আপডেট: ১৪:৪০, ২৯ আগস্ট ২০১৯
বেনাপোল কাস্টম হাউজে রাজস্ব হ্রাস
মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল, যশোর : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাস্টম হাউজ বেনাপোলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেশি শুল্কের পণ্য আমদানি হ্রাস পেয়েছে। তবে বেড়েছে কম শুল্কের পণ্য আমদানি। ফলে বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরে চার হাজার ৩৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ১৭ কোটি টাকা বেশি। এতে আহরণ প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ আহরণ অনেক কম।
বেনাপোল কাস্টম হাউজ কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী রাজস্ব হ্রাসের কারণ উল্লেখ করে স¤প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি কম হলেও চেসিস আমদানি স্বাভাবিক ছিল। শেষ তিন মাসে চেসিস আমদানি হয় ৫৫ দশমিক সাত শতাংশ। তবে অর্থবছরের শেষ সাত দিনে ১৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার ও শেষ দিন ৫৭ কোটি আট লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্রোকেন স্টোন ও বোল্ডার ছাড়া অন্যান্য পণ্য আমদানি হয় ১৭ লাখ ১৮ হাজার ১৯৭ দশমিক ৭৪ মেট্রিক টন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ দশমিক শূন্য দুই মেট্রিক টন। আমদানি কমেছে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৩৯৭ দশমিক ৭২ মেট্রিক টন। আমদানি হ্রাস পেয়েছে ১৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা অব্যাহত থাকলে রাজস্ব আহরণ হতো চার হাজার ৫৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আর প্রবৃদ্ধি হতো ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
স্টোন ও বোল্ডারের সঙ্গে অন্যান্য পণ্যের আমদানি স্বাভাবিক থাকলে বিদায়ী অর্থবছর রাজস্ব আদায় হতো চার হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর আগের অর্থবছরের ধারা অব্যাহত থাকলে আদায় হতো পাঁচ হাজার ৫২৩ কোটি আট লাখ টাকা।
প্রতিবেদনে পণ্য আমদানি ও রাজস্ব হ্রাসের কারণ তুলে ধরে বলা হয়, কম শুল্কায়নযোগ্য পণ্যের মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছর ব্রোকেন স্টোন ও বোল্ডার আমদানি হয় এক লাখ ১১ হাজার ৪৭০ দশমিক শূন্য আট মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমদানি হয় পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬২ দশমিক ৬২ মেট্রিক টন। বিদায়ী বছর প্রায় চার লাখ ৪৬ হাজার ১৯২ দশমিক ৫৪ মেট্রিক টন বেশি আমদানি হয়। আমদানি বৃদ্ধি পায় ৪০০ দশমিক ২৮ শতাংশ। বিদায়ী বছর কম শুল্কের তুলা আট দশমিক ২৯ শতাংশ ও মসুর ডাল ৩৫৯ দশমিক ৯১ শতাংশ আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শূন্য শতাংশের পণ্যের আমদানি ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ ও পাঁচ শতাংশ হারের পণ্য আমদানি বেড়েছে ১৯২ শতাংশ।
আরও বলা হয়, যেসব পণ্য থেকে বেশি রাজস্ব আদায় হয়, সেসব পণ্যের আমদানি হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে পাথর, সিমেন্ট, এসবেন্টস ও সমজাতীয় পণ্য আমদানি ৭৬৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন, প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য ৪২৩ দশমিক ৭৮ মেট্রিক টন ও ভোজ্যজাতীয় পণ্য ১০৮ দশমিক ১৪ মেট্রিক টন আমদানি হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া সিরামিক তৈরি পণ্য তিন হাজার ৬৫২ দশমিক ৭৬ মেট্রিক টন, ইলেকট্রিক্যাল মেশিনারি ব্যাটারি ও পার্টস দুই হাজার ৭০৭ দশমিক ৯১ মেট্রিক টন, ইলেকট্রিক্যাল ইকুইপমেন্ট ও পার্টস এক হাজার ৫৬৬ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন, মেশিনারি ও মেকানিক্যাল অ্যাপলায়েন্স ও পার্টস আট হাজার ১২৩ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন, লোহা ও স্টিলের তৈরি পণ্য ১০ হাজার ৯২৫ দশমিক ১৬ মেট্রিক টন এবং কপার ও কপারের তৈরি করা পণ্য ৪৩ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন আমদানি হ্রাস পেয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চাল ছাড়া ২৫ শতাংশ শুল্কের পণ্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চাল ছাড়া ২৫ শতাংশ শুল্কের পণ্য আমদানি অব্যাহত থাকলে ২৮২ কোটি ১৬ লাখ টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হতো। বিদায়ী অর্থবছর বাণিজ্যিক পণ্যের আমদানি হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাবার টায়ার ৫২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, ফুটওয়্যার ও সমজাতীয় পণ্য ১২ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ, পারফিউম, কসমেটিকস ও টয়লেট্রিজ ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, শাড়ি, থ্রিপিস, লেহেঙ্গা ও ব্রেসিয়ার ৪৩ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২১ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং চেসিস দুই দশমিক ৯৩ শতাংশ। এসব বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি হলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় অন্তত ১০৮ কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হতো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদায়ী অর্থবছরে ব্রোকেন স্টোন ও বোল্ডার, কোয়ার্টাজ ও ক্লে, স্পঞ্জ আয়রন, ফ্লাইঅ্যাস, অ্যালুমিনিয়াম, ইনগট, ফেরো সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ, ভেজিটেবল ফ্যাট ও ওয়েলজাত ওয়েল কেক, বিøচিং পাউডার, সালফোনিক এসিড, ল্যাবসা, কয়লা, কোক, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও অন্যান্য গ্যাস, ট্যাঙ্ক, পাউডার ইত্যাদি পণ্যের আমদানি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কম মূল্য ও শুল্কের এসব পণ্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছয় লাখ ১৪ হাজার ৭৪৪ দশমিক ৭৯ মেট্রিক টন আমদানি হলেও বিদায়ী অর্থবছর আমদানি হয় ১৩ লাখ ছয় হাজার ৭৫৮ দশমিক ৬৪ মেট্রিক টন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় আমদানিকারকরা অনাগ্রহের কারণে ফেব্রিক্স, মোটরপার্টস, মার্বেল ¯ø্যাব ইত্যাদি পণ্য এ কাস্টমস দিয়ে খালাস না করে অন্যান্য বন্দরে খালাস করেছে। এছাড়া বিজিবির সময়ক্ষেপণ, বিএসটিআই, বিসিএসআইআরের অফিস না থাকা, ভারতীয় মুদ্রানীতির সংস্কার ও জিএসটি আরোপ, ভারতীয় অংশে ছয় দিন বন্ধ, নির্বাচন ও ঈদের কারণে আমদানি হ্রাস ও স্থলবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি না পাওয়ায় রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে।
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের