Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ১৬:২০, ১২ জুন ২০২৩

বরিশাল সিটি নির্বাচন : হামলার অভিযোগে সড়কে বিক্ষোভ 

নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে ইসির সংবাদ সম্মেলন।

নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে ইসির সংবাদ সম্মেলন।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ এর ভোটগ্রহণ চলছে সোমবার সকাল থেকেই। শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম চললেও বেলা বাড়তেই আসতে থাকে নানা অনিয়মের অভিযোগ। সর্বশেষ, বরিশাল সিটি নির্বাচনে ভোটে অনিয়ম ও প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ তুলে বরিশাল শহরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে হাতপাখার কর্মী-সমর্থকরা।

সোমবার (১২ জুন) বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের অবোরধ করে তারা।

জানা গেছে, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ছাবেরা খাতুন বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে হাতপাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী ফয়জুল করিম এক-দেড় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা।

এক পর্যায়ে পার্শবর্তী কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ শতাধিক নেতকর্মী জোড় হয়ে ভোটে অনিয়ম ও প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ এনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের অবরোধ করে।


প্রায় ঘণ্টাব্যপী এ অবরোধ চলাকালে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিক্ষোভকারীদের চারপাশ ঘিরে রাখে।

পরে দুপুর সোয়া ১ টার দিকে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ- কমিশনার ফজলুল করিম হ্যান্ড মাইক নিয়ে বহিরাগতদের সড়ে যেতে বললে হাতপাখার কর্মীরা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়। বর্তমানে পরিবেশ অনেকটাই স্বাভাবিক।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর যে ব্যক্তি হামলা করেছে, তাকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি বলেছেন, যে হামলা চালিয়েছে, তাকে শাস্তি পেতেই হবে।

সোমবার (১২ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে সিসি ক্যামেরায় নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সময় তিনি এসব জানান। 

খুলনায় এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
সোমবার একইদিন ভোটগ্রহণ চলছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ এর ভোটগ্রহণও। খুলনা সিটিতেও নির্বাচনী এলাকায় অস্থিতিশীলতার খবর পাওয়া গেছে। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মধু অভিযোগ তোলেছেন, তার এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে ঘটনাস্থল থেকে ইউএনবির বরিশাল প্রতিনিধি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে ভোটের প্রক্রিয়া ধীরগতির ছিল এবং পরিবেশ উৎসবমুখর ছিল না। তাছাড়া, ভোটদানের সময় তাঁর আঙুলের ছাপ মেলেনি বলেও অভিযোগ তাঁর। 

বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা 
অন্যদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনে (বিসিসি) সাতজন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ১১৮ জন সাধারণ ও ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন নারী।

বিসিসির মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, জাতীয় পার্টির প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান, স্বতন্ত্র হিসেবে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন প্রমুখ।

এক নজরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন 
৩টি থানা ও ৩০টি ওয়ার্ড এবং ২২৫টি মহল্লা নিয়ে গঠিত দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। ১৮৬৯ সালে বরিশাল টাউন কমিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ও ১৮৭৬ সালে বরিশাল মিউনিসিপ্যালিটিতে উন্নীত হয়। ১৯৮৫ সালে একে একটি প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা 
খুলনা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। 

খুলনা সিটি নির্বাচনের এবারের নির্বাচন হবে ইভিএমে। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯ ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হবে।

এক নজরে খুলনা সিটি কর্পোরেশন 
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বিভাগীয় সিটি কর্পোরেশন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ৪৫ বর্গ কিলোমিটার। আর এই সিটির জনসংখ্যা ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় পনেরো লক্ষ।

সর্বপ্রথম ১৮৮৪ সালে খুলনা নগরের মর্যাদা পায়। কলকাতা গেজেট অনুযায়ী ১৮৮৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর খুলনাকে মিউনিসিপাল বোর্ড ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৩ ডিসেম্বর রেভারেন্ড গগন চন্দ্র দত্ত প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে। সেসময়ে টুটপাড়া, শেখপাড়া, চারাবাটি, হেলাতলা এবং কয়লাঘাট এলাকায় সমন্বয়ে খুলনা পৌর সরকার যাত্রা শুরু করে। 

এদিকে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক জানিয়েছেন, নির্বাচন ভবনের বেজমেন্টে স্থাপিত সিসিটিভি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম থেকে খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সরাসরি মনিটরিং করছেন কমিশন।

সম্প্রতি সিলেটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন, কেউ ভোট দিতে না পারলে তিনি যেন সিসি টিভি ক্যামেরায় চিৎকার করে বলেন। সে দেখে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে।

উল্লেখ্য, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে। 

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়