Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২২ অক্টোবর ২০২৫,   কার্তিক ৭ ১৪৩২

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২

মহিলা অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী তারা

সেলাইর কাজ শিখে স্বাবলম্বী নাজমা বেগম। ছবি- সংগৃহীত

সেলাইর কাজ শিখে স্বাবলম্বী নাজমা বেগম। ছবি- সংগৃহীত

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার অনেক নারী।  তারা এখন প্রতি মাসে সেলাই কাজ করে আয় করছেন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। কেউ এই টাকা দিয়ে ঘরের হাল ধরছেন কেউ আবার সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে চলেছেন।

জামালগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত জিয়াউর রহমানের স্ত্রী নাজমা বেগম প্রশিক্ষণ নেয়া একজন। এভাবেই এখন দিন চলছে তার। বলা যায় পুরোদস্তুর একজন সাবলম্বী নারী।

জামালগঞ্জে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বেকার, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত বেকার অনেক নারীর এভাবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে খুঁজে পেয়েছেন আত্মকর্মসংস্থানের পথ। মহিলা অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ নেয়া এসব প্রশিক্ষণার্থীদের আরও অনেকেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কার্যালয়ের মাধ্যমে জানা যায়, প্রতি বছর ২’শ বেকার ও বিধবা নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ৩ মাসব্যাপী আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ দেন তারা। দুটি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেলাই প্রশিক্ষণে ২৫ জন ও আইজিএ প্রকল্পের মাধ্যমে বুটিক ও হস্তশিল্প ট্রেডে ২৫ জন করে মোট ৫০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের মৃত মুখলেছুর রহমানের মেয়ে সুমি আক্তার বলেন, ৬ বছর আগে আমার বাবা মারা যান। আমাদের কোন জমি জমা নেই। ৫ বোনের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। তাই বাধ্য হয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশী উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক অফিসের মাধ্যেমে হস্তশিল্পের কাজ শিখেছি। এর আগে আমার হস্তশিল্প সম্মন্ধে কোন ধারনাই ছিল না। এখানে এসে আমি শতরঞ্জি হস্তশিল্প কাজ শিখেছি। এখন আমি কারও বোঝা নই। এই কাজ শেখার পর আমি অনেক অর্ডার পেয়েছি। আমি নিজে কটি, নকশীকাঁথা, মেয়েদের জামায় বিভিন্ন ডিজাইন করে থাকি। মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আশা করি আয় আরও বাড়বে।

সেলাই প্রশিক্ষক মৌসুমী সরকার জানান, প্রশিক্ষণার্থীদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরী ও সেলাইয়ের যাবতীয় কাজ শেখানো হয়ে থাকে। কাজ শিখে এখন তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে।

শতরঞ্জি হস্তশিল্পের প্রশিক্ষক রিপন সরকার বলেন, প্রশিক্ষণে নকশী কাঁথা, বিছানার চাদর, টেবিল কভার, কুশন এবং নকশী শাড়ির কাজ শেখানো হয়। এখানে কাজ শিখে ইতিমধ্যে কয়েকজন বিভিন্ন অর্ডার পাচ্ছেন। এই প্রশিক্ষণে বেকার মেয়েদের বেকারত্ব দূর হবে।

উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রশিক্ষক লক্ষী রাণী তালুকদার জানান, তার আধিদপ্তরের উদ্যোগে জামালগঞ্জে দুটি ট্রেডে মোট ৫০ জন বেকার নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রতি বছর ২শত’ বেকার নারী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে সনদ সহ জনপ্রতি ১২ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীরা স্বাবলম্বি হচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই স্বাবলম্বি হয়েছেন। প্রশিক্ষণার্থী যারা দক্ষতা অর্জন করেছেন, আত্মকর্মসংস্থানের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সেলাই মেশিনও ব্যাংক ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

আইনিউজ/এইচএ

মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল | ICU | CCU | Dialysis | Emergency Call

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়