Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২৩ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৮ ১৪৩২

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
আপডেট: ১৫:২১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

মেয়াদোত্তীর্ণ কুবি ছাত্রদলের কমিটি, পূর্ণাঙ্গ কমিটির গুঞ্জন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১১ বছর পর প্রথম কমিটি ও তার ৫ বছর পর ৩ মাস মেয়াদী আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন,যদিও এই ১৬ বছরে ৬/৭ টি কমিটি হয়ে যাওয়ার সাংগঠনিক নিয়ম। বর্তমান কমিটিতে আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল-মামুন ও সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভকে গত ১৬ জুন দায়িত্ব দেয়া হয় যেটির মেয়াদ গত ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। 

একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য মতে, আহ্বায়ক কমিটির যেসকল প্রার্থী ছিলেন তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুনের কোন মামলা নেই। সে তার নিজ এলাকা দেবিদ্বারে থাকেন ৮/৯ বছর। মোস্তাফিজুর রহমান শুভর মামলা ৫ টি, গ্রেফতার হয়েছেন ৩ বার (২ বার জেল থেকে বাঁচলে ও শেষ বার জেলে যেতে হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে), গিয়াস উদ্দিন আশিকের নামে কোন মামলা না থাকলেও সরব ছিলেন সকল কর্মসূচিতে। আরিফুর রহমান ও আবুুল বাশার দলীয় সকল কর্মসূচিতে ভুমিকা রেখেছেন, তাহারা দলকে সুসংগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।আশিকুর রহমান রাব্বানী ও দলের সকল কর্মসূচীতে সরব ছিলেন, কাজ করে যাচ্ছেন দলকে সুসংগঠিত করতে।

নতুনদের মাঝে কাজ করে যাচ্ছেন আতিকুর রহমান, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. ইউসুফ, সাফায়েত হোসেনসহ আরো অনেকে। কমিটি ঘোষণার আগে শুভ এবং মামুন দুজনেই আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় মোস্তাফিজুর রহমান শুভ তার প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে এক্টিভ, নিবেদিত এবং নির্যাতিত। কিন্তু কেন্দ্র তাকে আহ্বায়ক না দিয়ে মামুনকে আহ্বায়ক এবং শুভকে সদস্য সচিব নির্বাচিত করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন কমিটির একাধিক ব্যক্তি বলেন কেন্দ্র আমাদের তৃনমূলের চাওয়া পাওয়া যথাযথ মূল্যায়ন করে নাই। আমরা চেয়েছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল একটি শক্তিশালী কমিটি উপহার পাক, কিন্তু আমাদের হতাশ করেছে।  এমন সিদ্ধান্ত দেয়া হলো সাধারণ শিক্ষার্থী এবং আমাদের বিপদ আপদে যিনি আগলে রাখেন আমাদের উনাকে (মোস্তাফিজুর রহমান শুভ ভাই) সঠিক মূল্যায়ন না করায় দল এবং এই ইউনিট খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফলে নিজেদের মাঝে বিভেদ তৈরি হয়। আশার কথা হলো খুব দ্রুত নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবে বলে কেন্দ্র এবং লোকাল নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে বিরোধ সমাধান হয়েছে।

এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান শুভ'র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, দেখুন আমি আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলাম কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলে মূলত যারা এখনো কাজ করে যাচ্ছে তারা মনে করে তাদের চাওয়া পাওয়াকে সঠিক মূল্যায়ন দল করেনি। তারা সকলে আমাকে আহ্বায়ক হিসেবে আবেদন করেছিলো, তৃনমূলের প্রস্তাবনার বিপক্ষে কমিটি ঘোষণা হওয়ায় নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুব্ধ। আসলে কি জানেন আমরা যারা মন প্রাণ দিয়ে দল করি, অজস্র মামলা হামলার শিকার হই, দলের জন্য তাদেরকে সঠিক মূল্যায়ন না করলে তৃণমূলে একটি খারাপ প্রভাব পরে। তার কারণে নতুনরা রাজনীতি বিমুখ হয়। 

নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। যেটির মেয়াদ ছিলো ৩ মাস বা ৯০ দিন, আমাদের কমিটি তা অতিক্রম করেছে। কেন্দ্র এবং লোকাল অভিভাবকদের আশ্বাসে আমি কমিটির প্রায় সকলের সাথে কথা বলেছি,কমিটির সকলকে শান্ত রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আমিসহ অনেকে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করা এবং অনেক ত্যাগীদের বাদ দেয়ায় আমার ইউনিট খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। কেন্দ্রীয় অভিভাবকদের নির্দেশ এবং আদেশে কাজ করে যাচ্ছি, উনাদের কমিটমেন্ট না রাখলে ইউনিটটি আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অন্যান্য ইউনিটেও এর প্রভাব পরেবে। আশা করি কেন্দ্রীয় অভিভাবকরা আমাকে সঠিক মূল্যায়ন সহ ত্যাগীদের নিয়ে সম্মিলিত একটি কমিটি গঠন করবেন খুব দ্রুত। ইনশাআল্লাহ, আমি দায়িত্ব পেলে খুব দ্রুত সকল সমস্যা সমাধান করে সকলকে নিয়ে একটি শক্তিশালী ইউনিটে রুপ দেব। যেটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন এবং গনতান্ত্রিক আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে কুমিল্লার জনপদে।

বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন আশিকের কাছে কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন আমরা যারা এই কমিটিতে জায়গা পেয়েছি তাদের ৮০% সদস্যদের মতামত ছিলো শুভ ভাইকে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া। কিন্তু আমাদের অভিভাবকরা আমাদের মতামতকে কতটুকু গুরুত্ব দিয়েছে তা আপনারা দেখছেনই। আমি মনে করি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কেউ কেউ তাদের ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যক্তিকে দায়িত্বে আনতে এবং সংগঠনকে দুর্বল করতে ভুল বার্তা দিয়েছেন। আশা করি কেন্দ্রীয় অভিভাবকরা খুব দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করে এর সমাধান করবেন।

কমিটির আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল বাশারের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবসময় দলের সকল কার্যক্রম সফল করতে মাঠে ছিলাম। তার জন্য ক্যাম্পাসে এবং নিজ এলাকায় অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ে "ছাত্রলীগ" এর হাতে হামলার শিকার হয়েছি, কিন্তু দল আমাদের ঠিক মূল্যায়নটি করে নাই, তারপরও কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে কেন্দ্র প্রকৃত ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন।

আইনিউজ/খালেদুল হক 

Green Tea
সর্বশেষ