আই নিউজ ডেস্ক
মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনী ‘অমূল্য সম্পদ’ : প্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের লেখা দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী। ছবি- সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনীকে জাতির জন্য একটি ‘অমূল্য সম্পদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে জনগণ দেশের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (আবদুল হামিদ) রাষ্ট্রপতি হবেন না (ভবিষ্যতে)। কারণ তিনি সংবিধান অনুযায়ী পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি আমাদেরকে একটি অমূল্য সম্পদ দিয়েছেন (তার আত্মজীবনী ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ এর মাধ্যমে)। আমরা তার জীবনের সেই অংশ থেকে অনেক কিছু জানতে পারি, যা তিনি আত্মজীবনীতে তুলে ধরেছেন।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের লেখা দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
একটি বই বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ শিরোনামের আত্মজীবনী এবং আরেকটি বইয়ের দুটি অংশের সংকলন ‘স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা’ শিরোনামে রাষ্ট্রপতির ভাষণ।
আলোচনা পর্ব শেষে আগত বিশিষ্ট অতিথি ও সংসদ সদস্যদের সম্মানে রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজ ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে তার বাকি জীবন, বিশেষ করে যখন তিনি অবসরে যাবেন তখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে যে সময় অতিবাহিত করেছিলেন তা লিখে রাখার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, তার সহধর্মিনী রাশিদা খানম, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রবীণ সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তি, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি ও তার পত্নী তাকে স্বাগত জানান।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আর রাষ্ট্রপতি থাকবেন না, কিন্তু তিনি অমূল্য সম্পদটা আমাদের দিয়ে গেলেন তার স্মৃতিকথার ভেতর দিয়ে। তার জীবনের যে অংশটা তিনি উল্লেখ করেছেন এটা আমি মনে করি, একজন রাজনীতিবিদের জীবন থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক কিছু আমরা জানতে পারবো। তাই আমার একটা অনুরোধ থাকবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে, তার পরবর্তী জীবনটা নিয়েও যেন তিনি একটু লিখে যান। আর বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি হিসেব তার অভিজ্ঞতাটা। কারণ তার আমলে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে হয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তার যে দেশপ্রেম এবং দায়িত্ববোধ সেটারই তিনি প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত সার্থক তার জীবন। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে এবং দেশের গণমানুষের কল্যাণে অনেক অবদান রেখে যাচ্ছেন। কাজেই তিনি একটা অমূল্য সম্পদ আমাদের দিয়ে যাচ্ছেন তার এই লেখনির মধ্যথেকেই সেটা উঠে এসেছে এবং যখন অবসরে যাবেন তখন পরবর্তী অংশটাও লিখবেন সেটাই সবার পক্ষ থেকে আমাদের দাবি থাকলো মহামান্যের কাছে। তিনি রাষ্ট্রপতির পাশে থাকার জন্য এবং প্রেরণা দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সংগ্রামের পথ বেয়েই আমাদের স্বাধীনতা। আর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই তার ভূমিকা রয়েছে। সেই পাকিস্তান আমল থেকেই শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের স্মৃতি নিয়েই তিনি বইটি লিখেছেন। তার জীবনের অনেক কথাই বইটিতে আছে (আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি)।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার চমৎকার হাস্যরসে ভরা জীবনি গ্রন্থটি পড়লে অনেক মজার মজার তথ্য পাওয়া যাবে। তার স্কুল জীবনের স্মৃতি সেই হাওড় অঞ্চলে বসবাস। আসলে বাংলাদেশের কাদামাটি মেখেই তিনি বড় হয়েছেন। সেখানকার শ্যামল সুন্দর পরিবেশে তিনি বেড়ে উঠেছেন। হাওড়ের কঠিন জীবনের সঙ্গে লড়াই করেই তিনি বড় হয়েছেন। তিনি একজন স্বার্থক পিতা, সার্থক স্বামী। তার ব্যক্তিগত জীবন যেমন সার্থকতায় ভরপুর তেমনি বাংলাদেশের ইতিহাসে অল্প বয়সে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৭০ সালে এবং এরপর থেকে সাত সাতবার তিনি সংসদ সদস্য। ঐ হাওড় অঞ্চলে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে কেউ কখনো পরাজিত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচনের অনেক চেহারা আমরা দেখেছি। ভোট ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি- অনেক কিছুই আমরা দেখেছি। কিন্তু এই জায়গাটা কেউ কোনদিন কেড়ে নিতে পারেনি। কারণ তার সঙ্গে ছিল মাটি ও মানুষের যোগাযোগ। এই যে মানুষের আস্থা অর্জন করা, বিশ্বাস অর্জন করা, মানুষের কাছে যাওয়া এবং মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া এটাই তার সবচেয়ে বড় গুণ। তিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছেন কিন্তু একজন সাদাসিদে স্বচ্ছ বাঙালির মতই জীবনযাপন করেছেন।
‘একটা সাদাসিদে জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা, এটা তার ছিল। যেটাকে একটি বড় গুণ বলেই আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে তিনি নিজের স্মৃতিকথা যে লিখে গেছেন এবং যে পর্যন্ত লিখেছেন সেক্ষেত্রে আমি বলবো— এর পরবর্তীটাও লেখা দরকার। কারণ আমরা যারা রাজনীতি করি অনেকেই স্মৃতিকথা লেখেন না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের যে ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস, যে সংগ্রাম বার বার এসেছে। সেই পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, এরপর ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে যে হত্যা, ষড়যন্ত্র এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের যে রাজনীতি, তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম— এই সংগ্রামগুলোর সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী রাষ্টপতি মো. আবদুল হামিদ সম্পর্কে আরো বলেন, গত দুই টার্ম তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যখন আমরা বিরোধী দলে তিনি সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সংসদকে অত্যন্ত প্রাণবন্ত রাখতেন। কারণ তার একটা গুণ আছে বক্তৃতার মধ্য দিয়েও তিনি মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যেতে পারেন।
আই নিউজ/এইচএ
আই নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি দেখতে Watch on YouTube অপশনে ক্লিক করুন
শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত শত মানুষের মৃত্যু
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের