শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে ১৯ নির্দেশনা

দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। তাই আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের আগে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠদান উপযোগী করার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এই প্রেক্ষিতে ১৯টি নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এই নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়। এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর ১৯ দফা নির্দেশনা প্রকাশ করেছিল। ওই নির্দেশনা সংশোধন করে তা রোববার প্রকাশ করা হয়। 

নির্দেশনা প্রকাশ সংক্রান্ত আদেশে জানানো হয়, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে গত বছর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দেশের সকল মাধ্যমিক, স্কুল, কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রস্তুত করার জন্য সংশোধিত গাইডলাইন দেওয়া হলো। 

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-

১. শিক্ষাঙ্গনের প্রবেশমুখে করোনার স্বাস্থ্যবিধি ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

২. প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের তাপমাত্রা মাপতে হবে।

৩. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশমুখ ব্যবহার করতে হবে। যদি কেবল একটি প্রবেশমুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে।

৪. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানাতে বলা হয়েছে।

৫. শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে সে বিষয়ে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী বক্তব্য দিতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের দেওয়া ভিডিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখতে হবে।

৭. প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অভিভাবক প্রবেশের সময় সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঠিকভাবে মাস্ক (সম্ভব হলে কাপড়ের মাস্ক) পরিধান করতে হবে।

১১. প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে পারে।

১২. শ্রেণিকক্ষে তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে।

১৫. সব শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে।

১৭. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে পড়াতেও বলা হয়েছে।

১৮.প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত মেরামত, বৈদ্যুতিক মেরামত এবং পানি সংযোগজনিত মেরামত আগেই শেষ করতে হবে।

১৯. স্কুল বা কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে রোববার দুপুরে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। 

আইনিউজ/এসডিপি