Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১১ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ৭ মে ২০২১
আপডেট: ০০:৩২, ৮ মে ২০২১

করোনায় নিঃস্ব একাত্তর টিভির নাজমুল: একুশ দিনের ব্যবধানেই চলে গেলেন বাবা-মা ও স্ত্রী

বাবা-মা ও স্ত্রীর সাথে নাজমুল ইসলাম

বাবা-মা ও স্ত্রীর সাথে নাজমুল ইসলাম

ভাগ্য তার নিষ্ঠুর রূপ দেখাতে শুরু করে। মাত্র একুশ দিনের ব্যবধানেই নাজমুল ইসলাম হারালেন তার স্ত্রী, করোনা আক্রান্ত মা এবং সর্বশেষ ৬ মে তার বাবাকেও।

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বেই মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। এর মধ্যে অনেকেই কর্মহীন হয়েছেন, ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সেই ক্ষতি হয়তো তারা একসময় কাটিয়ে উঠবেন, কিন্তু যাদের কেড়ে নিয়েছে মহামারী করোনা, তাদের কি আর ফিরে পাওয়া যাবে!

এমনই একটি পরিবারের কথাই জানা গেছে। দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি গণমাধ্যম একাত্তর টিভির সহযোগী প্রযোজক নাজমুল ইসলামকে নিঃস্ব করে দিয়েছে করোনা। মহামারীতে মৃত্যুবরণ করেছেন তার পুরো পরিবার। 

গত ১৬ এপ্রিল করোনাভাইরাসের সাথে এক সপ্তাহ লড়াই করে রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে মারা গেছেন নাজমুল ইসলামের স্ত্রী একাত্তর টিভির অ্যাসোসিয়েট নিউজ প্রডিউসার (সহযোগী প্রযোজক) রিফাত সুলতানা। যেদিন মারা গেছেন রিফাত সুলতানা, সেইদিন সকালেই এক সন্তানের মা হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে, সকালে মা হয়েও বিকালে তাকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়। 

একই হাসপাতালে তখন চিকিৎসাধীন ছিলেন রিফাত সুলতানার শাশুড়ি অর্থাৎ নাজমুল ইসলামের মা। স্ত্রীর মৃত্যুর সময় স্বামী নাজমুল ইসলামও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তখন তিনি  মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। 

এরপর থেকেই যেন ভাগ্য তার নিষ্ঠুর রূপ দেখাতে শুরু করে। মাত্র একুশ দিনের ব্যবধানেই নাজমুল ইসলাম হারালেন তার স্ত্রী, করোনা আক্রান্ত মা এবং সর্বশেষ ৬ মে তার বাবাকেও।

করোনার কাছে মানুষ কতোটা অসহায় তারই যেন উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন নাজমুল ইসলাম। পরপর তিন স্বজনকে হারিয়ে এবার যেন তার শোক করারও শক্তি নেই। 

একাত্তর টিভির প্রতিবেদনে দেখা যায়, একুশ দিনের সন্তানকে কোলে নিয়ে নাজমুল। এই সন্তানের জন্মের উল্লাস অনুভব করার আগেই,  তাকে পেতে হয়েছিলো স্ত্রী হারাবার শোক। নিজের সন্তানকে জন্ম দিয়ে দুই ঘন্টাও বাঁচতে পারেননি রিফাত সুলতানা। স্থবির হয়ে আছেন নাজমুল, চোখের দৃষ্টিটাও শূণ্য। মনে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েই কোলে সন্তান নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। কথাও বলতে পারছেন না, বেদনায় গলা ধরে আসছে।

ক্ষুদ্রাকৃতির ভাইরাস করোনা কতোটা ভয়াবহ হতে পারে এই পরিবার তার সাক্ষী হয়ে আছে। কার জন্য শোক করবেন নাজমুল? একুশ দিন আগে মারা যাওয়া স্ত্রীর জন্য? চারদিন আগে মারা যাওয়া মায়ের জন্য নাকি গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মে) মারা যাওয়া বাবার জন্য?

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ