আপডেট: ১২:৩১, ২৮ আগস্ট ২০১৯
নানা সমস্যায় জর্জরিত কমলগঞ্জের কালেঞ্জী পুঞ্জির খাসিয়া সম্প্রদায়
নূরুল মোহাইমীন মিল্টন: সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৫শ ফুট উপরে পাহাড়ি টিলার স্তরে স্তরে টিন শেডের ঘরে খাসিয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। আঁকা বাঁকা পথে ১৫২টি সিড়ি বেয়ে টিলার উপরে পুঞ্জীর হেডম্যানসহ অন্যদের বাসায় পৌছতে হয়। কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে আদমপুর বনবিটের সংরক্ষিত বনে ১৯০টি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠা কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জী। তাদের আয়ের প্রধান উৎস জুমের খাসিয়া পান ও লেবু। তবে বিদ্যুতায়নের অভাব, যাতায়াতের দুরবস্থা, পানের জুম চাষে গবাদি পশুর বিচরণ ও পানের গোড়া পঁচা রোগ এসব নানা সমস্যায় জর্জরিত কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জীর সদস্যরা।
সরেজমিনে কালেঞ্জি পুঞ্জি ঘুরে খাসিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের অভিযোগে জানা যায়, কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জির ৯০ পরিবারের দৈনন্দিন নানা সমস্যার কথা। প্রধান চারটি সমস্যাই পুঞ্জির মুখ্য সমস্যা। অনেক আগে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে তার টানিয়ে রাখা হলেও কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে তার হিসেব নেই। রয়েছে পানীয় জলের সমস্যা।
পুঞ্জীর নারী পুরুষ সদস্যরা টিলার নিচের কূপ থেকে পানি সংগ্রহ করে বালতি, কলসি ও হাড়ি পাতিলে করে টিলার উপরে তুলে নিয়ে আসেন। বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্ত হলে বৈদ্যুতিক পাম্প বসিয়ে নিচ থেকে টিলার উপরে ঘরে ঘরে পানি তোলা যেতো। খাসিয়া সদস্যদের আয়ের প্রধান উৎস পাহাড়ি টিলায় জুমের পান। খাসিয়া পান বৃহত্তর সিলেটের ভাটি অঞ্চল ও যুক্তরাজ্যে সরবরাহ করা হয়। খাসিয়া পান ভাল দামে বিক্রি হলেও পানের গোড়া পঁচা রোগের কারণে পান উৎপাদন কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। আশপাশের গ্রামের মানুষের গবাদি পশু বিচরনে পান জুমে ক্ষতি বয়ে আনছে। এই জুমের ভিতরই এসব গরু থাকে একাধারে দীর্ঘদিন।
যাতায়াত ব্যবস্থার কারণেও কালেঞ্জি খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আদমপুর বাজার থেকে ৯ কিলোমিটার পূর্বে সংরক্ষিত বনের মাঝে কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি। ভাড়া করে সিএনজি অটোরিক্সায় আসা যাওয়ায় চার থেকে ৫শ টাকা ভাড়া দিতে হয়। পুঞ্জির নারী সদস্য উৎপলা খাসিয়া বলেন, তাদের পুঞ্জির প্রায় ৫০ জন ছেলে মেয়ে বেশীর ভাগ সময়ে পায়ে হেটে ৯ কিলোমিটার পার হয়ে আদমপুরে উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হয়। পুঞ্জির ভিতরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এই খাসিয়া ছাত্ররা ৮ম থেকে নবম শ্রেণিতে গিয়ে ঝড়ে পড়ছে। তবে যাদের সামর্থ ভাল তারা সিলেটে বিভিন্ন ছাত্রাবাসে রেখেও পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতায়াতের দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে খাসিয়া পরিবারগুলো দৈনন্দিন হাট বাজারে ৯ কিলোমিটার দূরের আদমপুর বাজারে যেতে হয়।
পুঞ্জীর হেডম্যান নাইট খেরাম কুবলাই বৈদ্যুতিক খুটি দেখিয়ে বলেন, কবে নাগাদ বৈদ্যুতিক খুটি স্থাপন করে তার টানার পর এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে তা কেউ জানেন না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন এলে প্রার্থীরা এই পুঞ্জির সবার খোঁজ খবর রাখেন। তবে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে ও বৈদ্যুতিক সংযোগ পেতে খাসিয়া পরিবারগুলোর দিকে কেউ এগিয়ে আসেন না।
আদমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, আদমপুর বনবিট অফিস থেকে তিন কি.মি. রাস্তা পাকাকরণ হয়ে গেলে এই পুঞ্জির যাতায়াত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের নজরে রয়েছে বলে তিনি জানান।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসের ডিজিএম মোবারক হোসেন সরকার বলেন, সরকারের শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতকরণের আওতায় কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিসহ তার পাশের গ্রামে বিদ্যুতায়নের জন্য খুঁটি আনা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হবে।
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের