Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ০৯ মে ২০২৫,   বৈশাখ ২৬ ১৪৩২

রুপম আচার্য্য

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

শ্রীমঙ্গলে নাচে-গানে কূর্মী সম্প্রদায়ের করম উৎসব উদযাপন 

শ্রীমঙ্গলে কূর্মী সম্প্রদায়ের করম উতসবে কিশোরী মেয়েরা। ছবি- রূপম আচার্য্য

শ্রীমঙ্গলে কূর্মী সম্প্রদায়ের করম উতসবে কিশোরী মেয়েরা। ছবি- রূপম আচার্য্য

সাদা লালের মিশ্রনে শাড়ি আর খোপায় ফুল, রঙিন সাজে বাদ্যের তালে নাচে-গানে মাতোয়ারা হয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উদযাপন করা  হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী করম উৎসব (করম পূজা)। নিজ ঐতিহ্য অনুযায়ী করম গাছ বপন ও পূজার্চনা শেষ করে সৃষ্টিকর্তার প্রতি এই নাচ-গান উৎসর্গ করার মাধ্যমে মেতে ওঠেন মাহাতো কূর্মী সম্প্রদায়ের কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীরা।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের উত্তর সাইটুলা গ্রামে এই করম উৎসবের আয়োজন করা হয়। মাহাতো কূর্মী সম্প্রদায় গোষ্ঠীর ৪টি নাচের দল তাদের ঝুমুর নৃত্য পরিবেশন করে। এই উৎসবকে ঘিরে সেখানে ভীড় করে আশপাশের গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার সহশ্রাধিক মানুষ। সকল ধর্মের মানুষকেই এই উৎসব উপভোগ করতে দেখা যায়। এটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্যতম বার্ষিক করম উৎসব। যা একটি বৃক্ষ পূজার উৎসব।

একটি করম গাছকে ঘিরে উদযাপিত হয় কূর্মী সম্প্রদায়ের এ করম উৎসব। ছবি- রূপম আচার্য্য 


অনুষ্ঠানে কথা হয় বাংলাদেশ আদিবাসী কূর্মী সমাজের সাধারণ সম্পাদক নারায়ন কূর্মীর সাথে। এসময় তিনি জানান, ‘করম পূজা মূলত প্রকৃতির পূজা। আমাদের ডাল গাছ বপনের মাধ্যমে করম পূজা উদযাপন করা হয়ে থাকে। কূর্মী জাতি সাধারণত প্রকৃতির পূজারী। কৃষিভিত্তিক জাতি আমরা। পূজার মাধ্যমে আমাদের ফসল কিভাবে ভালো উৎপাদন হবে, মূলত পূর্বপুরুষেরা ফসল ভালো উৎপাদন হওয়ার জন্য এই পূজা করে থাকেন।’

অনুষ্ঠানে দেখা যায়, ‘একটি পূজার বেদি নির্মাণ করেন। পাহাড় থেকে সংগ্রহ করে আনা কারামগাছের ডালটি পূজার বেদিতে রোপণ করা হয়। পুরোহিত উৎসবের আলোকে ধর্মীয় কাহিনি শোনান। সেই সঙ্গে চলে কাহিনির অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যা। ব্যাখ্যা শেষ হলে বেদির চারধারে ঘুরে ঘুরে যুবক-যুবতীরা গানের তালে তালে নাচতে থাকেন।’

মূলত কূর্মী সম্প্রদায়ের যুবতীরা পঞ্চমী তিথিতে নিরামিষ খেয়ে মাটি ভর্তিকৃত জালায় ধান বীজ বপন করেন। এবং নমবী তিথিতে (পঞ্চমদিন) জালায় গাছ হলে সেই গাছ পূজা করা হয়। পরের দিন বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে করম পূজার সমাপ্তি হয়।

করম উৎসবের রাতে এভাবেই দলবেঁধে কূর্মী তরুণীরা নিজস্ব গীত নৃত্যে মাত করে রাখে উৎসব প্রাঙ্গণ। ছবি- রূপম আচার্য্য 


এদিকে করম উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আশিদ্রোন ইউপি চেয়ারম্যান নরেন্দ্র প্রসাদ বর্ধন জহর, কালীঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রানেশ গোয়ালা, আদিবাসী কূর্মী সমাজের সাধারণ সম্পাদক নারায়ন কূর্মী প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মাহাতো কূর্মী সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্যামল কূর্মী শামরথ।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়