পূর্ণা রায় ভৌমিক
আপডেট: ১৫:০৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জীবনকে বলি সহজে নাও মেনে, মানে না সে বাঁধনহারা ছুটেই কেবল সমুখপানে
![প্রিয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক পূর্ণা রায় ভৌমিক। প্রিয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক পূর্ণা রায় ভৌমিক।](https://www.eyenews.news/media/imgAll/2023May/পূর্ণা-ভৌমিক-eyenews-2402121505.jpg)
প্রিয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক পূর্ণা রায় ভৌমিক।
আজকের দিনটা কেমন যেনো স্মৃতিতে নাড়া দেয়ার মতো একটি দিন হয়ে রইলো। বেশ আবেগতাড়িত করে দিলো ছোট্ট মেয়ে "বিনতা"। তাঁর উদারতা আর মহত্ত্ব আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে শিখিয়ে দিলো শ্রদ্ধা আর সম্মান টাকা কড়িতে পাওয়া যায় না।
আজ সকালে স্কুলের অফিসকক্ষে কাজ করছি। এমনসময় অনুমতি নিয়ে আমার কাছে এলেন বিনতা ও বিনতার বাবা শ্রীযুক্ত পলক দেব।
শিক্ষার্থী হিসেবে সে আমার খুব প্রিয়দের একজন। তাকে যখন গান থেকে অভিনয়ের দিকে পাঠাই, আমার মন বলছিলো সে চকচক করবেই। ২০২৩ সালের জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় সে 'উপস্থিত অভিনয়' ও 'যন্ত্রসংগীত' দুটি বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিলেও যন্ত্রসংগীতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে রৌপ্যপদকে ভূষিত হয়।
পদকপ্রাপ্তির পর আজই তার সাথে আমার দেখা।
আমাকে প্রণাম করতে এগিয়ে এলো। ওকে আদর করলাম মনে মনে অনেক আশীর্বাদ করলাম। এর মধ্যেই লক্ষ্য করলাম ওরা বাবা মেয়ে কী যেনো ইশারায় বললেন। বাবা, মেয়ের হাতে ব্যাগটা দিলেন। ওর পুরস্কারের ব্যাগ! আমাকে একে একে সব দেখানো হলো। সবশেষে মেয়েটা রৌপ্যপদকটি হাতে নিয়ে আমাকে বললো, "ম্যাম এটা আপনাকে পরিয়ে দিতে চাই"। আমি আসলে বুঝতেই পারছিলাম না যে এটা পরার যোগ্যতা আমার আছে কি না, পরবো কি না! একবার শুধু বলছিলাম এটাতো তোমার! ও আবারো বললো, " একটু পরাবো, ম্যাম"... বাকরুদ্ধ আমি একটু থেমে হাসলাম, পুলকিত হলাম এই ভেবে যে মেধাবী কৃতী এই শিশুটির কাছে আমার অনেক শেখা হলো।
"বিনতা" ওর মেডেলটা আমাকে পরিয়ে দিলো। ও শুধু মেডেলটাই পরালো না, আমাকে শিখিয়ে দিলো, বিনয় কাকে বলে, নম্রতা কাকে বলে, কৃতজ্ঞতা কাকে বলে। ও কিছু কথা লিখেছে, আমাকে দেখতে দিলো।
ও লিখেছে,"আমি বিনতা দেব জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০২৩ এ রৌপ্যপদক পেয়ে খুব আনন্দিত ও মুগ্ধ। এটা আমার জীবনের বিশাল একটি প্রাপ্তি, তবে এই প্রাপ্তির জন্য স্মরণ করি আমার বিদ্যালয় আলী আমজদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গান-পাঠশালাকে। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই আমার সকল শিক্ষাগুরু ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমিকে। শ্রদ্ধা জানাই যাদের কথা না বললে না হয় আমার পিতা-মাতা, পরিবার ও শুভাকাঙ্খীদেরকে, যাদের অনুপ্রেরণায় আমি আজ এত দূর যেতে পেরেছি। তাই, আমার জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন যাতে আমি আমার পিতা-মাতার গর্বিত সন্তান হতে পারি"।
এগিয়ে যাক বিনতা; আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। আমি শুধু পরমপুরুষকে বললাম,"আমি অকৃতি অধম বলেও তো কিছু কম করে মোরে দাও নি"।
- লেখক- পূর্ণা রায় ভৌমিক, প্রধান শিক্ষক, আলী আমজদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা