Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১০ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১১, ২৭ জুন ২০২১
আপডেট: ২২:৪৩, ২৭ জুন ২০২১

প্রেমের সালিশে গিয়ে কিশোরীকে বিয়ে করলেন চেয়ারম্যান, কিশোরী তালাক দিয়ে বিয়ে করলো প্রেমিককে

চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ও সেই কিশোরী

চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ও সেই কিশোরী

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় প্রেমের সালিশ করতে গিয়ে কিশোরী নাসিমা বেগমকে (১৫) নিজেই বিয়ে করেছেন কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। তবে এবার জানা গেছে পরের খবর। এবার এই আলোচিত চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে অষ্টম শ্রেণির সেই আলোচিত কিশোরী (১৪) প্রেমিক রমজানকেই বিয়ে করেছে।

রবিবার সকালে প্রেমিক রমজানের মামা বাড়িতে বিয়ের এ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে (৬০) তালাক দেয় ওই কিশোরী। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

গ্রামবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত মে মাসে ওই কিশোরীর সঙ্গে নাজিরপুর ইউনিয়নের তাঁতেরকাঠি গ্রামের গার্মেন্টসকর্মী সোহেলের বিয়ে হয়। তবে, গৃহশিক্ষক রমজানের প্রেমের সম্পর্ক থাকায় ওই বিয়েতে রাজি ছিলেন না কিশোরী। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন সোহেল, কিশোরী ও রমজানের পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে।

গত শুক্রবার কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে মীমাংসার জন্য যান উভয় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সোহেল ও কিশোরীর বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।

সালিস বৈঠকে ওই কিশোরী প্রেমিক রমজানের সাথে সংসার করতে চায়। কিন্তু চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজেই কিশোরীকে পছন্দ করে বসেন। তিনি কিশোরীর বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর কাজী ডেকে চেয়ারম্যান ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘তিন বছর আগেই আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতাম। নির্বাচনের কারণে দেরি হয়েছে।’

চেয়ারম্যানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, চেয়ারম্যানের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে বিয়ে করেছে। অসম বিয়ে নিয়ে তার পরিবার ও এলাকায় সৃষ্টি হয় তোলপাড়। নানা চাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন চেয়ারম্যান। এ পরিস্থিতিতে তিনি বিয়ে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে একদিন পরেই শনিবার সন্ধ্যায় কাজী ডেকে কিশোরীর  কাছ থেকে তালাকনামা নেন।

চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, সে (কিশোরী) তার প্রেমিকের কাছে ফিরে যেতে চায়। সে সুখে থাকতে চায়। আমি জোড় করে কারও সঙ্গে সংসার করতে চাই না।

ওই কিশোরী বলেন, নিজের সিদ্ধান্তেই চেয়ারম্যানকে বিয়ে করেছিলাম। পরে আমিই তাকে তালাক দিয়েছি। রমজান আমার জন্য আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। তাকেই আমি বিয়ে করেছি। এখন তাকে নিয়েই সংসার করতে চাই।

কিশোরীকে বিয়ে করার অপরাধে চেয়ারম্যানের কোন শাস্তি হবে কি না জানতে চাইলে বাউফলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে, যদি বাল্য বিয়ের ঘটনা হয় তাহলে চেয়ারম্যানকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তবে পরে প্রেমিক রমজানকে বিয়ে করার খবর পাওয়ার পর এ বিষয়ে ইউএনওর তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ