Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ১১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ২৮ ১৪৩২

মো. ফরহাদ হোসেন, রাজনগর (মৌলভীবাজার)

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ৭ মার্চ ২০২৩

আগুনে পুড়ে মারা গেছেন মা, কান্না থামছে না নবজাতকের 

দাদীর কোলে কান্না করছে ৪ মাস বয়সী শাফি। ছবি- আই নিউজ

দাদীর কোলে কান্না করছে ৪ মাস বয়সী শাফি। ছবি- আই নিউজ

কখনও দাদী, কখনও পাশের বাড়ির চাচী আবার কখনও অন্য স্বজনের কোলে ঠাঁই হচ্ছে চার মাসের শিশু শাফি আহমদের। তবে কারও কোলে গিয়েই অবুঝ শিশুটির কান্না থামছে না। হয়তো তার অবুঝ দুটি চোখ খুঁজে ফিরছে স্নেহময়ী মায়ের মুখ। কিন্তু পাচ্ছে না কোথাও। পাবেও না আর কোনোদিন। তার মা যে আগুনে জ্বলসে মরে গেছে এ কথাও কেউ তাকে বুঝাতে পারবে না এখন। 

অবুঝ শিশু শাফি আহমদের মা নূপুর বেগম (১৯) সোমবার সকালে শিশুটির জন্য সুজি রান্না করতে গেলে আগুনে জ্বলসে মারা গেছে বলে নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানিয়েছে। তবে মেয়ের মায়ের দাবি, বিভিন্ন সময় তাকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। 

রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের নয়াটিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে জুতার ফ্যাক্টরীতে কাজ করার সময় নয়াটিলা গ্রামের জায়েদ মিয়ার সাথে পরিচয় থেকে প্রেম ও পরে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিয়ে হয় পাবনার ইশ্বরদী থানার নওদা বাড়ী এলাকার রাশেদা বেগমের মেয়ে নূপুর বেগমের। বিয়ের কিছুদিন পর গাজীপুর থেকে স্বামীসহ তিনি শ্বশুর বাড়িতে চলে আসেন। স্বামী এখানে বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। 

সোমবার (০৬ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে বাচ্চার জন্য চুলায় সুজি রান্না করছিলেন। তার স্বামী রান্নাঘরে গিয়ে দেখতে পান নূপুর বেগম জ্ঞান হারিয়ে চুলার উপর পরে আছেন। তার চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে নিহতের মা রাশেদা বেগমের দাবি, রোববার বিকেলে মেয়ে ফোনে তাকে বলেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেয়েকে ঠিকমতো খাবার দিচ্ছে না। আশেপাশের মহিলাদের সাথে তার শ্বাশুরি বলেছেন তাকে শিগগিরই ডিভোর্স দেয়া হবে। তাই তাকে এসে নিয়ে যাওয়ার জন্য নূপুর বায়না ধরে। শুক্রবার এসে নিয়ে যাবেন বলে রাশেদা বেগম মেয়েকে জানান।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মা হারা চার মাসের শিশু শাফিকে কান্না থামাতে কোলে নিয়ে ঘুরছেন দাদী রাশেদা বেগম। কিছুতেই তার কান্না থামছে না। আশেপাশের বাড়ি থেকে মহিলারা আসছেন শিশুটিকে স্নেহ দিতে। কেউ কেউ বুকের দুধ পান করিয়ে ও গুড়োদুধ দিয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। 

শিশুটির দাদী আনছারুন বেগম বলেন, সকালে ছেলের চিৎকার শুনে বাইরে থেকে ঘরে গিয়ে দেখি নূপুরের চোখ ও হাতের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। আমার ছেলেরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে খবর পাই সে মারা গেছে। সে খুব শান্তশিষ্ট ছিল। পরিবারের সবাই তাকে পছন্দ করতো। 

রাজনগর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তদন্ত করে জেনেছি তাদের পারিবারিক কোনো ঝামেলা ছিল না। সবার সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। সুরতহালেও হাত ও চোখ জ্বলসে যাওয়া ছাড়া আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। সে হাইপ্রেসারের রোগী ছিল। ছেলের জন্য সুজি রান্না করার সময় চুলার আগুনে জ্বলসে যায় বলে জেনেছি।

আই নিউজ/এইচএ 


Eye News Youtube ভিডিও  : মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল | ICU | CCU | Dialysis | Emergency Call

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়