Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ০২ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৯ ১৪৩২

আদনান আজাদ

প্রকাশিত: ০০:০৫, ১০ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ০০:৩৫, ১০ নভেম্বর ২০২১

বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মারা হলো হাতি

আগেরদিনও মায়ের সাথে ছিলো বাচ্চা হাতিটি, এখন সে এতিম।

আগেরদিনও মায়ের সাথে ছিলো বাচ্চা হাতিটি, এখন সে এতিম।

এতিম হয়ে গেল হাতির এই ছোট্ট বাচ্চাটি। গতকাল সারাদিনও মা তাকে আগলে রেখেছিল, দুধ খাইয়ে ছিল, আদর যত্নের কোন কমতি ছিল না। আজ এই মা হাতিটিকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মেরে ফেলা হলো। এতিম করা হলো হাতির এই ছোট্ট দুধের ছানাটিকে। 

বুনো হাতির আবাসস্থল শেরপুরের গারো পাহাড় ও এর আশেপাশের বনাঞ্চল। পাহাড়ি এই বনগুলো বাইরে থেকে দেখলে ঠিক গভীর বনের মতোই লাগে। কিন্তু বনের কিছুটা গভীরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় বন কেটে সাফ করে সেখানে সবজি চাষ করছে। এবং হাতি যাতে তাদের সেই সবজি ক্ষেতে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সবজি ক্ষেত এর চারপাশ দিয়ে খুব সূক্ষ্মভাবে বৈদ্যুতিক তারের বেড়া দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং জেনারেটর চালিয়ে তারে বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেয়া হচ্ছে। তার গুলো এত সূক্ষ্মভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেকোনো মানুষেরপক্ষে সম্ভব না একহাত সামনের তার গুলোকে দেখা। বনের গহীনে হাতির সন্ধানে প্রবেশ করার পর আমার সঙ্গী নাজিম আমাকে সতর্ক না করলে সেই তারে  আমার গলায় কেটে যেত না হয় আমিও শক খেয়ে মারা যেতাম। 

হাতি মারার জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি অস্ত্রশস্ত্র। ছবি : আদনান আজাদ 

এছাড়াও সবজি চাষীরা বিশেষ পদ্ধতিতে কিছু অস্ত্রশস্ত্র বানিয়ে রেখেছে হাতি মারার জন্য। ২০ ফিট লম্বা ফালা বা বর্ষার মাথায় আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা  আছে। হাতি বাগানের কাছাকাছি চলে এলে এই বর্ষার মাথায় আগুন লাগিয়ে হাতির দিকে ছুড়ে মারা হয় ফালার সামনের সূচালো অংশটা হাতির দেহে ঢুকে যায়। ও শরীরের আগুন লাগে। 

বনের ভিতর এই অবস্থা দেখেই আমিও আমার সঙ্গীরা আঁচ করতে পেরেছিলাম যে এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটবে, আর সেটিই আজ সত্যি হলো। 
বছর খানেক আগে প্রতিবেশী দেশ ভারতে একটি মা হাতি মারা যাওয়ায় ফেসবুকে হাজার হাজার বাংলাদেশের মানুষের মায়াকান্না দেখলাম কিন্তু নিজের দেশের মা হাতি মারা গেলে আমার বন্ধু মোয়াজ্জেম রিয়াদ ও আমিনুল মিঠু ছাড়া অন্য কাউকে কখনোই দুঃখ প্রকাশ করতেও দেখিনা। 

আজ বেশি কিছু লিখতে পারবো না,লেখার মতো মানসিক পরিস্থিতি আমার নেই। 
সব হাতি মেরে ফেলুক,তাতে আমার মায়া কান্না করে লাভ কি!!

আদনান আজাদ, ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার

Green Tea
সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়