জিএম ইমরান
আপডেট: ১০:৩৫, ১২ জুলাই ২০২৪
কোন শিক্ষার্থী বিপথে গেলে সব দায়-ই কি তার?
 
							ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বিপথে যাওয়ার অন্যতম কারণ; তাদেরকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে যে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হচ্ছে সেটাকে তারা যথোপযোগী ব্যবহার না করা, কিংবা শারীরিক খেলাধুলা(ফুটবল,ক্রিকেট,ইত্যাদি) কমিয়ে ক্যারাম,তাসসহ অন্যান্য ঘরোয়া খেলাধুলায় (যেসব খেলায় সহজে জুয়ার আদান প্রদান করা হয়) আসক্ত হওয়া।
এক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থী বিপথে গেলে সব দায়-ই কি তার? উত্তর হচ্ছে,না। এখানে অভিভাবক,শিক্ষক তথা সমাজের দায়িত্বশীলদেরও দায়িত্ব রয়েছে। এখন প্রশ্ন থাকতে পারে, এ সচেতন শ্রেণীর দায়িত্বটা কি?
তাদের দায়িত্ব হচ্ছে, হটাৎ করে নতুন এক যুগে প্রবেশ করা এ প্রজন্মকে সঠিকভাবে গাইডলাইন দেওয়া। যাতে তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার না করে সঠিক ব্যবহার করে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, অভিভাবক-শিক্ষক-সচেতন সমাজ সবাইকে এক কাতারে এসে কাজ করতে হবে। এর মধ্যে, কোন একজন যদি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে তাহলে তার ছেলেমেয়ে সঠিকভাবে গড়ে তোলা কষ্টকর হয়ে যাবে।
তবে দুঃখজনক বিষয় হলেও এটা সত্য যে, বর্তমান অভিভাবকদের বড় একটা অংশ পিতামাতা হিসেবে তাদের দায়-দায়িত্ব ভুলতে বসেছে। এর ফলে বড় ধাক্কাটা খাচ্ছে শিক্ষক এবং অন্যান্য শ্রেণী।
তবে দুঃখজনক বিষয় হলেও এটা সত্য যে, বর্তমান অভিভাবকদের বড় একটা অংশ পিতামাতা হিসেবে তাদের দায়-দায়িত্ব ভুলতে বসেছে। এর ফলে বড় ধাক্কাটা খাচ্ছে শিক্ষক এবং অন্যান্য শ্রেণী। পিতা-মাতা হিসেবে সন্তানের প্রতি দায়-দায়িত্ব পালন না করায়, শিক্ষক তথা অন্যরা যখন শিক্ষার্থীদের মোটিভেট করতে যাচ্ছে। তখনই অনেকক্ষেত্রে তারা অপমান অপদস্তের শিকার হচ্ছে। এজন্য অনেকটা বাধ্য হয়ে এখন তারা 'খাপ খেয়ে চলো' নীতি বেছে নিয়েছে। তারা ভাবছে, যার ছেলে সে যদি তদারকি না করে তাহলে আমার যায় আসে কি?
একটা ঘটনা বলি, পড়ার সময়ে খেলতে দেখলে আমি সাধারণত শিক্ষার্থীদের মোটিভেট করি। কিন্তু আজকে একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনার মুখোমুখি হলাম। এক জনৈক ব্যক্তির ক্যারাম ঘরে রাত ৮টায় দুই শিক্ষার্থীর উপস্থিতি টের পেয়ে এগিয়ে যেতেই তারা দ্রুত ক্যারাম ঘর ত্যাগ করে। এসময় আমি ক্যারাম ঘরের মালিককে জিঙ্গেস করি, পড়ার সময়ে আপনার ক্যারামঘরে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দিলেন কেন? প্রশ্নের জবাবে ক্যারামঘর মালিকের কথা শুনে আমি 'থ' হয়ে যায়।
উত্তরটা শুনুন তাহলে, ক্যারাম মালিক আমাকে বলল, পড়ার সময় হোক আর যে সময় হোক, যার ছেলে সে কিছু বলছে না,আপনি বলার কে? আমি বললাম, আমি শিক্ষক। আমি বলছি পড়ার সময় স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের ঢুকতে দিবেন না। একথার উত্তরে তারা বলে, শিক্ষার্থী হোক আর যে-ই হোক তার দ্বারা আমার দশ (১০)টাকা ইনকাম হয়। সুতরাং কাকে ঢুকতে দিবো,আর কাকে দিবো না সেটা আমার বিষয়। উত্তর শুনে সম্মান বজায় রেখে আমি চলে আসলাম।
আর নিজেকে প্রশ্ন করলাম, শিক্ষার্থীদের বিপথে নিয়ে ইনকাম করার সাহসটা ক্যারাম মালিকের আসলো কিভাবে? আমার হৃদয় মস্তিষ্ক থেকে উত্তর এলো, ঐ যে অভিভাবকরা তাদের দায়-দায়িত্ব সঠিকভাবে হয়তো পালন করছে না। এজন্য তারা এ সাহসটা পাচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমার চুপ করে স্থান ত্যাগ করাটা-ই কি কোন সমাধান? উত্তর হচ্ছে,না। তাহলে কি করতে হবে? শিক্ষার্থীদের সঠিক গাইডলাইনে রাখতে, অভিভাবক-শিক্ষক-সচেতন সমাজ কাঁধে কাঁধ রেখে সমাজের প্রতি নিজ দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। না হলে অভিভাবক হারাবে তারা সুসন্তান, শিক্ষক হারাবে তার সুশিক্ষার্থী, সমাজ হারাবে তার পরবর্তী সচেতন শ্রেণী।

জিএম ইমরান 
সহকারী শিক্ষক, গিলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
কয়রা,খুলনা।
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
 মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি!
- করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ


 
 





































