Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ১১ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৭ ১৪৩২

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১
আপডেট: ১৭:৩৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

শ্রীমঙ্গলে হোটেল রুমে টিস্যু বক্সের ভেতর গোপন ক্যামেরা

তামিম রিসোর্টের একটি রুম

তামিম রিসোর্টের একটি রুম

হোটেলে কিংবা ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরা থাকার কথা আমাদের অজানা নয়। এগুলোর সাহায্যে আপত্তিকর ভিডিও বা ছবি তোলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হয়ে থাকে। এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজারে। শ্রীমঙ্গলে হোটেল রুমে টিস্যু বক্সের ভেতর ছিল গোপন ক্যামেরা।

উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কের অবস্থিত তামিম রিসোর্ট। শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসে রাত্রীযাপনের জন্য এক দম্পতি উঠেছিলেন ওই রিসোর্টে। কিন্তু রাত কাটাতে গিয়ে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে হলো তাদের।

জানা গেছে, তামিম রিসোর্টের দুই কর্মচারী রেজোয়ান (২৩) এবং খালেদ মিয়া (২৭) টিস্যুর বক্সের মধ্যে লাগিয়ে রেখেছিল গোপন ক্যামেরা। যা দিয়ে তারা রেকর্ড করেছিল স্বামী -স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি। পরবর্তীতে ওই দম্পতিকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তাদের বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠাতে শুরু করে সেই সকল ছবি। তবে এরই মধ্যে দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত দুই কর্মচারী

কি ঘটেছিল তামিম রিসোর্টে?

২০২০ সালের ২৯ জুলাই কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা এক দম্পতি উঠেন তামিম রিসোর্টে। সেখানে তাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ধারণ করে ওই দুই কর্মচারী। যা তারা ঘূর্ণাক্ষরেও টের পাননি। ঘটনার কিছুদিন পর একটি ইমো নম্বর থেকে কল করে রিয়াজউদ্দিনকে জানায়, তাদের মেলামেশার ছবি ও ভিডিও আছে এবং এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে।

রিয়াজউদ্দিন যোগাযোগ না করায় ২১ অক্টোবর একটি ফেক আইডি থেকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে রিয়াজউদ্দিনের কাছে তাদের গোপন মেলামেশার ছবি পাঠায় এবং হুমকি দিতে থাকে। প্রতারকরা জানায় ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা তাদের দিতে হবে। অন্যথায় তারা সেই ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিবে।

হুমকির পরও টাকা না পেয়ে ওই দম্পতির বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের কাছে ছবি ও ভিডিও পাঠানো শুরু করে। ফলে বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে যান ওই দম্পতি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তামিম রিসোর্টের দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করে।

তামিম রিসোর্ট

কি বলছে পুলিশ?

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস ছালেক এ বিষয়ে আইনিউজকে বলেন, ভুক্তভোগী দম্পতির অভিযোগ পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রিসোর্টের দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে।

‘গোপন ক্যামেরায় ছবি-ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করাই ছিল তাদের লক্ষ্য’-

ওসি আব্দুস ছালেক বলেন, গ্রেফতারকৃত দুই কর্মচারী তাদের অপরাধমূলক কাজের কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ল্যাপটপ ও মোবাইল থেকে ছবি-ভিডিও পাওয়া গেছে। তারা স্বীকার করেছে এরকম আরও তিন-চারটি ঘটনা তারা ঘটিয়েছে।   

ওসি আরও বলেন, পুরো বিষয় পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনায় রিসোর্টের অন্য কেউ যুক্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারো সম্পৃক্ততা পেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

পর্নোগ্রাফী আইনে যা সাজা হয়

দম্পতির ছবি-ভিডিও ধারণ করার ঘটনায় তামিম রিসোর্টের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা করা হয়েছে।
পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮ (১) ধারায় কারো আপত্তিকর অবস্থায় ছবি-ভিডিও ধারণ করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ