মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৫:১৪, ৩০ জুন ২০২০
ধলাই নদের বিকল্প বাঁধ নির্মাণ, রক্ষা পাবে দশ কোটি টাকার ফসল
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী এলাকায় ভাঙন কবলিত ২ কিলোমিটার বিকল্প বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ পূননির্মাণ করা হয়েছে।
এতে প্রায় যুগের ভোগান্তি ও ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে এলাকাবাসী। তবে বাঁধের জন্য জমি ও বাড়িঘর ছেড়ে দেয়া পরিবারগুলো পড়েছে বিপাকে। সরকারের কাছে পূনর্বাসনের দাবি করছেন এসব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট বাজার সংলগ্ন সেতু থেকে প্রতাপী গ্রামে ধলাই নদের ডান তীরের ২ কিলোমিটার বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ প্রায় এক যুগ আগে ভেঙে যায়। এরপর থেকে প্রতিবছর নদের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেই ভাঙনস্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতো।
রাস্তাঘাট বাড়িঘর তলিয়ে যেতো। নষ্ট হতো প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল। অস্থায়ী ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামত করা হলে ক্রমান্বয় ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছিলো না।
২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৮৯.৯১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্প্রতি শেষ করা হয়েছে। বাঁধটি নির্মাণ করার ফলে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ও পতনঊষার ইউনিয়ন এবং রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের কয়েক লক্ষ মানুষের ভোগান্তি কমবে।
বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকার ফসল রক্ষা পাবে। স্থানীয়রা জানান, পুরনো বাঁধটি ক্রমান্বয়ে ভাঙতে ভাঙতে জায়গাটি প্রায় উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিলো। প্রতিবছর বন্যা হতো এবং ফসল নষ্ট হতো। বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় এখন তারা অনেকটা নিশ্চিন্ত।
প্রতাপী গ্রামের পারভেজ ও মিয়া আশিক মিয়া বলেন, বর্ষা মানেই আমাদের কাছে ছিলো আতঙ্কের নাম। নদের পানি
বাড়লেই বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটতো। বাঁধটি নির্মাণ হওয়ায় আমাদের যাতায়াতের সুবিধাও হয়েছে।
তবে সবাই খুশি হলেও ভিটেমাটি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের রুবি বেগম, কুদরত মিয়া, বাবুল মিয়া, ফাবিদ মিয়া,
কানন বিবি, নেওয়া বিবিসহ অন্তত কুড়িটি পরিবার। জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই বিনামূল্যে তাদের ভিটেবাড়ি ছেড়ে দিতে
হয়েছে বাঁধ নির্মাণের জন্য।
তারা জানান, নদী তীরে ছিলো তাদের বাড়িঘর। ক্রমান্বয় ভাঙনে নদের পেটে তলিয়ে গেছে সহায় সম্বল। টিকে ছিলো শুধু ঘরটি। কিন্তু বাঁধ নির্মাণের জন্য শেষ আশ্রয়টিও ছেড়ে দিতে হয়েছে তাদের। পরিবার পরিজন নিয়ে এখন আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে।
তারা অভিযোগ করেন অন্যত্র পূনর্বাসনের আশায় বসে তাদের বাড়িছাড়া করা হয়েছিলো কিন্তু এখন পূনর্বাসন করা হচ্ছেনা।
বাঁধ নির্মাণের কাজটি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুনা ট্রেডার্স। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানায়, কাজের সিডিউলে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি ছিলোনা। তারা সিডিউল অনুযয়ী কাজটি করেছেন।
রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল জানান, ক্ষতিগ্রস্থ ভূমিহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য সরকারি জমি খোঁজা হচ্ছে। জমি পেলে তাদের সরকারি খরচে ঘর করে দেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিধান নেই। সেটি থাকলে অবশ্যই সেটা করা হতো। ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেছি।
আরও পড়ুন
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’
- করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছেন মৌলভীবাজারের ৩ চিকিৎসক
সর্বশেষ
জনপ্রিয়