Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৫ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ৩১ ১৪৩২

আই নিউজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১৮, ২৫ মে ২০২৪

কাজী নজরুল ইসলাম, যে তারাটি জ্বলেছিল শত বছর আগে 

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের চিত্রকর্ম। ছবি- সংগৃহীত

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের চিত্রকর্ম। ছবি- সংগৃহীত

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ভাষার সাহিত্যে কাজী নজরুল একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাঁর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় রচিত হয়েছে মানবতার বাণীর বিদ্রোহী সব কবিতা। লিখেছেন প্রেমের গান। করেছেন সুরের বন্দনা। সবমিলিয়ে কাজী নজরুল বাংলা সাহিত্যের একটি নক্ষত্র। যে নক্ষত্রের জন্ম হয়ছিল আজ থেকে ১২৫ বছর আগে। যে নক্ষত্র আলো দিয়ে যাচ্ছে আজও। 

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৫ মে ১৮৯৯) এক ঝড়ের রাতে অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মহান এই প্রতিভা। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।

চরম দারিদ্র্য ও বহু বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য তার পরিচিতি বিদ্রোহী কবি। কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয়জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সর্ম্পককে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?

তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন।

‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে নজরুলের কবিতা ও গান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কবি নজরুল তার প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছেন। নজরুল সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় তিন দিনব্যাপী (২৫ থেকে ২৭ মে) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হবে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খানের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।

ময়মনসিংহের ত্রিশালের নজরুল অডিটোরিয়ামে চলছে তিন দিনব্যাপী উৎসব। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এটি উদ্বোধন করেছেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এমপি। এছাড়া ত্রিশালের নজরুল স্কুল মাঠে বসেছে নজরুল মেলা।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ কালি নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হতে যাচ্ছে ‘ভাগ হয়নিকো নজরুল’ শীর্ষক এক দিনব্যাপী উৎসব। এটি আয়োজন করেছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার। সহযোগিতায় নেতাজী সুভাষ-কাজী নজরুল স্যোশাল অ্যান্ড কালচারাল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। এতে থাকছে সেমিনার, আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান।

বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে স্থাপিত নজরুল প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনাসভা ও সংগীতানুষ্ঠান।

জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ সম্প্রচার করবে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ