Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ৩ ১৪৩২

রিপন দে

প্রকাশিত: ২১:১০, ১৪ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২১:২৪, ১৪ নভেম্বর ২০২১

মৌলভীবাজারে গারোদের ওয়ানগালা উৎসব

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ওয়ানগালা উৎসব। ছবি: রনজিৎ জনি।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ওয়ানগালা উৎসব। ছবি: রনজিৎ জনি।

প্রতিবছরের মতো এবারও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফুলছড়া (গারো লাইন) মাঠে অনুষ্ঠিত হলো গারোদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান ওয়ানগালা উৎসব। শ্রীচুক আচিক আসং নকমা এসোসিয়েশন ও শ্রীচুক গারো যুব সংগঠনের আয়োজনে জাকজমপূর্ণ হয়ে ওঠে এ অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেয় মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের গারো সম্প্রদায়।

রোববার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৯টায় ‘থক্কা’ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিশপ শরত ফ্রান্সিস গমেজ (সিলেট ধর্ম প্রদেশ) এবং তার সভাপতিত্বে দুপুরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

উৎসবে ক্রুশচত্বরে বাণী পাঠ (মান্দিতে), খামালকে খুথুব ও থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্কা দেয়া, পবিত্র খ্রীষ্টযাগ, দান সংগ্রহ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রার্থনা করা হয়। এ সময় গারো সম্প্রদায়ের কয়েকশ মানুষ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারোদের নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়।

ওয়ানগালা উৎসবে নিজস্ব সাজে গারো। ছবি: রনজিৎ জনি।

প্রধান পুরোহিত ফাদার প্লাসিড প্রশান্ত রোজারিও জানান, সুপ্রাচীনকাল থেকে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য।

ওয়ানগালা

গারোদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ওয়ানগালা। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মনোবাসনার নানা নিবেদন হয় এ উৎসবে। সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর আগে নতুন খাদ্যশস্য ভোজন নিষেধ থাকে এ সম্প্রদায়ের জন্যে। তাই অনেকেই একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলে থাকেন। আবার ওয়ানগালা উৎসব একশ ঢোলের উৎসব নামেও পরিচিত।

গারোদের বিশ্বাস, ‘মিসি সালজং’ বা শস্য দেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন। নতুন ফল ও ফসল ঘরে উঠবে, তার আগে কৃতজ্ঞতা জানাতেই হবে শস্যদেবতার প্রতি।

গারো সম্প্রদায়ের এটাই চল। তাই শস্যদেবতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির জন্য নেচে-গেয়ে উদযাপন করা হয় ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব। একইসঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মঙ্গল কামনা করা হয় শস্যদেবতার কাছে।

ঐতিহ্যবাহী পোষাকে গারো নারী। ছবি: রনজিৎ জনি।

ওয়ানগালা উৎসব একশ ঢোলের উৎসব নামেও পরিচিত। সাধারণত দুইদিন ধরে উৎসব চলে। কখনও কখনও এক সপ্তাহ ধরেও এটি চলতে পারে। উৎসবের প্রথম দিনে গোত্রপ্রধানের ঘরে রাগুলা নামের অনুষ্ঠান পালিত হয়। উৎসবের দ্বিতীয় দিন কাক্কাত নামে পরিচিত। এই দিন ছোট বড় সবাই রঙবেরঙের পোশাক ও পাখির পালক মাথায় দিয়ে লম্বা ডিম্বাকৃতি ঢোলের তালে তালে নাচে।

এই দিন হল বিনোদনের দিন। সারা গারো পাহাড় ঢোলের শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। পুরুষ ও নারীরা দুইটি আলাদা সারি গঠন করে এবং নাচের তালে তালে এগিয়ে যান। সাথে থাকে মহিষের শিঙে বানানো এক ধরনের আদিম বাঁশির সুর।

ওয়াংগালা উৎসব মেঘালয় ও বাংলাদেশের গারোদের সংস্কৃতির সংরক্ষণে ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।এটা জনপ্রীয় একটি উৎসব।

আইনিউজ/এসডি

আইনিউজ ভিডিও

প্রকৃতির সন্তান খাসি - খাসিয়া জনগোষ্ঠী

মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাস চালু

হাইল হাওরের বাইক্কাবিলে পর্যটক আর পদ্মটুনার ভিডিও ভাইরাল

জলময়ূরের সাথে একদিন | বাইক্কা বিল | ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি

সাজেক: কখন-কীভাবে যাবেন, কী করবেন? জেনে নিন বিস্তারিত

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ