মৃত্যুর কথা প্রকাশ করলে লাশ নদীতে ফেলে দেবো

জম্মু-কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের উপকণ্ঠে এক বিক্ষোভের সময় পুলিশের টিয়ারগ্যাসের কবলে পড়ে মোহাম্মদ আইয়ুব খান (৬২) নামে একজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের নিষেধে তার ডেথ সার্টিফিকেট পরিবারের হাতে তুলে দিচ্ছেন না। এমনকি কাশ্মিরি পুলিশ ওই ব্যক্তির লাশ দাফনের আগে পরিবারকে হুমকি দিয়েছিলো মৃত্যুর ব্যাপারটি মিডিয়ায় জানাজানি হলে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হবে।

গত শনিবার (১৭ আগস্ট) শ্রীনগরের উপশহরে নিজ বাড়ির বাইরে দাড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ আইয়ুব খান।  ওই সময়ে বিক্ষুব্ধ পাথর নিক্ষেপকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাসের ক্যানিস্টার ছোড়ে পুলিশ। এর দুটো শেল ৬২ বছর বয়সী কাঠ ব্যবসায়ী আইয়ুবের সামনে পড়লে তাৎক্ষনিকভাবে রাস্তার ওপরে মুখ থুবড়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু পুলিশ জোর করে তার মরদেহ নিয়ে যায়। দাফনের কাজে আসার জন্য পরিবারের মাত্র দশ জনকে অনুমতি দেওয়া হয়। আর ওই রাতেই পুলিশি পাহারায় তাকে সমাহিত করা হয়।

নিহত আইয়ুবের ছোট ভাই শাবির আহমেদ খান বলেন, চিকিৎসকরা জানান পুলিশ কর্মকর্তারা এই ঘটনাকে ইস্যু করতে মানা করেছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের হুমকি দিয়েছিল যদি মিডিয়ায় কথা বলি বা বিক্ষোভের চেষ্টা করি তাহলে তার মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হবে। কবরস্থান পর্যন্ত আমাদের পাহারা দিয়ে নিয়ে যায় পুলিশের চারটি ভ্যান।

তিনি আরও বলেন, ‘তার মৃত্যু হয়তো সরকারি নথিভুক্তও হবে না কিন্তু আমাদের কাছে তিনি শহীদ। ভারতীয় নৃশংসতার আরেকটি দৃষ্টান্ত তার এই মৃত্যু’।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এর আগ মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মিরে আধাসামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৩৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে নতুন করে সেখানে নিয়োজিত হয় আধাসামরিক বাহিনীর আরও ৮ হাজার সদস্য। উপত্যকায় কারফিউ জারির পাশাপাশি টেলিফোন-ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এতসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও সেখানে বিক্ষোভ ঠেকাতে পারছে না ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

সূত্র : এএফপি

আইনিউজ/এসডি