Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ৮ ১৪৩২

আইনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৪৮, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

হঠাৎ ঝড়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবে গেলো দেড় ডজন ট্রলার

বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরের কাছাকাছি মাছ ধরার ১৮টি ট্রলার ডুবে গেছে বলে স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন। শুক্রবার রাতে আকস্মিক ঝড়ে ট্রলারগুলো ডুবে গেছে। তিনজনকে সাগর থেকে উদ্ধার করা হলেও এখনো অন্তত দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন বিভাগের দুবলা শুটকি পল্লী টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেছেন, ''মাছ ধরার ১৮টি ট্রলার ডুবে গেছে। সব মিলিয়ে জেলেদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকার। এখন পর্যন্ত দুইজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।''

তবে ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া ট্রলারের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০টি।

ট্রলার ডুবির পরপর রাত থেকেই ওই এলাকায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী। তাদের সঙ্গে জেলেদের শতাধিক ট্রলার উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে।

কোস্ট গার্ডের মুখপাত্র আবদুর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, একাধিক ট্রলার ডুবির খবর পেয়েই কোস্ট গার্ড উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। সেখান থেকে তিনজন জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আসলে কতগুলো ট্রলার নিখোঁজ হয়েছে, সেই তথ্য এখনো নিশ্চিতভাবে পাওয়া যায়নি।

যেভাবে ডুবলো ট্রলার

মোংলা থেকে স্থানীয় একজন সাংবাদিক আবু হোসাইন সুমন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, শুক্রবার দুপুর থেকেই মোংলায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ একটি ঝড় বইতে শুরু করে। সেই ঝড়েই ট্রলারগুলো ডুবে গেছে বলে আমার জানতে পেরেছি।

বঙ্গোপসাগরের ছয় নম্বর বয়ার কাছাকাছি এসব ট্রলার ডুবে গেছে।

ঝড়ের ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আগাম কোন সতর্কবার্তা ছিল না বলে তিনি জানান।

দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''এখনো আমরা শতভাগ নিশ্চিতভাবে জানি না যে আসলে কতগুলো ট্রলার সেখানে ডুবে গেছে। তবে মাঝিদের কাছ থেকে আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, তাতে ১৫ থেকে ২০টা ট্রলার ডুবে গেছে।''

''যেখানে ট্রলার ডুবে গেছে, সেখানে আমরা উদ্ধার করার জন্য একশোর বেশি ট্রলার পাঠিয়েছি। কিন্তু গভীর সমুদ্রে হওয়ায় সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। তারা ফিরে আসার পরে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাবে,'' বলছেন মি. আহমেদ।

দিনে বৃষ্টি থাকলেও সন্ধ্যায় আকাশের তারা দেখা গিয়েছিল। ফলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এরকম ঝড় হবে, তা জেলেদের কেউ ধারণা করেনি বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, অনেক সময় ঝড়ে ট্রলার উল্টে গেলে বা পানিতে ডুবে গেলেও ট্রলারের ভেতরের মাছ রাখার খোলে বাতাস থাকলে পুরোপুরি তলিয়ে যায় না। পানিতে আধ ডোবা হয়ে কিছুটা সময় ভেসে থাকে। এরকম থাকলে সেসব ট্রলার উদ্ধার করে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।

সাধারণত মাছ ধরার ট্রলারগুলোয় ৮/১০ জন মাঝি তিন থেকে ১৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ ধরতে যায়। বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন অংশে এসব ট্রলার দলবদ্ধ হয়ে মাছ ধরে থাকে। ফলে ট্রলার ডুবি হলেও জেলেদের অন্য ট্রলারের লোকজন দ্রুত উদ্ধার করতে পারে।

পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে প্রবল বাতাস

বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সমুদ্রে সিগন্যাল বা সংকেত জারির মতো পরিস্থিতি শুক্রবার তৈরি হয়নি। তবে লঘুচাপের কারণে বাতাস প্রবল হয়ে উঠতে পারে।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, পশ্চিমা লঘুচাপ বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যাচ্ছে। সেই জন্য কিছুটা বৃষ্টি বা মেঘলা পরিবেশের তৈরি হয়েছে।

সাগরের ওপরে খোলা জায়গা হওয়ায় সেখানে অনেক সময় বাতাসের চাপ বেড়ে যায়। তবে সাগরে সংকেত জারি করার মতো কোন পূর্বাভাস ছিল না।

তবে শুক্রবার নদীবন্দরগুলোয় এক নম্বর ও দুই নম্বর সতর্ক সংকেত জারি ছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র : বিবিসি

আইনিউজ/এমজিএম

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ