Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ০২ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩২

ডেস্ক প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:১৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিড়ালরা কেন মৃত প্রাণী বাড়িতে নিয়ে আসে?

কুকুর ভেজিটেরিয়ান ডায়েটে বেঁচে থাকতে পারলেও বিড়াল সেটা পারেনা

কুকুর ভেজিটেরিয়ান ডায়েটে বেঁচে থাকতে পারলেও বিড়াল সেটা পারেনা

মাঝে মাঝে পোষা বিড়ালকে মৃ-ত প্রাণী বাড়িতে নিয়ে আসতে দেখা যায়। অনেকসময় এই চিত্রও দেখা যায় বিড়াল শিকার করা ইদুর নিয়ে খেলা করছে। একটা বিষয় ভেবে দেখেছেন কী? ঘরে সাধারণত পোষা বিড়ালকদের নানা ধরনের দামী খাবার পরিবেশন করার পরও এরা শিকার করার মতো কিছু পেলে ছাড়ে না কেন? বা কেন বিড়ালকে শিকার করতে হয়?

প্রথমেই বুঝতে হবে, বিড়াল হাজার বছর সময় থেকে পোষা প্রাণী হলেও পূর্বপুরুষদের সাথে তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও আচরণের ব্যাপক মিল রয়ে গিয়েছে। এমন একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা মাংসাশী। বিড়াল বাঘ প্রজাতিরই একটি পোষ মানা প্রাণী। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে বিড়াল এবং মানুষের সহাবস্থান এখন খুবই কাছাকাছি। তবু বিড়াল দিনশেষে মাংসাশী বাঘ গোত্রের প্রাণী এটা ভুলে গেলে চলবে না।

কুকুর ভেজিটেরিয়ান ডায়েটে বেঁচে থাকতে পারলেও বিড়াল সেটা পারেনা। বিড়াল বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যাভ্যাসে মাংস থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিড়াল টাউরিন উৎপাদনে অক্ষম। টাউরিন হচ্ছে একধরনের অ্যামাইনো এসিড। বিড়ালদের দাঁতের ক্ষতি, লোম পড়া, অন্ধত্ব ইত্যাদি প্রতিরোধে সাহায্য করে এই অ্যামাইনো এসিড।

ফলে তারা প্রায়ই শিকার করার মুডে থাকে, এমনকি পেটে পর্যাপ্ত খাবার থাকলেও বিড়ালকে শিকার করতে দেখা যায়। এর থেকে বুঝতে পারা যায় বিড়ালের জন্য খাওয়া ও শিকার দুটো আলাদা আলাদা প্রয়োজন।

তাছাড়া, বিড়াল প্লেফুল স্বভাবের হয়, যেকোনো খেলনা ও চলন্ত যেকোনো কিছু দেখলে বিড়াল ট্রিগার হয়ে যায়। বিড়াল বিভিন্ন ধরনের খেলনা দিয়ে খেলতে পছন্দ করে, এগুলো তাদেরকে শিকার করার মতোই আনন্দ দেয়। তাছাড়াও অনেক সময় মা বিড়াল বাচ্চাদের শিকার শেখানোর উদ্দেশ্যেও শিকার করে এনে দেখায়।

শিকার করার জন্য অনেক প্রাণী থাকলেও বিড়াল বিশেষ করে ইঁদুরের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কারণ ইঁদুর বিড়ালের জন্য যথাযথ শিকার। ইঁদুর এলোমেলোভাবে ছুটোছুটি করে যা বিড়ালকে আকৃষ্ট করে। বিড়াল প্রাকৃতিক শিকারী এবং শিকার করার অভ্যাস তারা পূর্বপুরুষ থেকে পেয়েছে।

বিড়াল কবে থেকে মানুষের সঙ্গী?

আজ থেকে প্রায় ৯,২০০ থেকে ৯,৫০০ বছর পূর্বে দক্ষিণ সাইপ্রাসের শিলোরোকাম্বোসে একটি মানব নবপোলিয় সমাধি খননের মাধ্যমে, আফ্রিকার বনবিড়ালের (F. lybica) বশে আনার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যেহেতু সাইপ্রাসে স্থানীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি, তাই এই নবপোলিয় গ্রামের বাসিন্দারা সম্ভবত বিড়াল এবং অন্যান্য বন্য স্তন্যপায়ীদের মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড থেকে দ্বীপে নিয়ে এসেছিলেন।

বিজ্ঞানীরা তাই ধরে নিয়েছেন যে আফ্রিকান বনবিড়ালগুলি উর্বর চন্দ্রকলার প্রাথমিক যুগে বিশেষত ঘরের ইঁদুরের (Mus musculus) দ্বারা আকৃষ্ট হয়েছিল এবং নবপোলিয় কৃষকরা বিড়ালদের সাহায্যে ইঁদুরদের দমন করিয়েছিল। প্রারম্ভিক কৃষকদের এবং জড়িত বিড়ালদের মধ্যে এই প্রচলিত সম্পর্ক হাজার বছর ধরে স্থায়ী হয়েছিল। কৃষিকাজের পাশাপাশি কৃত্রিম ও পোষা বিড়ালও ছড়িয়ে পড়েছিল।

মিশরের বনবিড়ালেরা পরবর্তী সময়ে গৃহপালিত বিড়ালের প্রসূতি জিন পুলে অবদান রাখে। খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ অব্দে গ্রিসে গার্হস্থ্য বিড়ালের সংঘটিত হওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। গ্রিক, ফিনিশিয়া, কার্থাগিনিয় এবং এটরুস্কা ব্যবসায়ীরা দক্ষিণ ইউরোপে দেশীয় বিড়ালদের পরিচয় করিয়ে দেয়। রোমান সাম্রাজ্যের সময় প্রথম সহস্রাব্দ শুরুর আগে কর্স এবং সার্ডিনিয়ায় এরা পরিচিত হয়েছিল।

খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর মধ্যে, এরা ছিল ম্যাগনা গ্র্যাসিয়া এবং ইটারুরিয়ায় বসতিগুলির আশেপাশে পরিচিত প্রাণী। ৫ম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্যের শেষের দিকে মিশরীয় গার্হস্থ্য বিড়ালের বংশ উত্তর জার্মানির বাল্টিক সমুদ্র বন্দরে এসেছিল।

বিড়ালকে ঘিরে ধর্ম-কর্ম
বিড়াল সর্বপ্রথম নিকট প্রাচ্যে খ্রিস্টপূর্ব ৭৫০০ সালে গৃহপালিতকরণ শুরু হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ সাল থেকে প্রাচীন মিশরে বিড়ালের পূজা করা হতো বলে, দীর্ঘকাল ধরে ধারণা করা হয়েছিল যে প্রাচীন মিশরে বিড়ালদের গৃহপালিতকরণের সূচনা হয়েছিল।

২০১৯-২০২০-এর হিসাব অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোষা পাখির পর বিড়াল দ্বিতীয় জনপ্রিয় পোষা প্রাণী, যেখানে প্রায় ৪২.৭ মিলিয়ন পোষা বিড়াল ছিল।

২০১৯-এর হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের ৪.৮ মিলিয়নেরও বেশি পরিবারে প্রায় ৭.৩ মিলিয়ন বিড়াল বাস করত। যদি বিড়াল খামচি দিয়ে রক্ত বের করে তাহলে উক্ত স্থানে বিড়ালের বীর্জ কয়েক ফোটা দিলে সেটার রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া যায় বলে জনশ্রুতি আছে!

আইনিউজ/এইচএ

আইনিউজে আরও পড়ুন-


দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি

সৌদি আরবে মেয়েকে নির্যাতনের খবরে মায়ের আহাজারি-কান্না

গ্রিসের বস্তিতে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন, অধিকাংশই সিলেটি

গ্রিসে পাঁচ বছরের ভিসা পাবে বাংলাদেশিরা

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়