Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১১ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০৬, ৩১ মে ২০২১
আপডেট: ২৩:০০, ৩১ মে ২০২১

মিতু হত্যা মামলা: আদালতে মুসার স্ত্রী পান্নার জবানবন্দি

পুলিশ হেফাজতে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও নিহত মাহমুদা খানম মিতু

পুলিশ হেফাজতে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও নিহত মাহমুদা খানম মিতু

চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় পলাতক আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

সোমবার (৩১ মে) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মো. রেজার কাছে পান্না আক্তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরীর ও আর নিজাম রোড আবাসিক এলাকার মুখে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন গৃহবধূ মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। প্রায় ৫ বছর পর গত ১২ মে ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, পান্না আক্তার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্বামী মুসার সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরেছেন। এছাড়া মিতু হত্যায় গ্রেপ্তার তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে মুসা কাজ করতেন সেই কথাও আদালতকে জানান পান্না। তবে জবানবন্দি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

এর আগে মিতু হত্যায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তারের পর গত ১৫ মে মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেন। তিনি বলেন, ‘এতদিন সন্তানদের নিরাপত্তার ভয়ে মুখ খুলিনি। পাঁচটি বছর স্বামীর ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন কেটেছে। আমার স্বামী বাবুল আক্তার ও প্রশাসনের সোর্স ছিলেন। আমার স্বামী যদি দোষী হয় তাহলে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। তাকে আদালতে হাজির করা হোক। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। মামলার স্বার্থে মুসাকে আদালতে হাজির করা হোক।’

পান্না বলেছিলেন, ‘মিতু হত্যার দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যখন মুসা দরজা খুলে বাসায় প্রবেশ করছিলেন, তখন জানতে পারি তিনি সকালে বের হয়েছিলেন। তার পরনে ছিল থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। শরীরে ছিল টি শার্ট। হাতে দোকান থেকে কেনা পরোটা নিয়ে বাসায় ঢোকেন। নাস্তা করার সময় তিনি টিভি দেখছিলেন। টিভিতে দেখে তখন মিতু হত্যার বিষয়টি আমি জানতে পারি। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনার পরিচিত লোকের স্ত্রীকে মেরে ফেলছে আপনি দেখতে যাবেন না? তখন তিনি বলেন, তিনি তো ঢাকায়, ওখানে সাধারণ মানুষের কাজ নেই। উনি আসলে দেখা করে আসবো।’

পান্না আক্তার বলেন, এর কিছুদিন পর মোবাইল বাসায় রেখে বাইরে যান মুসা। এসময় একটা টিঅ্যান্ডটি নম্বর থেকে ফোন আসে। ওই প্রান্ত থেকে একজন জানতে চান মুসা কোথায়। তিনি বাইরে গেছেন এটা জানালে কল করা ব্যক্তি বলেন, তাকে সাবধানে থাকতে বলবেন।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মিতু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। একইদিন বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। বাবুল আক্তার ছাড়া মামলার বাকি সাতজন আগের মামলাতেও আসামি ছিলেন।

মামলা দায়েরের পর মুসার স্ত্রী পান্না বিভিন্ন মিডিয়ায় দাবি করেন, বাবুল আক্তারের চাপে পড়ে তার স্বামী মিতু হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। মিতু হত্যার ১৭ দিন পর তার স্বামীকে পুলিশ চট্টগ্রাম নগরীর কাঠগড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বলেও দাবি করেন পান্না। 

এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার। তবে জবানবন্দির কপি এখনো হাতে পাইনি।

মিতু হত্যায় তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তার জড়িত

পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

তিনি বলেন, “মিতু হত্যার সাথে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। পরে তাকে আদালতে তোলা হবে।

এ মামলায় এক নম্বর আসামি হবেন তাঁর স্বামী ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। নতুন মামলার বাদি হতে পারেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, পুরোনা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আজই আদালতে দেওয়া হবে। নতুন মামলার বাদি হতে পারেন মিতুর বাবা।

বনজ কুমার বলেন, খ্যাতিমান পুলিশ অফিসার ছিলেন বাবুল আক্তার। অনেক কাজ করেছেন। তাঁর স্ত্রীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে এটি পরিগণিত। বাবুল আক্তার বাদি হয়েছিলেন। পুরোনো মামলায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন দুজন। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত...

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ