কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
ঘরদরজা বন্ধ করে সবাই পলাতক, নববধূর দিন কাটছে বারান্দা ও উঠানে

এভাবেই অসহায়ের মতো দিনাতিপাত করছেন ফারজানা বেগম
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রেমের সম্পর্কে বাড়িতে এনে বিয়ে করে দুই মাস সংসারের পর অত্যাচার শুরু। নববধূকে অত্যাচারের পর ঘরদরজা বন্ধ করে সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। অন্যদিকে বন্ধ ঘরের বারান্দা ও উঠানে দিন কাটছে নববধূ ফারজানার (১৯)।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগে য়াজ বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কান্দিগাঁও গ্রামের কামরুজ্জামানের বাড়ির দু’টি ঘরই তালাবদ্ধ। পশ্চিম ঘরের বারান্দায় ব্যাগের মধ্যে নিজের কাপড়চোপড় নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে বসে আছেন নববধূ ফরাজানা বেগম।
প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে আজাদুর রহমান (২৫) একই গ্রামের আহমদ আলীর কন্যা ফারজানা বেগমকে (১৯) গত ২০ জুলাই রাতে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর রাতেই দুই পক্ষের পঞ্চায়েত মিলে তাদের বিয়ে হলেও কাবিন সম্পন্ন হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২০ জুলাই রাতে দুই পক্ষের পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে তাদেরকে বিয়ে পড়ানো হয়। পরবর্তীতে বিরোধ দেখা দিলে ২১ আগষ্ট আমার সভাপতিত্বে দুই পক্ষের পঞ্চায়েতদের নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। উপস্থিত সালিশগণের সিদ্ধান্ত মতে এক লক্ষ এক হাজার টাকা কাবিননামা সাব্যস্তক্রমে পরদিন আদমপুর বাজারে কাজী অফিসে গিয়ে নিকাহ রেজিষ্ট্রারী করার কথা। পরে কাবিন না হওয়ায় বিরোধ দেখা দেয় এবং বিষয়টি আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে জানিয়েছি।
তবে গত তিনদিন ধরে বাড়ির বারান্দায় মেয়েটি একা থাকার কারণে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আপাতত থাকার জন্য ব্যবস্থা করে
দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ঘটনার ব্যাপারে নববধু ফারজানা বেগম বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের পর গত ২০ জুলাই রাতে আজাদুর রহমান আজাদ তার বাড়িতে নিয়ে আসে। দুই পক্ষের পঞ্চায়েত মিলে আমাদের বিয়ে পড়ান। কিছুদিন পর থেকেই আমার স্বামী চুল টেনে এবং স্বামীর বড় ভাই ও ভাইয়ের বৌ আমাকে নির্যাতন শুরু করে। বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে। তিন দিন ধরে তারা আমাকে ঘর থেকে বের করে দরজা, জানালা বন্ধ করে বাড়ির সবাই চলে যায়। আমি অসহায় হয়ে ঘরের বারান্দায় ও উঠানে দিন কাটাই।
আজাদুর রহমানের মামাতো ভাই সালাহ্ উদ্দীন, কান্দিগাঁও গ্রামের পঞ্চায়েত নেতা মো. হান্নান বলেন, আজাদ মেয়েটিকে তার বাড়িতে আনার পর হাফেজ খোরশেদ আলী তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। বিয়ের উকিল হিসাবে ছিলেন হামিদুর রহমান, ইমদাদুল হক ও মহব্বত আলী। তবে বর্তমানে মেয়েটির উপর তারা অমানবিক আচরন শুরু করেছে। এখন মেয়েটি যেভাবে আছে তা খুবই ঝুঁকির মধ্যে।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চেয়ে আজাদুর রহমানকে পাওয়া না গেলেও আদমপুর বাজারে তার বড় ভাই নূর রহমান বলেন, মেয়েটা নিজে ইচ্ছে করেই বাড়িতে এসেছে। তারপর মেয়েকে আমার ভাইয়ের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনদিন ধরে আমার ভাই নিখোঁজ রয়েছে।
এ ব্যাপারে আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আপনারা সরেজমিনে গিয়ে বাস্তবতা বুঝে আসেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিফাত উদ্দীনকে এ বিষয় অবগত করলে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
আইনিউজ/এইচএ
আইনিউজে আরও পড়ুন-
- ২০ হাজার গানের জনক গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও তার কীর্তি
- প্রেম-ভালোবাসার ১০ উপকারিতা : শ্রেষ্ঠ কিছু প্রেমের গল্প
- কোমরে বাশি, হাতে তালি — গানই মদিনা ভাই’র জীবন-মরণ
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
সৌদি আরবে মেয়েকে নির্যাতনের খবরে মায়ের আহাজারি-কান্না
গ্রিসের বস্তিতে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন, অধিকাংশই সিলেটি
গ্রিসে পাঁচ বছরের ভিসা পাবে বাংলাদেশিরা
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- দুলাভাইয়ের ধর্ষণের শিকার শ্যালিকা
- মৌলভীবাজারের রাজনগরে
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বিধবা রুবির বিউটি পার্লার - `প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে আমাদের ধোকা দেওয়া হচ্ছে`
- রাখাল নৃত্যের মধ্য দিয়ে কমলগঞ্জে রাস উৎসব শুরু
- কমলগঞ্জে মাদকবিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার