Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ২১ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৬ ১৪৩২

সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী

প্রকাশিত: ১৩:১১, ১৮ মে ২০২৩

জুড়ীতে প্রাইমারী স্কুলে নেই শিক্ষক; পরীক্ষা নিলেন দপ্তরী!

কচুরগুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি- আই নিউজ

কচুরগুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি- আই নিউজ

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে দপ্তরিকে দিয়ে পরীক্ষা গ্রহনের অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিভাবকরা। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে ) সকালে আই নিউজ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ভূঁইয়া।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় জুড়ী উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে চলছে  প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা। বুধবার ( ১৭ মে ) উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের কচুরগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা’ চলছিল। সকাল ১১টার দিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর পরীক্ষা চলাকালে কয়েকজন অভিভাবক দেখতে পান বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক নেই এবং দপ্তরি পরীক্ষা নিচ্ছেন। অভিভাবকরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে পুরো জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

দ্বিতীয় শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থীর পিতা মোস্তফা উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অন্যান্য অভিভাবকরা বিষয়টি বললে কয়েকজন অভিভাবককে নিয়ে বিদ্যালয়ের ভিতরে গিয়ে সত্যতা পাই। দপ্তরি তারেকুল ইসলামের কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, শিক্ষকরা আসেননি। স্যাররা আমাকে পরীক্ষা নিতে বলেছেন। এরপর আমরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবস্থান নেই। পরে একজন শিক্ষিকা দুপুর ১২টায় ও একজন শিক্ষক দুপুর একটায় বিদ্যালয়ে আসেন। আমরা এ বিষয়টি স্কুল কমিটিকে জানিয়েছি। এ  বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিদিন তাদের ইচ্ছেমত বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন। লেখাপড়ার মান একেবারে নেই বললেই চলে।

দপ্তরি তারেকুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ১১টা পেরিয়ে গেলে কোন শিক্ষক না আসায় আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ফোন করি। তিনি নির্দেশ দেয়ায় আমি পরীক্ষা নেয়া শুরু করি।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামছ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, মোট চারজন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষক ছুটিতে আছেন। আমিসহ তিনজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আছি। শিক্ষিকা সান্তা রানী দে ও শিক্ষক আব্দুল হামিদ আসবেন মনে করে বুধবার সকালে প্রতিষ্ঠানের কাজে আমি বাইরে যাই। পরে শুনতে পেয়েছি তারা দু’জন দেরি করে এসেছেন। দপ্তরিকে পরীক্ষা গ্রহণের কথা বলেননি দাবী করে সামছ উদ্দিন জানান, আমি বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক হাজিরা খাতা দেখে নিশ্চিত হয়েছি শান্তা রানী দে ও আব্দুল হামিদ দেরীতে এসেছেন।

মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও সহকারি শিক্ষিকা শান্তা রানী দে ফোন ধরেননি। তাঁর স্বামী ও এই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পুলক দে জানান, তিনি অভিভাবকদের নিকট থেকে বিষয়টি শুনেছেন।

বিদ্যালয়ে দেরীতে আসার বিষয়ে সহকারী শিক্ষক আব্দুল হামিদ জানান, বৃষ্টির কারণে যানবাহন না পাওয়ায় বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে দেরি হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি একজন অভিভাবক আমাকে জানিয়েছেন। এছাড়া দপ্তরীর পরীক্ষা নেওয়ার একটি ভিডিও দেখেছি। বৃহস্পতিবার ( ১৮ মে ) এ বিষয়ে শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ