অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
পরীক্ষামূলক মাশরুম চাষে সফল শিক্ষার্থী রাকেশ সরকার প্লাবন
লেখাপড়ার পাশাপাশি মাশরুম চাষে সফলতা এনেছেন শিক্ষার্থী রাকেশ সরকার প্লাবন।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাশরুম চাষে সফলতা এনেছেন শিক্ষার্থী রাকেশ সরকার প্লাবন। রাকেশ সরকার প্লাবন ফুলবাড়ী পৌরশহরের চাঁদপাড়া গ্রামের নিখিল চন্দ্র সরকার এবং রিক্তা রানী সরকারের ছেলে। দিনাজপুর গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব স সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ইলেক্ট্রিক্যাল ডিপ্লোমার তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
পড়ালেখার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হয়ে নিম্নবিত্ত পরিবারকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্য নিয়ে বাড়ীতেই পরীক্ষামূলকভাবে মাশরুম চাষ শুরু করেন রাকেশ সরকার প্লাবন। তার এ কাজ দেখে এলাকার অনেকেই বুঝতে পারেননি এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
রাকেশ সরকার প্লাবনের পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা মাশরুম এখন বাজার জাতের অপেক্ষায় রয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলায় মাশরুমের চাহিদা তেমন চাহিদা না থাকায় উৎপাদিত মাশরুমের বাজারজাত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন
এই শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা। অপরিচিত এই মাশরুম দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা। যারা কি-না এখন পর্যন্ত জানেনই না এটিও একটি খাদ্যপণ্য।
সরেজমিনে রাকেশ সরকার প্লাবনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ীর উঠানে নির্মাণাধীন আধাকাঁচা দরজা-জানালাসহ চালা বিহীন ঘরের কক্ষের ওপরে বাঁশ দিয়ে দঁড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে পলিথিন ব্যাগের ভেতরে থাকা খড় দিয়ে মোড়ানো মাশরুমের স্পন।
শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা রাকেশ সরকার প্লাবন বলেন, পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হচ্ছেন তার শ্রমিক পিতা। তার উপার্জন দিয়েই তার লেখাপড়াসহ পরিবারের ভরন-পোষণ চলছে। পিতার কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগে। এ কারণে পিতাকে সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে পরিকল্পনা করে শুরু করেন মাশরুম চাষ।
এজন্য তিনি দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টার ও ফুলবাড়ী কৃষি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তাদের পরামর্শে সংগ্রহ করেন মাশরুমের স্পন। চলতি বছরের জানুয়ারির ১৩ তারিখ থেকে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখ থেকে মাশরুম সংগ্রহ শুরু করেছেন। বর্তমানে মাশরুম উৎপাদিত হচ্ছে।
তবে মাশরুম উৎপাদিত হলেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাজারজাত নিয়ে। ফুলবাড়ী উপজেলায় মাশরুমের চাহিদা তেমন না থাকায় বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরায় যোগাযোগ করেও তেমন আগ্রহ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কয়েকজন হোটেল ও রেস্তোরার মালিক মাশরুমের নমুনা চাওয়ায় তাদেরকে মাশরুম দেওয়া হয়েছে। তাদের উত্তরের অপেক্ষায় আছেন। তাছাড়া সরকারিভাবে সহজশর্তে কৃষি ঋণ কিংবা সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে আগামীতে বড় পরিসরে মাশরুম চাষের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান এই শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা।
শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা রাকেশ সরকার প্লাবন আরও বলেন, প্রতিকেজি মাশরুম উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। আর প্রতিকেজি পাইকারি মাশরুম বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে।
উদ্যোক্তা রাকেশ সরকার প্লাবনের পিতা নিখিল চন্দ্র সরকার ও মা রিক্তা রানী সরকার বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়ীতেই মাশরুম চাষের কথা বলায় প্রথম দিকে এতে অমত ছিল তাদের। কিন্তু ছেলে জেদের কাছে সম্মতি দিতে বাধ্য হয়েছেন। এরপর শুরু হয় তার মাশরুম চাষ। এক পর্যায়ে মাশরুম উৎপাদন শুরু হলে তারাও ছেলে এ কাজে সহযোগিতা করে থাকছেন। লেখাপড়ার জন্য প্লাবন দিনাজপুর থাকার সময় পিতা ও মাতাই মাশরুমের স্পনগুলোতে দুইবেলা স্প্রে করে থাকেন। আর ছুটি পেলেই প্লাবন বাড়ী এসে মনোনিবেশ করে মাশরুম চাষের দিকে। তার কষ্টের ফল একদিন ভগবান বেদেন। তাকে নিশ্চয় আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করবেন। এই কষ্টের সফলতা একদিন আসবেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী ও ঔষধিগুণে ভরপুর একটি দ্রব্যের সহজ সরল নাম মাশরুম। মাশরুম চাষ অনেক লাভজনক। এদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের উপযোগী। রাকেশ সরকার প্লাবনকে মাশরুম চাষে সার্বিকভাবে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে মাশরুমের স্পন কেনার জন্য দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টারে যোগাযোগ করে দেওয়া হয়েছে। রাকেশ সরকার প্লাবনকে মাশরুম চাষে আরো দক্ষ করে তোলার জন্য আগামীতে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
আই নিউজ/এইচএ
- বরিশালে সন্ধ্যা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়লো হাঙর
- বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ ফলাফল : নৌকা ৮৭৭৫৩, হাতপাখা ৩৪৩৪৫
- প্রেমের টানে বরিশালে, ‘দেশি প্রেমিকের’ হাতে মার খেয়ে পালালেন ভারতীয় প্রেমকান্ত
- কুড়িয়ে পাওয়া পাঁচ লক্ষ টাকার প্রকৃত মালিককে খুঁজতে এলাকায় মাইকিং
- সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা স্বপ্ন-সোহাগী ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব
- গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রাপ্ত ফলাফল
- চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা
- দেলোয়ার হোসেন সাঈদী মারা গেছেন
- কুষ্টিয়া জেলার সকল গ্রামের নামের তালিকা
- বাড়িতে ফোন দিয়ে জানলেন তিনি বাঘের থাবায় মারা গেছেন, চলছে দাফনের প্রস্তুতি

























