Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৮ অক্টোবর ২০২৫,   কার্তিক ১২ ১৪৩২

প্রকাশিত: ১২:২০, ৫ অক্টোবর ২০১৯
আপডেট: ১২:২০, ৫ অক্টোবর ২০১৯

যাত্রা গানের কথা

সৈয়দ মুহিবুল আমিন

শৈশব কৈশোরের দিনগুলোতে চা-বাগানের জীবনে মহা আনন্দের সময় ছিল দুর্গা-পূজার দিনগুলো। বিদ্যুতের সাথে তখনও আমাদের পরিচয় হয়নি। জন্ম থেকে রাতের অন্ধকারকে সাথী করে জীবনের শুরু। তাই পূজা উপলক্ষে হ্যাজাক বাতি জ্বালানো ঝলমলে আলোকিত রাতগুলো আমাদের কাছে এক স্বপ্নের সময় মনে হতো।

যাত্রাপালা মঞ্চায়নের জন্য চারপাশ খোলা পাকা মঞ্চ ছিল দুর্গা ঘরের সামনেই। চা-শ্রমিকরা বলতো, 'নাচঘর'। সেই নাচঘরের খোলা মঞ্চে পূজার সময় দু'রাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা যাত্রা দল, যাত্রাপালা মঞ্চায়ন করতো। মঞ্চের চারপাশে বসে বাগানের সব লোক এবং আরো অনেক দর্শক রাতভর উপভোগ করতেন নাচ-গান সহযোগে ঐতিহাসিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক কাহিনী নির্ভর যাত্রা পালা।

পূজার সময়ের এ যাত্রা গানই ছিল চা-বাগানের লোকদের জীবনে বছরের একমাত্র বিনোদন ব্যবস্থা।

কৈশোর উত্তীর্ণ বয়সে দেখেছি, মাঝে মধ্যে গ্রামের হাট-বাজারে কাঠের কয়েকখানা চৌকি বসিয়ে মঞ্চ তৈরি করে যাত্রা-পালা মঞ্চস্থ হতে। সকল শ্রেণির দর্শকের একসাথে বসে উপভোগ করার এমন এক সাংস্কৃতিক মাধ্যম আজ খোঁজে পাওয়া কঠিন। এক সময়, জমিদার আর প্রজারা নাকি একসাথে বসে উপভোগ করেছেন যাত্রাগান। বাঙালি সংস্কৃতির এ মাধ্যমটি আজ অপসংস্কৃতির চাপে হারিয়ে যেতে বসেছে। শারদোৎসব এলেও এখন আর যাত্রা দলের নাম-ধাম, হাঁক-ডাক শোনা যায় না।

পূজা শুরু হয়েছে। বিদ্যুতের ঝলমলে আলোয় পূজার চাকচিক্য আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কিন্তু শ্রীমঙ্গলের চা-বাগানগুলোতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী "জয়দুর্গা অপেরা" বা "ভোলানাথ অপেরা" আসছে বলে শোনা যাচ্ছে না।

কালের যাত্রায়, যাত্রা গান কি আমাদের সংস্কৃতি থেকে একেবারেই হারিয়ে যাচ্ছে!

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়