Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫,   অগ্রাহায়ণ ২৪ ১৪৩২

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

শ্রীমঙ্গলে গারোদের ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপন

গারোদের ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপন। ছবি: আই নিউজ

গারোদের ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপন। ছবি: আই নিউজ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই উৎসবে গারোদের সংস্কৃতি, কৃষিভিত্তিক জীবনযাপন ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান তুলে ধরা হয়। পবিত্র খ্রীস্টযাগ, থক্কা অনুষ্ঠান, রুগালা, সা-সাং সওয়া (ধূপারতি) এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের ফুলছড়া গারো লাইন ফুটবল মাঠে শ্রীচুক গারো নকমা এসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই বর্ণিল ওয়ানগালা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, নতুন ফসল ঘরে তোলার পর শস্যদেবতা ‘মিশি সালজং’-কে উৎসর্গ করে কৃতজ্ঞতা জানান গারোরা। দেবতার নিকট নতুন ফসলের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন, তা ভোগের অনুমতি প্রার্থনা এবং আগামী বছরে ভালো ফসল ও পরিবারের সুস্থতা কামনাই এ উৎসবের মূল তাৎপর্য। গারোদের নিজস্ব কৃষ্টি ও ঐতিহ্যে ওয়ানগালা বা নবান্ন অন্যতম প্রধান সামাজিক-ধর্মীয় উৎসব হিসেবে বিবেচিত।

‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্য, আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। অর্থাৎ দেবদেবীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং মনোবাসনা নিবেদনই ওয়ানগালার উদ্দেশ্য। বর্ষা শেষে ও শীতের শুরুতে, নতুন ফসল ঘরে তোলার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে নতুন শস্য খাওয়া গারোদের জন্য নিষিদ্ধ থাকে বলে একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী হাজী মুজিব, শ্রীমঙ্গল ক্যাথলিক মিশনের প্রধান পুরোহিত ফাদার ড. জেমস শ্যামল গমেজ সিএসসি, কমলগঞ্জ ললিতকলা একাডেমির পরিচালক প্রভাস সিংহ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (টিডব্লিউএ) কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান অরন্য ই চিরান, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্লোডিয়া নকরেক কেয়া এবং এনসিপি শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক নিলয় রশিদ তন্ময় প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শ্রীচুক গারো নকমা এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সামুয়েল যোসেফ হাজং।

উৎসব উপলক্ষে গারো সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে উৎসবে অংশ নেন। তাদের সমৃদ্ধ কৃষ্টি, নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র ও কৃষিনির্ভর জীবনযাত্রার নান্দনিক প্রকাশে উৎসবস্থল হয়ে ওঠে রঙিন। বর্তমানে গারো জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই খ্রিস্টধর্ম অনুসরণ করায় একই দিনে যীশুখ্রীস্ট বা খ্রীস্ট রাজার পর্বও একযোগে উদযাপন করা হয়।

আই নিউজ/আরএ

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়