Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ৬ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ১৭ জুলাই ২০২২

অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে: মাউশি

নড়াইলে পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষককে জুতার মালা পরানো হয়

নড়াইলে পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষককে জুতার মালা পরানো হয়

পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তদন্ত কমিটি।

রবিবার (১৭ জুলাই) মাউশির সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীর গত ১৩ জুলাই সই করা প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে বলা হয়, নড়াইল জেলার সদর উপজেলাধীন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে বিতর্কিত পোস্ট দেয়। সে গত ১৭ জুন (শুক্রবার) রাতে তার ফেসবুক আইডিতে পোস্টটি দেয়। পরের দিন ১৮ জুন (শনিবার) সকালে রাহুল দেব রায় কলেজে এলে অন্য ছাত্ররা তাকে পোস্টটি ডিলিট করে দিতে বলে। কিন্তু সে সেটি ডিলিট না করলে ছাত্ররা ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে রাহুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলে। অধ্যক্ষ তখন রাহুলকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে ওই ছাত্রকে নিয়ে যেতে চাইলে ছাত্ররা বাধা দেয়। ইতোমধ্যে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা মিলে প্রচণ্ড বিক্ষোভ তৈরি হয়। পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে প্রশাসন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে এবং উত্তেজনা কমাতে কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ছোঁড়ে। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পৌঁছান এবং সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্র ও অধ্যক্ষকে পুলিশ হেফাজতে নেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেন।

বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি চার দফা সুপারিশ করেছে। এতে অধ্যক্ষ পদটি দখলের প্রতিযোগিতায় শিক্ষকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে এমন চিত্র উঠে আসে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

মাউশির চার দফা সুপারিশ

১। সংশ্লিষ্টজনের বক্তব্য ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরানোর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী আর একটু সতর্ক হলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যেতো বলে তদন্ত কমিটি মনে করে।

২। কলেজের অধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় কলেজের কতিপয় শিক্ষকদের মধ্যে ওই পদটি দখলের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে। দ্রুত নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে সমস্যাটির সমাধান করা যেতে পারে।

৩। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন পরবর্তীতে বহিরাগতদের আন্দোলনে পরিণত এবং অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির পিছনে কলেজ শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকতে পারে বলে তদন্ত কমিটির নিকট প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে।

৪। সংশ্লিষ্টজনের বক্তব্য ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তার হোসেনের ভূমিকা রহস্যজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বলে প্রতীয়মান হয়।

সূত্রঃ ঢাকা ট্রিবিউন

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ