Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   ভাদ্র ২৭ ১৪৩২

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:১৮, ১৬ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২০:২২, ১৬ নভেম্বর ২০২১

‘আমরা অসচ্ছ্বল শ্রমিকরা পাইলাম না, বাবুরা কেমনে টাকার চেক পাইলো?’

চা শ্রমিক। ফাইল ছবি।

চা শ্রমিক। ফাইল ছবি।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা বাগানে অস্বচ্ছল চা শ্রমিকদের ভাতায় স্বচ্ছল কর্মচারীদের নাম থাকার অভিযোগে ২৭টি চেক জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় এসব চেক জব্দ করা হয়।

জানা যায়, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় সরকার চা শ্রমিকদের মধ্যে বছরে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করে। চা বাগানের দুঃস্থ ব্যক্তিরা এ সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা বাগানে এ প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হয়ে প্রকল্পের টাকার চেক পেয়েছিলেন চা বাগানের স্বচ্ছল কর্মচারীরা। কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে এই তালিকায় বাগানের টিলা ক্লার্ক (কর্মচারী) থেকে শুরু করে অনেক অফিস কর্মচারী আর্থিক সহায়তার চেক পেলেও অস্বচ্ছল চা শ্রমিকরা পরিবার এই সুবিধা থেকে বিরত রয়েছে।

চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে রোববার কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে খোঁজ নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ২৭টি চেক জব্দ করা হয়। বাকি চেকের টাকাসম‚হ গত সোমবার ১৫ নভেম্বর থেকে চা শ্রমিকরা উত্তোলন শুরু করেছেন। গত ৭ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা বাগান ও এর ফাঁড়ি সুনছড়া, কামারছড়া চা বাগানের ১৩৫৬ জন শ্রমিকের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়।

বিতরণকৃত ওই তালিকায় চা বাগানের ২৭ জন স্বচ্ছল কর্মচারীর নাম ছিল। ২৭৯ ক্রমিকে আলীনগর চা বাগানের প্রধান টিলা ক্লার্ক নিয়ামুল হোসেন চকদার, ২৮০ ক্রমিকে গোদাম বাবু সিরাজুল ইসলাম, ২৮১ টিলা ক্লার্ক বাবুরাম কৈরী, ২৮২ ক্রমিকে সুনছড়া চা বাগানের টিলাক্লার্ক গোপাল চক্রবর্তীসহ চা বাগানের কম্পিউটার, অফিস ও ফ্যাক্টরী কর্মচারীদের নাম ছিল। চা শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তার তালিকা যৌথভাবে করা হলেও এ বিষয়ে একে অন্যের উপর দায় চাপান।

আলীনগর চা বাগানের শ্রমিক সুবাস কৈরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

আমার পরিবারের তিনজন বাগানে কাজ করে। আমরা অস্বচ্ছল শ্রমিক কিন্তু একজনও এই টাকা পেল না। অথচ বাবুরা কেমনে টাকার চেক পাইলো? একই বাগানের সুমন বাউরী, বিমলা নায়েক বলেন, আমরা চা বাগানের শ্রমিক। পরিবার খুবই অসচ্ছল। অথচ ওই তালিকায় আমাদের নাম নেই।

আলীনগর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দন বলেন, এই তালিকা নিয়ে আমরাও সমস্যায় আছি। আইনের বিষয়টি আমরা জানতাম না। আলীনগর চা বাগানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক এজিএম রফিউল আলম বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও পঞ্চায়েত এই তালিকা তৈরি করেছেন।

এ ব্যাপারে আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা বলেন, মূলত তালিকা তৈরির বিষয়টি আমার নয়। বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে অনেকেই সম্পৃক্ত রয়েছেন। তাছাড়া যারা তালিকা তৈরি করেছেন তাদের মতে এরা সবাই চা বাগানের বাসিন্দা এবং এই সহায়তা পাওয়ার যোগ্য।

অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুয়েব আহমদ চৌধুরী বলেন, বাগান পঞ্চায়েত, ম্যানেজার ও জনপ্রতিনিধিরা মিলেই তালিকা তৈরি করে দিয়েছেন। সে অনুযায়ী তাদেরকে চেক দেয়া হয়েছিল। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে ২৭টি চেক জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তক্রমে পরবর্তীতে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

আইনিউজ/এসডি

 

দেখুন আইনিউজের ভিডিও

চারিদিকে যখন একই কথা শুনি পঁচাত্তরের কথা মনে পড়ে : শামীম ওসমান

পুরুষ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা হচ্ছেন নারীরা

ক্ষুব্ধ ভিপু নূর, ৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ | গণঅধিকার পরিষদ

কোথায় কত বাড়লো বাস ভাড়া

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ