মৌলভীবাজার
খাসিয়াদের বর্ষবিদায় বর্ষবরণ ‘সেং কুটস্নেম’ উদযাপন
খাসিয়ারা নিজস্ব পোশাক, নাচ-গান ও সংস্কৃতি পরিবেশনার মাধ্যমে ঐতিহ্য তুলে ধরেন। ছবি: আই নিউজ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির ফুটবল মাঠে বাঁশের খুঁটির ওপর বেতগাছের পাতার ছাউনিতে প্রাকৃতিক পরিবেশে সাজানো হয়েছিল একটি ঐতিহ্যবাহী মঞ্চ। মঞ্চের বাম পাশে তীর-ধনুক হাতে কয়েকজন তরুণ লক্ষ্যভেদ প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। কেউবা আবার গুলতি দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে তীর নিক্ষেপে ব্যস্ত ছিলেন।
মঞ্চের ডান পাশে স্থাপন করা হয়েছিল তৈলাক্ত বাঁশের খুঁটি, যার ঠিক ওপরে রাখা ছিল একটি মোবাইল ফোন। নিচ থেকে অনেকেই বারবার চেষ্টা করে বেয়ে উঠছিলেন ওপরের দিকে। কয়েক দফা চেষ্টার পর একজন তরুণ বাঁশ বেয়ে উঠে মোবাইল ফোনটি জিতে নেন। মঞ্চের সামনে আরেকটি আকর্ষণ ছিল খাসিয়া নারীদের পান গোছানোর প্রতিযোগিতা। কে দ্রুত পান গোছাতে পারে, তা নিয়ে চলছিল উৎসাহ-উদ্দীপনার প্রতিযোগিতা।
শনিবার দুপুরে মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে গিয়ে দেখা যায়, খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল আয়োজিত দিনব্যাপী বর্ষবিদায় বর্ষবরণ উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’ -এর জমজমাট নানা আয়োজন। খাসিয়া সম্প্রদায়ের ১২৬ তম বছরকে বিদায় ও ১২৭ তম নতুন বছর বরণের এই উৎসবে খাসিয়ারা তাদের নিজস্ব পোশাক, নাচ-গান ও সংস্কৃতি পরিবেশনার মাধ্যমে ঐতিহ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ছিল দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জি থেকে আগত খাসিয়া জনগোষ্ঠী ছাড়াও বাঙালি দর্শনার্থী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও দেশি-বিদেশি পর্যটকরা অংশ নেন এ উৎসবে। উৎসব উপলক্ষে মাঠজুড়ে বসেছিল মেলা। বিভিন্ন স্টলে পোশাক, পান, তীর-ধনুক, বাঁশ-বেতের তৈরি সামগ্রীসহ নানা পণ্য সাজিয়ে বিক্রি করেন খাসিয়া নারী-পুরুষেরা। ঐতিহ্যবাহী খাবার, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে সবাই সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় করেন।
অনুষ্ঠানে আগত দর্শনার্থী চন্দ্রিমা গোস্বামী বলেন, “আমরা আজ খাসিয়াদের বর্ষবিদায় অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি। গত বছরও এখানে এসেছিলাম, ভালো লেগেছিল। তাই এবারও ভাই-বোন ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে এসেছি। এখানে নাচ-গান, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র আর খাবারের আয়োজন সবই আমার কাছে ইউনিক লেগেছে। খুব উপভোগ করেছি। আশা করি আগামী বছরও আসব।”
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিসন প্রধান সুচিয়াং বলেন, “খাসি জনগোষ্ঠী প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষবিদায় ‘সেং কুটস্নেম’ উৎসব উদযাপন করছি। ২০০৯ সাল থেকে আমরা নিয়মিতভাবে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছি। আমাদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য আমরা নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখানে দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক এসেছেন। অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্পন্ন হয়। সিলেট বিভাগের প্রায় ৬৫টি খাসিয়া পুঞ্জি থেকে মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। এই আয়োজনে ১২৬তম বছরকে বিদায় জানিয়ে ১২৭তম বছরকে স্বাগত জানানো হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিসন প্রধান সুচিয়াং।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাস প্রমুখ।
আই নিউজ/আরএ
- দুলাভাইয়ের ধর্ষণের শিকার শ্যালিকা
- মৌলভীবাজারের রাজনগরে
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বিধবা রুবির বিউটি পার্লার - `প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে আমাদের ধোকা দেওয়া হচ্ছে`
- রাখাল নৃত্যের মধ্য দিয়ে কমলগঞ্জে রাস উৎসব শুরু
- কমলগঞ্জে মাদকবিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার

























