Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ২৩ আগস্ট ২০২৫,   ভাদ্র ৮ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ১৬ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২২:১১, ১৬ নভেম্বর ২০২১

কোম্পানি কমান্ডারের নাম নেই মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় (ভিডিও)

রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি

রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি

বীরমুক্তিযোদ্ধা রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি (রনি প্রেন্টিস), ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কামান্ডার। তিনি সরাসরি যুদ্ধ করেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪ নং সেক্টর কমান্ডার সিআর দত্তের অধীনে। সম্পর্কে সেক্টর কমান্ডার সিআর দত্তের মেয়ে জামাই। তাঁর কোম্পানির দুই মুক্তিযোদ্ধা মৌলভীবাজার জেলার সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। অথচ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি স্বীকৃতি পাননি। 

মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনিকে (রনি প্রেন্টিস) মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্তি দাবিতে আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রনি প্রেন্টিসের ভাই অ্যাডভোকেট ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস। এ সময় মৌলভীবাজারের বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ এবং রনি প্রেন্টিসের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, যাচাইবাছাই কমিটিতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা রনি প্রেন্টিসকে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করে স্বাক্ষী দিয়েছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চিঠির কোন উত্তর দেননি। কেন তাঁকে তালিকাভুক্ত বা গেজেটভুক্ত করা হয়নি তার কোনো ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি।  

আরও পড়ুন : সিলেট ও হবিগঞ্জের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু বুধবার

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস বলেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি ৪ নং সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্তের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কোম্পানীর কমান্ডার ছিলেন। কিন্তু আজ মুক্তিযুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তভুক্তি করার জন্য লড়াই করতে হবে- এটা তিনি (রনি প্রেন্টিস) কখনো ভাবেননি। তাঁর ধারণা ছিল রাষ্ট্র স্বতস্ফূর্তভাবে তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করবে, মনে রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে সহযোদ্ধা রনি প্রেন্টিসের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজারের  সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার দেওয়ান আবুল খয়ের চৌধুরী, সাবেক জেলা কমান্ডার জামাল উদ্দিন, সাবেক ডেপুটি জেলা কমান্ডার এস এম মুজিব, সাবেক থানা কমান্ডার মকবুল খান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ মায়া ওয়াহেদ, রনি প্রেন্টিসের ভাই অপু প্রেন্টিস এবং ভাইয়েরে মেয়ে ডোরা প্রেন্টিস। 

আরও পড়ুন : তাহিরপুরে হারানো বিড়াল লিওকে খুঁজে পেলেন জার্মান নারী জুলিয়া

লিখিত বক্তব্যে ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এস্ওে আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কথা শুনছি। অন্যদিকে প্রকৃত অনেক মুক্তিযোদ্ধাই রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাননি। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের তথ্য উপাত্তসহ আবেদন-নিবেদন করেও তারা তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই তাদেরকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। আমার বড়ভাই রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি, যিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা জীবন বাজি রেখে তিনিও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের মত দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লষ্টি সকল বিভাগে যথানিয়মে আবেদন করা হলেও কি এক অজ্ঞাত কারণে তা গ্রহণ করা হয়নি।’  

সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও

ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস বলেন, ‘রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি ১৯৭১ সালের ১৬ ই এপ্রিল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পেঁচারতল নামক স্থানে প্রশক্ষিণ নেন। তিনি তার কোম্পানীর কমান্ডার ছিলেন। ৪ নং সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্তের অধীনে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তাঁর কোম্পানীর সদস্য ছিলেন, এমন  অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন তারা সমাজে নানা পর্যায়ে সক্রিয় ও মুক্তিযোদ্ধার প্রতিনিধিত্ব করছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তভুক্তি করার জন্য লড়াই করতে হবে- এটা তিনি কখনো ভাবেননি। তাঁর ধারণা ছিল রাষ্ট্র স্বতস্ফূর্তভাবে তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করবে, মনে রাখবে।’ 

আরও পড়ুন : মৌলভীবাজার সদর ইউপি নির্বাচন: নৌকার মাঝি হতে চান ৪৬ জন

ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস বলেন,  ‘১৯৭৪ সালে তিনি প্রবাসে চলে যান। সেই থেকে একজন প্রবাসী হয়েই জীবনযাপন করছেন। এক পর্যায়ে এসে কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য নয়, জীবনের শেষ দিকে এসে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য অনলাইনে যথাযথ  কর্তৃপক্ষরে  কাছে আবেদন করেন। কিন্তু সেই সময় একটি রিটের কারণে কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট মৌলভীবাজার সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই  কমিটি ৭ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম ‘‘ক’’ তালিকায় নির্ধারণ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে প্রেরণ করে। এই ৭ জনের মধ্যে প্রথম জনই ছিলেন  রোল্যান্ড প্রেন্টিস  রনি। কিন্তু ২০২০ সালের ২০ মে অতিরিক্ত  সংখ্যার গেজেটে  রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনির নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই ঘটনায় শুধু আমাদের পরিবারের সদস্যরাই ব্যথিত, অপমানিত বোধ করিনি, তার সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধারাও মর্মাহত হন। জীবন বাজি রেখে যিনি দেশের জন্য  যুদ্ধ করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে কেন তাকে আজ অন্যের দ্বারস্থ হতে হচ্ছ।’

আরও পড়ুন : দাখিল পরীক্ষা : কুলাউড়ায় প্রশ্নপত্র দিতে বিলম্বের অভিযোগ

ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস বলেন, ‘উল্লেখ করা যেতে পারে, অতিরিক্ত গেজেটে রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনির নাম না থাকায় ব্যথিত মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের তাগিদ থেকেই স্বতর্স্ফূতভাবে তার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রত্যয়ন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে  চিঠি দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফখরুল ইসলাম, এস.এম. মুজিব ও সদ্য সাবকে মো. জামাল উদ্দিন তাদের প্রত্যয়ন পত্রে বলেছেন রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পেঁচারথলে ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৪ জুলাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মোঃ জামাল উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের  কাছে যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক তালিকায় ১নং জনের নাম না থাকা প্রসঙ্গে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি বলেছেন রোল্যান্ড প্রেন্টিস রনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। যাচাই বাছাই কমিটিতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারাও তাঁকে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করে স্বাক্ষী দিয়েছেন। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্বার নাম বাদ পড়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন। সেই চিঠিতে রোল্যান্ড প্রিন্টিস রনি যে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা  এবং কোম্পানী কমান্ডার ছিলেন তার স্বপক্ষে যুক্তি প্রমাণ তুলে ধরেছেন। যুদ্ধে তার সাথী ছিলেন দেওয়ান আবুল খয়ের চৌধুরী, সাবেক থানা কমান্ডার মকবুল খান, সাবকে ডপেুটি কমান্ডার মো, হারুন মিয়া, ও মুক্তযিোদ্ধা কুতুবুর রহমান। কিন্তু দু:খের বিষয় সংশ্লষ্টি  র্কতৃপক্ষ  এ সকল চিঠির কোনো উত্তর দেননি। কেন তাঁকে তালিকাভূক্ত গেজেটভূক্ত করা হয়নি তার কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। ব্যাখ্যাটা পেলে অন্তত  তিনি বুঝতে পারতেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি তিনি কোন দোষে পান নি বা পাবেন না।’

ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস বলেন,  ‘একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধার জন্য নয়।  একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান মর্যাদার জায়গা থেকেই তিনি এই স্বীকৃতিটি চেয়েছেন। এক্ষেত্রে জীবন বাজি রাখা একজন মুক্তিযোদ্বার কষ্ট লাঘবে রাষ্ট্র এগিয়ে আসবে বলে আমরা আশা করব।’

আইনিউজ ভিডিও 

১৫ হাজার টাকার মধ্যে বাজারের সেরা ৫ ফোন

কোথায় কত বাড়লো বাস ভাড়া

দুবাইয়ে লটারি জিতে একরাতে কোটিপতি বাংলাদেশী যুবক | দুবাই প্রবাসী

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ