আই নিউজ ডেস্ক
গাজার নৃশংসতা ৭১ এর স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়: প্রধানমন্ত্রী
![জেদ্দায় নারী সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি- সংগৃহীত জেদ্দায় নারী সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি- সংগৃহীত](https://www.eyenews.news/media/imgAll/2023May/shekh-hasina-eyenews-2311071118.jpg)
জেদ্দায় নারী সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি- সংগৃহীত
গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা জানাচ্ছি। গাজার এ নৃশংসতা, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভয়াবহ অমানবিক নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশের দুই লাখ নারীর কথা মনে করিয়ে দেয়। গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও অবিলম্বে এই ভয়াবহ যুদ্ধ, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সৌদি আরবের জেদ্দায় ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে কথাগুলো বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফিলিস্তিনে চলমান এ নৃশংস ঘটনাগুলো আমাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা এবং নারী ও শিশুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এটি মিয়ানমারের লাখো নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর নির্যাতনের দৃশ্যকেই ফুটিয়ে তোলে। নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ওআইসি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এই বহুল প্রতীক্ষিত ইস্যুগুলোতে সংলাপ প্রত্যাসিত। বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে এর সম্ভাবনা উপলব্ধি করে খুব তাড়াতাড়ি ওআইসি’র নারী উন্নয়ন সংস্থায় (ডব্লিউডিও) যোগ দেয়। ইসলামকে আরো ভালোভাবে বোঝার মাধ্যমে আজকের চাহিদাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এ ম্যান্ডেটকে প্রসারিত করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লামের আহ্বানে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ছিলেন একজন নারী- বিবি খাদিজা। আমরা নারীমুক্তির জন্য সৌদি আরবের যুগান্তকারী উদ্যোগগুলোকে আগ্রহের সঙ্গেই লক্ষ্য করি। আমি সৌদি বাদশাহ ও যুবরাজের এই রূপান্তরমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করি।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশে নারীর অধিকার ও লিঙ্গ সমতা রক্ষায় তাদের গর্বিত ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশের রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মতো পথপ্রদর্শক আছেন, যিনি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত তার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বইতে নারী নেতৃত্বাধীন বিশ্বের কল্পনা করেছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর। অর্ধেক তা করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমমর্যাদা নিশ্চিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে নারীদের জন্য ১৫টি সংরক্ষিত আসনের বিধান করেছিলেন। আমি নারী ক্ষমতায়নের কাজ অব্যহত রেখেছি এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০টিতে উন্নীত করেছি। আমাদের জাতীয় সংসদে এখন ৭৩ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন।
তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বৈশ্বিক সূচকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান। আমাদের একটি অনন্য উদাহরণ আছে- যেখানে জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা ও সরকারি দলের উপনেতা সবাই নারী। এছাড়া আমাদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সর্বস্তরে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। নারীরা সবসময়ই আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক সংস্কার ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রথম সারিতে থেকেছেন। তারা নিজেরাই যেন কাজের মাধ্যমে তাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারেন, আমি তাদের প্রতি সেই আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের উন্নীত করার জন্য সমস্ত বাধা দূর করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্য সংস্থায় আমাদের নারীদের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হতে দেখে আমি গর্বিত বোধ করি। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আমাদের মেয়েরা পাবলিক পরীক্ষা, প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ ও জাতীয় পর্যায়ের খেলায় অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে নারীদের জন্য সুবিধাসহ সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক স্টাডি সেন্টার নির্মাণ করছে।
সরকার প্রধান আরো বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিও নারীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের প্রমাণ রয়েছে। আমাদের আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির প্রায় ৪৬ শতাংশ নারী কর্মী। নারী উদ্যোক্তারা আমাদের কুটির, ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্পে বড় ধরনের অবদান রাখছেন। আইটি ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স এবং স্টার্ট-আপে নারীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার অর্থ, বাজার, ধারণা ও প্রশিক্ষণে নারীদের প্রবেশাধিকার বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এখন আইন অনুসারে সব জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের নাম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। আমরা নারী শান্তি ও নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। সরকার বিনামূল্যের আবাসন ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্বামী-স্ত্রীকে যৌথ মালিকানা দিচ্ছে, যেন বিচ্ছেদ হলে সেটি স্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমাদের নারী শান্তিরক্ষীরা গর্বের সঙ্গে জাতিসংঘের মিশনে দায়িত্ব পালন করছে।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের