Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৩ মে ২০২৫,   বৈশাখ ৩০ ১৪৩২

হেলাল আহমেদ

প্রকাশিত: ১১:৪১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আপডেট: ১১:৪২, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

চোখ রাঙাচ্ছে নিপাহ ভাইরাস : আক্রান্ত দশ, ৭ জনেরই মৃত্যু

কাঁচা খেজুরের রস পান করা বন্ধ করলে এর থেকে রেহাই সম্ভব মত বিশেষজ্ঞদের।

কাঁচা খেজুরের রস পান করা বন্ধ করলে এর থেকে রেহাই সম্ভব মত বিশেষজ্ঞদের।

দেশে এই শীতে বেড়েছে নিপাহ ভাইরাসের প্রকোপ। এ বছর বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। যাদের মধ্যে সাত জনই মৃত্যুবরণ করেছেন। গত আট বছরের মধ্যে দেশে এই প্রথম এক মৌসুমে এতোজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। তাই এই ভাইরাস রোধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। 

জানা গেছে, দেশের সব জেলা এখন নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন।

তিনি বলেন, আমরা নিপাহ ভাইরাসের সার্ভিলেন্সে জোর দিয়েছি। যখন যেখানেই নতুন কেস হচ্ছে, আমরা খবরটা পেয়ে যাচ্ছি। ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত ১০ জন শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে ৭ জনই মারা গেছেন।

যদি শুধু খেজুরের রস খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারি তাহলেই ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারবো বলেও জানান আইইডিসিআর এর এ পরিচালক।

ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কেউ যদি বেঁচেও যান তার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। আমরা যদি শুধু খেজুরের রস খাওয়াটা বন্ধ করে দিতে পারি তাহলেই ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারি।

সতর্কতা অবলম্বন করে রস খাওয়া যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই বলেন, আমরা সাবধানতা অবলম্বন করে রস সংগ্রহ করছি। এটা আসলে ভুল। আপনি যতই জাল দিয়ে ঢেকে রাখেন, এতে আক্রান্তের সম্ভাবনা থেকে যায়। কারণ শুধু রসে বাদুড় মুখ দিলেই নিপাহ ভাইরাস হয় না, বাদুড়ের ইউরিন থেকেও নিপাহ ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে থাকে। 

সংক্ষেপে নিপা ভাইরাস পরিচিতি
নিপা ভাইরাস সংক্রমণ একধরনের ভাইরাসঘটিত সংক্রমণ, যা নিপা ভাইরাসের মাধ্যমে ঘটে থাকে। এই সংক্রমণের কোন লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে বা জ্বর, কাশি, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বিভ্রান্তি ইত্যাদি হতে পারে। এক বা দুই দিনের মধ্যে রোগী অচেতন হয়ে পড়তে পারেন।

সহায়ক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগের উপশম করা হয়ে থাকে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে এই রোগের কোন টিকা বা বিশেষ চিকিৎসা নেই। বাদুড় ও রুগ্ন শূকর থেকে দূরে থেকে এবং অপরিশুদ্ধ খেজুর রস না পান করে এই রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

২০১৩ সাল পর্যন্ত নিপা ভাইরাসের সংক্রমণে ৫৮২ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ৫৪% মৃত্যুবরণ করেছেন। ২০১৮ সালে ভারতের কেরালা রাজ্যে এই রোগের আক্রমণে কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে।

যেভাবে ছড়ায় নিপাহ ভাইরাস 
নিপাহ ভাইরাস একটি জুনোটিক ভাইরাস যা প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রামিত হয়ে থাকে। মালয়েশিয়ায় এবং সিঙ্গাপুরের প্রারম্ভিক প্রাদুর্ভাবের সময়, বেশিরভাগ মানুষের সংক্রমণের কারণ ছিল এই ভাইরাস দ্বারা অসুস্থ শূকর বা তাদের দূষিত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে সরাসরি যোগাযোগ। সংক্রমণ শূকরের গলা বা নিঃশ্বাসের স্রাবের সাথে নিঃসৃত দূষিত ভাইরাস কণার মাধ্যমে ঘটেছে বলে মনে করা হয়।

বাংলাদেশ এবং ভারতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব সংক্রমিত ফলভোজী বাদুড়ের প্রস্রাব অথবা লালা দ্বারা দূষিত ফল বা ফলের পণ্য (যেমন, কাঁচা খেজুর রস) খাওয়ার ফলে ঘটে। পরবর্তী প্রাদুর্ভাবের সময় নিপাহ ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের শরীর থেকে সরাসরি সুস্থ মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্ৰমণ হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।

২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে প্রায় অর্ধেক সংক্রমণ রোগীদের সেবাযত্নকারীদের মাধ্যমেই এক মানুষ থেকে অন্য মানুষে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।

আই নিউজ/এইচএ 

আই নিউজ ভিডিও গ্যালারী 

নীলাদ্রি লেক আমাদের এক টুকরো কাশ্মীর | পাখির চোখে নীলাদ্রি

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়