Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১০ ১৪৩২

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ১২ জুন ২০২১
আপডেট: ২২:২২, ১২ জুন ২০২১

৩ লাখ টাকায় নিজের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে বিক্রি করে ভারতে পাচার

টিকটক হৃদয়দের ঘটনার পর থেকেই দেশে নারী পাচার নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর গ্রামে স্বামীর দ্বারাই স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ৩ লাখ টাকায় ভারতে বিক্রি করে পাচার করে দেওয়ার ঘটনা জানা গেছে। পাচারকারী স্বামী ইউসুফ ও তার সহযোগী রাব্বিল শেখকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪।

শুক্রবার (১১ জুন) র‌্যাব-১৪ এর আভিযানিক দলের সদস্যরা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বালিহাটা থেকে ইউসুফ এবং গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে রাব্বিল শেখকে গ্রেফতার করে। শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু নাঈম মো: তালাত এসব তথ্য জানান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা মানব পাচারে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্বামী ইউসুফ স্ত্রী কুলসুমা আক্তার (২২) ও শ্যালিকা সুমাইয়া আক্তারকে (১৯) মানবপাচারকারীদের সহায়তায় ভারতে বিক্রি করে দেয় বলে জানায় সে।

র‌্যাব জানায়, গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের দুই তরুণী বোন কুলছুমা আক্তার (২২) এবং মোছাঃ সুমাইয়া আক্তার (১৮)। তারা দুই বছর আগে চাকরি নেয় শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় রিদিশা ফুট এ্যান্ড বেভারেজের একটি বিস্কুট কোম্পানিতে। নারী পাচারকারী দলের সদস্য মোঃ ইউসুফ ও তার সহযোগি এই দুই বোনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। এরপর বন্ধুত্ব ও বিশ্বাস অর্জন। এক সময় নারী পাচারকারী ইউসুফ বড় বোন কুলছুমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং পরিবারের কাউকে না জানিয়ে কুলছুমাকে বিয়ে করে।

এই অসহায় দুই নারী শ্রমিক পাচারকারীদের হাতের মুঠোয় চলে আসে। এরপর তাদের জীবনে নেমে আসে দুর্দশা। প্রেম করে বিয়ের দুইমাস পর গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে কুলছুমা ও সুমাইয়া ভারতের পাচারের শিকার হন। নারী পাচারকারী দলের সদস্য ইউসুফ ও তার সহযোগি ভাল চাকরির মাধ্যমে কুলছুমা আক্তার এবং মোছাঃ সুমাইয়া আক্তারকে মাসে ৪০/৫০ হাজার আয়ের লোভ দেখিয়ে চোরাপথে জীবননগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। এরপর এই দুই বোনকে তিন লাখ টাকায় ভারতের রানাঘাট এলাকায় নিয়ে নারী ব্যবসায়ী বাবলু/রাহুলের কাছে বিক্রি করে দেয়। শুরু হয় তাদের যন্ত্রণাদগ্ধ কাহিনী।

তাদেরকে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এলাকার বিভিন্ন বাসায় ও হোটেলে রেখে দেহ ব্যবসা করানো হতো। দুই বোনকে আলাদা আলাদা জায়গায় রাখা হতো। নারী ব্যবসায়ীদের কথা না শুনলেই দেওয়া হতো ইলেকট্রিক শক। কঠোর নজরদারিতে এদের রাখা হতো।

আবু নাঈম মো: তালাত আরও জানান, পশ্চিবঙ্গের করোনার প্রার্দুভাবে ১৬ মে থেকে লকডাউন শুরু হলে তাদের উপর নারী পাচারকারীদের নজরদারী শিথিল হয়। এই সুযোগে দুই বোন নারী পাচারকারীদের নরক থেকে পালিয়ে আসে। গত ১৭ মে সুমাইয়া হাওড়া ষ্টেশন এলাকায় পুলিশের হাতে আটক হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কলিকাতার শিয়ালদহ এলাকায় ভারতীয় সরকার পরিচালিত সেফ হোম পার্টিসিপেটরি রিচার্স এ্যান্ড একশন নেটওয়ার্ক এর হাতে ন্যস্ত করে।

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ