Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২৪ আগস্ট ২০২৫,   ভাদ্র ৯ ১৪৩২

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:১২, ২০ মার্চ ২০২১
আপডেট: ১২:২২, ২০ মার্চ ২০২১

সুনামগঞ্জ

হিন্দুদের বাড়িতে হামলা: কুলাউড়া থেকে আলোচিত যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে ভাঙচুর, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম স্বাধীন। স্বাধীন মেম্বার নামে পরিচিত আলোচিত এই নেতাকে শুক্রবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন' (পিবিআই)।

গ্রেফতার শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বাধীন দিরাইয়ের তাড়ল ইউনিয়নের সদস্য এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তার বাড়ি দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের নাচনী গ্রামে।

গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান।

মামনুল হককে নিয়ে স্ট্যাটাস ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা
এর আগে, ১৫ মার্চ দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আসেন মামনুল হকসহ কেন্দ্রীয় হেফাজত নেতারা। পরে মামনুল হককে নিয়ে ঝুমন দাস নামে এক যুবক ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়। এ ঘটনাকে ধর্মীয় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনে ওই এলাকার হেফাজত নেতার অনুসারীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাতেই ঝুমন দাস আপন নামে ওই যুবককে আটক করে। পরে বুধবার সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ আনে গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার রাতে হবিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল প্রথম মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় দিরাইয়ের তাড়ল ইউনিয়নের সদস্য শহিদুল ইসলাম স্বাধীনকে। 

এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়েরের পর এখন পর্যন্ত যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম স্বাধীনসহ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

হামলাকারী হিসেবে আলোচনায় স্বাধীন মেম্বার

হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর থেকেই হামলাকারী হিসেবে ওঠে আসে স্বাধীন মেম্বারের নাম। হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়েরকৃত মামলায়ও স্বাধীন মেম্বারকে আসামি করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীদের বেশিরভাগই আসে স্বাধীনের গ্রাম দিরাইয়ের নাচনি থেকে। স্বাধীন মেম্বারও হামলাকারীদের দলে ছিলেন। তার উপস্থিতিতেই হামলা হয়।

জলমহাল নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর বিরোধ

স্বাধীন মেম্বারের সাথে জলমহাল নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জেরে মামুনুল অনুসারীদের সাথে তিনি এই হামলায় অংশ নেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। বাড়িঘর ভাঙচুর হওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপেই স্বাধীন মেম্বারের নাম ওঠে আসে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন মামুনুলের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নোয়াগাঁওয়ের এক যুবক।  এই স্ট্যাটাসের জেরে হিন্দু অধ্যুষিত ওই গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে ৮০টিরও বেশি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

সুষ্ঠু তদন্তে সহায়তা করতে চান স্বাধীন মেম্বার

শুক্রবার রাত ১২টার দিকে গণমাধ্যমকে স্বাধীন মেম্বার মুঠোফোনে জানান, তিনি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় রয়েছেন। তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চান। আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান স্বাধীন। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে সহায়তা করতে চান বলে জানান তিনি।

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ