিলেটেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রদান করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম। ঈদের সময় সিলেটের বাসট্যান্ড, রেলওয়ে ষ্টেশন ও বিমানবন্দরে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম রাখার ব্যাপারে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একইসাথে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের শনাক্তে পরীক্ষার ব্যবস্থাও রাখা হবে।
এদিকে সিলেটে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়ার বিষয়টি সিলেট সিটি করপোরেশনকে (সিসিক) জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায়।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের মশক নিধন পর্যবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা গত বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায়ের কাছ থেকে সিলেটে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে জানতে পেরে স্থানীয় কাউন্সিলর ও সিসিকের স্বাস্থ্য শাখার নির্বাহি কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ২৬ নং ওয়ার্ডের এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের নিয়ে আলোচনা সভা করেছি।
তিনি আরও জানান, আলোচনা শেষে আমরা ২৬ নং ওয়ার্ডে প্রাপ্ত ডেঙ্গুর লার্ভা ধ্বংস করে বিভিন্ন যায়গায় স্প্রে ও ফগার মেশিন ব্যাবহার করেছি। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমরা একই পদক্ষেপ নিব।
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের