মো. ফরহাদ হোসেন
‘মরার আগে কি নিজের ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবো না?’
লাইলি বেগম
জীবনের ৫০ বছর ধরে অন্যের জমিতে ঘর করে থাকছেন সত্তরোর্ধ্ব লাইলি বেগম। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিজের একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়ার স্বপ্ন তার। সেই স্বপ্ন কখনো বাস্তবে রূপ নিবে কিনা অনিশ্চিত তিনি। তবে সরকারি সহায়তায় ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার খবরে শেষ আশা দেখছেন রাজনগর সদর ইউনিয়নের উত্তর ঘড়গাঁও গ্রামের লাইলি বেগম।
প্রায় ৫৫ বছর আগে প্রথম যখন তার বিয়ে হয়েছিল তখন বাবার নামে ভিটা ছিল। ঘর ছিল। আবার দ্বিতীয় বিয়ে হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। স্বামী মারা গেলে আর সেখানে আর ঠাঁই হয়নি হতভাগিনী লাইলির। বাধ্য হয়ে চলে আসেন ভাইদের সংসারে। এদিকে ঋণে জর্জরিত হয়ে দিনমজুর ভাইয়েরাও বাবার ভিটা বিক্রি করে ফেলেন। তারাও থাকেন অন্যের জমিতে ঘর করে। ফলে এখন তিনি আছেন মেয়ের আশ্রয়ে। অসহায় লাইলি বেগমের বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর ঘরগাঁও গ্রামে।
আরও পড়ুন- রাজনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু
লাইলি বেগম জানান, প্রথমে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামে বিয়ে হয়েছিল। এ ঘরে এক ছেলের জন্ম হয়েছিল। ওই স্বামীর ঘরে বেশি দিন থাকতে পারেন নি। চলে আসেন বাবার বাড়ি। পরে আবার বিয়ে হয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। সে ঘরে এক মেয়ের জন্ম দেন লাইলি বেগম। যখন তার প্রথম বিয়ে হয় তখন তাদের পিতার নিজের জমি ছিল। ঘরও ছিল। কিন্তু ভাইয়েরা ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ায় তা বিক্রি করে দিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়েন।
একসময় ভাইদের সঙ্গে থাকলেও ৩৫-৪০ বছর থেকে তাদের সাথেও নেই। ছেলে বিয়ে করে বউ বাচ্চা নিয়ে থাকে শ্বশুর বাড়ি। ঈদ-পার্বনে মনে চাইলে খোঁজ নেয়। দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর পর হতভাগিনী লাইলি বেগম যে মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছিলেন সেই মেয়েই এখন তার বাঁচার অবলম্বন। এই মেয়েই অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়েই কোন মতে তাদের সংসার চলে। মেয়েকে বিয়ে দিলেও স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী হওয়ায় মায়ের সাথেই থাকছে। বয়স হয়ে যাওয়ায় তেমন রোজগারও করতে পারেনা। মেয়ে রছনা বেগমের ঘরে ১০- ১১ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। লাইলি বেগম বলেন, মেয়েটি অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় করে তা দিয়ে কোনোমতে বাঁশ-টিন দিয়ে একটি ঘর বানিয়েছে। এ ঘরেই আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। একটি গরু বর্গা নিয়েছে। সেটির সঙ্গেই আমাদের বসবাস। কেউ এমন ঘরে না থাকলে কেমনে বুঝবে আমাদের মতো মানুষের জীবন কেমনে চলে।
তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, মরার আগে কি নিজের ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবো না?
আরও পড়ুন- প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থক হওয়ায় জন্মনিবন্ধনে স্বাক্ষর করছেন না মেম্বার
লাইলি বেগম আরো বলেন, আমার বাড়ি ৯নং ওয়ার্ডে হলেও ভোট চলে যায় ৮নং ওয়ার্ডে। এ কারণে অনেক সময় সরকারি সুযোগ সুবিধাও পাই না। বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় সবার কাছে যেতেও পারি না। শেষ বয়সে এসে পৌঁছেছি। যেকোন সময়ই মারা যাব। সরকার ভূমিহীনদের ঘর দিচ্ছে। আমার মতো ভূমিহীন আশ্রয়হীনকে কেউ দেখে না। আশায় আছি হয়তো একদিন সরকারের দেয়া কোন ঘরে মাথাগোঁজে মারা যাব।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, এখন রাজনগর ইউনিয়নে ঘর করে দেয়ার মতো খাসজমি নেই। আমরা এখানে খাসজমি পেলে বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে ঘর করে দিতে পারবো। তবে তিনি পাঁচগাঁও বা অন্য কোনো ইউনিয়নে যেতে ইচ্ছুক থাকলে ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে।
আইনিউজ/মো. ফরহাদ হোসেন/এসডিপি
আইনিউজ ভিডিও
ওমিক্রন ঠেকাতে মাস্ক বিতরণে মাঠে ডিসি ও মেয়র
মৌলভীবাজারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা
মৌলভীবাজারে মশার `কামান`
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’
- করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছেন মৌলভীবাজারের ৩ চিকিৎসক