Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ৫ ১৪৩২

মো. আজিজার রহমান, দিনাজপুর

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

দিনাজপুরে

দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী জয়শঙ্করের জমিদার বাড়ি

জয়শঙ্করের জমিদার বাড়ি। ছবি- আইনিউজ

জয়শঙ্করের জমিদার বাড়ি। ছবি- আইনিউজ

কবে বাংলা ছেড়ে ওপার বাংলায় পারি জমিয়েছেন জমিদার জয়শঙ্কর রায় চৌধুরী! তা সবার অজানা। তবু কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে এই জমিদার বাড়ি। দিনাজপুর জেলার অন্যতম নিদর্শন বা পুরোনো স্থাপনার অন্যতম খানসামা উপজেলার এই জমিদার বাড়ি।

দেশের ২৩৯টি জমিদার বাড়ির মধ্যে খানসামার জমিদার বাড়ি অন্যতম। উপজেলার সদর থেকে ৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে জয়গঞ্জে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। জমিদার বাড়িটি দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ। কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় জয়শঙ্কর রায় চৌধুরীর জমিদার বাড়িটি এখন ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। জয়শঙ্কর জমিদারের নাম অনুসারে গড়ে উঠেছে জয়গঞ্জ বাজার।

সরেজমিনে দেখা যায়, জমিদার বাড়িটি বর্তমানে গরু,ছাগল এবং আবর্জনা ফেলার একটি উপযুক্ত স্থান হিসেবে ব্যবহার করছেন এলাকাবাসী। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকেই ভবন গুলো পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। বিলুপ্ত হওয়া এই জমিদার বাড়ির দুটি দালানের মধ্যে একটি ভেঙ্গে গেছে, অক্ষত অপর দালানটিও নষ্টের পথে।

জমিদার বাড়ির চারপাশে সরকারিভাবে গড়ে উঠেছে আদর্শগ্রাম। জমিদার জয়শঙ্করের কালের সাক্ষী হিসেবে রয়েছে ৪টি পুকুর। সেগুলো আদর্শগ্রামের লোকরাই ব্যবহার করে থাকে। জমি,পুকুর ব্যবহার করলেও জমিদার বাড়িটির দিকে নেই কারো নজর।

জানা যায়, জমিদার হিসেবে জয়শঙ্কর ছিল অত্যাচারী প্রকৃতির মানুষ। সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নিপীড়ন করেছিলেন তিনি,তাই দিনাজপুরের রাজা দেবত্তর জয়শঙ্কর জমিদারকে পরাজিত করে তাকে এখান থেকে বিতারিত করেন।

আরো জানা যায়, ঐতিহাসিক এই জমিদার বাড়িটি একাধিক নামে পরিচিত। "খানসামা জমিদার বাড়ি", "খানসামার জয়শঙ্করের জমিদার বাড়ি" ও "জয়গঞ্জ জমিদার বাড়ি" নামেও পরিচিত। তবে এই জমিদার বাড়ি কবে নাগাদ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কে এই জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেছে তা আজো সবার অজানা। তবে কথিত আছে, ভারতবর্ষে যখন জমিদারি প্রথা চালু ছিল, সে সময়ে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা জমিদারের নামের ইতিহাস না থাকলেও রয়ে গেছে শেষ জমিদার জয়শঙ্করের নাম। তার নামানুসারে এই গ্রামের নামকরণ করা হয় জয়গঞ্জ। যা প্রায় বিশ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পরবর্তীতে দেশ ভাগের আগেই জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর শেষ জমিদার জয়শঙ্কর প্রায় ১০০ একর জমি এবং জমিদার বাড়িটি রেখে ভারতের শিলিগুড়িতে চলে যান।

এক সময় জমিদার বাড়িটিতে একতলা একটি প্রাসাদ ছিল, ছিল থাকার ঘর, বসার ঘর, মালামাল রাখার ঘর ও মন্দির। যার অনেক কিছুই বিলিন হয়ে গেছে। তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির কিছু অংশ ব্যক্তি মালিকাধীন এবং কিছু অংশ সরকারি খাস জমিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জমিদার আমলের সেই বটগাছটি। জমিদার বাড়ির প্রবেশদ্বারে লোহার গেটটিও এখন ব্যবহার হচ্ছে খানসামা থানার প্রবেশদ্বারে।

জমিদার বাড়ির অনেক কিছুই নষ্টের পাশাপাশি চুরি হয়ে গেছে অনেক কিছু। অযত্নে জয়শঙ্কর রায় চৌধুরীর জমিদার এই বাড়িটি বাঁচাতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

ইতিহাসের এসব প্রাচীন সাক্ষী আগামী প্রজম্মের কাছে তুলে ধরে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের বলেও দাবি করেন অনেকে। তবে এই জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে পর্যটকদের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে।

আইনিউজ/এইচএ

আইনিউজে আরও পড়ুন-

বিশ্বের মজার মজার গল্প আর তথ্য সম্বলিত আইনিউজের ফিচার পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি

দিনমজুর বাবার ছেলে মাহির বুয়েটে পড়ার সুযোগ || BUET success story of Mahfujur Rhaman || EYE NEWS

হানিফ সংকেত যেভাবে কিংবদন্তি উপস্থাপক হলেন | Biography | hanif sanket life documentary | EYE NEWS

আশ্চর্য এন্টার্কটিকা মহাদেশের অজানা তথ্য | Antarctica continent countries | facts। Eye News

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ