Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ০৪ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ২০ ১৪৩২

মো. আজিজার রহমান, খানসামা (দিনাজপুর) 

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ১৯ জুলাই ২০২৩

খানসামায় নদী ভাঙনে শতাধিক পরিবার হুমকির মুখে

আত্রাই নদীর আগ্রাসনে বিলীন হবার মুখে বাড়িঘর। ছবি- আই নিউজ

আত্রাই নদীর আগ্রাসনে বিলীন হবার মুখে বাড়িঘর। ছবি- আই নিউজ

গীতিকার সামসদ্দিন হিরা মনের দুঃখে লিখেছিলেন, নদী ও নদী রে... তুই একটু দয়া কর... ভাঙ্গিস না আর বাপের ভিটা বসত বাড়ী ঘর...। এক সময় নদীর ভাঙ্গার গড়া খেলা দেখে  গানটি সুর দিয়েছিলেন তিনি। যার বাস্তব চিত্রের দেখা মিলছে,দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় আত্রাই নদীর ভাঙনে ভাবকী ইউনিয়নের চাকিনীয়া গ্রামে প্রায় ২০০ একর আবাদি কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাবকি ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণে অবস্থিত চাকিনীয়া গ্রামে আত্রাই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় মানুষের জীবিকা নির্বাহের এতমাত্র সম্বল কৃষি জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ভাঙ্গনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পাশ দিয়ে চলাচলের একমাত্র রাস্তা ও বসবাসরত দেড় শতাধিক বাড়ির লোকজন চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে।

জানান, গত তিন বছরে বর্ষাকালে হঠাৎ করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আবাদি জমির ওপর দিয়ে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। একারণে এই এলাকার ২০০ একর আবাদী জমি নদীতে পরিণত হয়েছে। এরপর গত বছর বর্ষাকালে আবারো প্রায় ১০০ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। আর এ বছর ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে একেবারে বসত বাড়ির কাছে এসে পৌছেছে। এমনকি নদীর পাশ দিয়ে চলাচলের একমাত্র রাস্তা যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

নদীর পাড়ের বাসিন্দা মাসুম বলেন, আমার ৫ বিঘা জমি চাষ করে সংসার চলত। এ বছর নদীতে সেই শেষ সম্বল জমি ও গাছপালা বিলীন হয়ে গেছে। পরে রইলো শুধু বাপের ভিটা।

মাথায় হাত দিয়ে নদীর পাড়ের আরেক বাসিন্দা সালাম বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন বাড়ির কাছে চলে এসেছে। এ বছর মনে হয়,বাড়িতে থাকা হবে না। কেমন করে পরিবার নিয়ে থাকবো, সেই চিন্তায় আছি। ধীরে ধীরে আত্রাই নদী আমাদের খেয়ে ফেলছে। এভাবে নদী ভাঙ্গতে থাকলে ভবিষ্যতে এ চাকিনিয়া গ্রামের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, বাপ দাদার প্রায় ৩০ একর জমি নদীতে চলে গেছে। নদী ভাঙ্গন রোধে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পরামর্শে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত ভাবে অবগত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী ভাঙ্গন রোধে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী এলাকাটি প্রদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড দিনাপুরের উপ-প্রকৌশলী সঞ্জয় কুমার মন্ডল বলেন, সরজমিনে মাঠ পর্যায়ে আমরা পরিদর্শন করেছি। ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আমি অবহিত করেছি। দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আই নিউজ/এইচএ

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ