আই নিউজ ডেস্ক
১০ বছর পর আজ ঢাকায় সমাবেশ করবে জামায়াতে ইসলামি

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়া দল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামি। প্রায় ১০ বছর পর সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে দলটি। আজ শনিবার (১০ জুন) দুপুর ২টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সমাবেশ করবে জামায়াতে ইসলামি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুমতি দেওয়া হয়। যদিও বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ।
দেশের রাজনীতিতে বিগত এক দশক ধরে জামায়াতে ইসলামির বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। এমনকি ধর্মভিত্তিক এই রাজনৈতিক দলটিকে নিমিষের মধ্যেই নিষিদ্ধ করার কথাও জানিয়েছিলেন সরকারের নেতৃবর্গ। কিন্তু বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের যখন মাত্র ছয় মাসেরও কম সময় বাকি তখন সরব হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামী এমন সময় সমাবেশের ডাক দিয়েছে যখন বাংলাদেশের রাজনীতি মার্কিন ভিসা নীতির কারণে বেশ ঘটনাবহুল হয়ে উঠেছে।
গত ২৮ মে ঢাকায় মিছিল সমাবেশে সহযোগিতা চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করে দলটি। পরদিন ২৯ মে জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল সশরীরে আবেদনের কপি নিয়ে ডিএমপি কার্যালয়ে যেতেই আটক হন। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য না পাওয়ায় বিক্ষোভ কর্মসূচির আবেদন জমা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এরপর অনুমতি পেতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দেয় জামায়াতে ইসলামী। তারপরও অনুমতি দেয়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সে সময় ডিএমপির কর্মকর্তারা বলেছিলেন, অনুমতি ছাড়া মিছিল সমাবেশের সুযোগ নেই। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে আইনানুগ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি রয়েছে।
জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে ও অফিস আদালত খোলা থাকায় ৫ জুন তাদের এই বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করার জন্য নিবন্ধন জরুরি নয়। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ, মিছিল করার জন্য নিবন্ধন কিংবা অনুমতির প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা পুলিশের নৈতিক দায়িত্ব।
যদিও পরবর্তীতে কৌশল বদলে ৫ জুনের কর্মসূচি স্থগিত করে ১০ জুন ঘোষণা করে জামায়াতে ইসলামী।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের মজলিসে শুরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৫ জুন ছিল সোমবার। সেদিন কর্মদিবস অজুহাতে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। কৌশলগত দিক বিবেচনায় আমরা ১০ জুন
সমাবেশের ঘোষণা দিই। আমরাও দেখতে চেয়েছি পুলিশ অনুমতি দেয় কিনা।
তিনি বলেন, আমরা বার বার অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু আমাদের আবেদন বার বারই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ১০ বছর পর এবারই প্রথম অনুমতি পেলাম। আমরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সমাবেশ করতে চাই।
দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বদ্ধ নয়, উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশে আগ্রহী ছিল জামায়াতে ইসলামী।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপস) বিপ্লব কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে লিখিত নয়, মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে আপনারা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সমাবেশ করতে পারেন।
কোনো ধরনের শর্ত দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু লিখিতভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি তাই শর্তের কোনো প্রশ্নই উঠে না। লিখিত অনুমতি হলে শর্তের বিষয়টি থাকত। তবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মতিঝিলে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। এরপর থেকে নানা সময়ে নানা ইস্যুতে ঝটিকা মিছিলে সীমাবদ্ধ ছিল জামায়াতের কর্মসূচি।
দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে স্বাধীনভাবে চলাফেরা, মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ মিছিল-সভা সমাবেশ করার অধিকার রাখা হয়েছে। সংবিধান স্বীকৃত এই অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। সংবিধান হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন। যেহেতু সংবিধানে মিটিং-মিছিলের কথা বলা হয়েছে, তাই মিটিং-মিছিলে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। অথচ গত ১৫ বছর যাবত রাজপথে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি পুলিশের কাছে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা ও অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হলে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য পোষণ করে এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করে যাচ্ছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেরাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর মুক্তি না দিয়ে জামায়াত নেতাদের জেলখানায় আটকে রাখা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি, অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার পরিপন্থি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে আটক নেতাদের মুক্তির পরিবর্তে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা ও বন্দি থাকাবস্থায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- বেইলি রোডে আগুন : ৩ জন আটক
- এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা: সিলেটে প্রধানমন্ত্রী
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক