Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১০ মে ২০২৫,   বৈশাখ ২৬ ১৪৩২

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৫ আগস্ট ২০১৯
আপডেট: ০৬:৪৭, ৫ আগস্ট ২০১৯

কাশ্মিরে নিষিদ্ধ সভা-সমাবেশ, গৃহবন্দি সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী

নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির কথা বলে গত সপ্তাহে কাশ্মিরে আধা সামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন করে ভারত। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর এসব বাড়তি সদস্যদের রাজ্যের রাজধানী শ্রীনগর এবং কাশ্মির উপত্যকার বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মিরের বাসিন্দাদের বিশেষ সাংবিধানিক অধিকার বাতিলের আশঙ্কার মধ্যে রাজ্যের বহু স্থানে মোবাইল ইন্টারনেট, নিষিদ্ধ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার রাত থেকে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহকে গৃহবন্দি করে রেখেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। গত রবিবার মধ্যরাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে শ্রীনগর জেলায়। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সোমবার কাশ্মির ইস্যুতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

শুক্রবার (২ আগস্ট) কেন্দ্রীয় সরকার সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সতর্ক করার পর কাশ্মির থেকে দ্রুত তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেয় রাজ্য সরকার। এরপরই স্থানীয়দের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। কাশ্মির ছাড়তে শুরু করে হাজার হাজার পর্যটক ও তীর্থযাত্রী। কাশ্মিরের রাজনীতিবিদরা আশঙ্কা করতে থাকেন, সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৫ (এ) ধারা বাতিল করতে যাচ্ছে। এই ধারার মাধ্যমে কাশ্মিরের জনগণকে চাকরি ও ভূমিতে বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে গভর্নর সত্য পাল মালিক তাদের জানিয়ে দেন, ৩৫ (এ) ধারা বাতিলের কোনও পরিকল্পনা নেই।

গত রবিবার কাশ্মিরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও স্পর্শকাতর এলাকায় কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের সঙ্গে সহিংসতা বৃদ্ধি ও সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বহু স্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানকার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ছাত্রাবাস খালি করে ফেলারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কাশ্মির পুলিশের দাবি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এদিন রাজ্য সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয় যেকোনও ধরণের সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ থাকবে। তবে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমে কারফিউ জারির কথা বলা হলেও তা জারি করা হয়নি বলে জানানো হয় ওই নির্দেশনায়। তবে রবিবার মধ্যরাত থেকে শ্রীনগর জেলায় ১৪৪ ধারা কার্যকরের কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রবিবার দিনের বেলায় ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লাহর বাসভবনে বৈঠকে বসেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাহসহ রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। ওই বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার (সংবিধানের ৩৫ এ ধারা ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ) বাতিল করা হলে সরকারকে পরিণাম ভোগ করতে হবে।

ওই বিবৃতি প্রকাশের পর রবিবার রাত থেকে গৃহবন্দি করে রাখা হয় কাশ্মিরের গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা মুফতি এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘কী পরিহাস যে আমাদের মতো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা শান্তির জন্য সংগ্রাম করেছে তাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। বিশ্ব দেখছে যে কাশ্মিরের মানুষ ও তাদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে’। আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ লেখেন, ‘যা কিছুই ঘটুক আপনাদের সবার সঙ্গে আমার দেখা হবে। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন’। এছাড়াও বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদকে আটক করা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে’র খবরে কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ এবং সিপিআই (এম) নেতা এম ওয়াই তারিগামিকে মধ্যরাতে আটকের কথা বলা হয়েছে। তবে সরকারি কর্তৃপক্ষ তাদের আটকের কথা স্বীকার করেনি।

এদিকে রবিবার দিল্লিতে শীর্ষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজিব গাউবাসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সোমবার নিজের বাসভবনে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সকাল সাড়ে নয়টায় ওই বৈঠক শুরুর কথা রয়েছে।

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়